ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

পাখি তাড়ানো

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১২ মার্চ ২০১৬

পাখি তাড়ানো

পাখি তাড়ায় শিমুল। ক’দিন ধরে এটি তার কাজ। সকাল দুপুর বিকেল। পাখি আসে ঝাঁকে ঝাঁকে। বাবুই পাখিই বেশি। খেয়ে যায় ধান। পাকাধান যেন সোনার দানা। জমির আইলে শিমুল। হাততালি দেয় জোরে। উড়ে যায় কাছের পাখিরা। গিয়ে বসে আরেক পাশে। শুরু করে ধান খাওয়া। শিমুল যায় সেখানে। হাততালি দেয় আবার। উড়ে যায় সেখানের পাখি। বসে গিয়ে আরেক পাশে। শুরু করে ধান খাওয়া। শিমুল যায় সেই পাশে। হাততালি দেয়। হিস... করে। পাখিরা যায় আগের পাশে। এভাবেই চলে তার কাজ। খুব রাগ ধরে। ইস, কবে যে কাটা হবে ধান। আর কত ছোটাছুটি। আর কত হাততালি। পরদিন। আইলে দাঁড়ায় শিমুল। বাঁশি বাজায়। পুর র...। উড়ে যায় পাশের পাখিরা। বসে গিয়ে আরেক পাশে। সেই পাশে যায় শিমুল। বাঁশি বাজায় আবার। আগের পাশে যায় পাখি। এভাবেই চলে। শিমুলের পাখি তাড়ানো। আর পাখিদের ধান খাওয়া। কী করবে, ভাবে শিমুল। পরদিন। গুলতি নিয়ে আসে শিমুল। চুপচাপ বসে থাকে আইলে। উড়ে আসে পাখির দল। খেতে শুরু করে ধান। শিমুল তাক করে গুলতি। ছোটছোট অনেক পাখি। লাগবে কোনটার গায়ে। জোরে টানে রাবার। ছুড়ে মারবেল। উড়ে যায় পাখির দল। ক্ষেতের ভিতর যায় শিমুল। দেখে ছটফট করছে চড়ুই। শিমুল হাতে নেয় সেটি। চড়ুই তার খুব প্রিয়। বাসা বাঁধে ঘরের চালায়। তাদের ঘরেও আছে বাসা। জানালায় বসে। উঠানে নামে। খাবার খায়। খেলা করে দুটি চড়ুই। মাতিয়ে রাখে বাড়ি। খুব ভাল লাগে শিমুলের। আহত চড়ুই নিয়ে যায় বাড়িতে। পানি দেয় মুখে। সেবা করে। সারিয়ে তুলে। উড়িয়ে দেয়। ভাবে, পাখিদের আঘাত করবে না আর। পরদিন। শিমুল আসে পাখি তাড়াতে। তাকে দেখেই উড়ে যায় পাখি। যেন পাখিদের মনেপড়ে গতদিন। আবাক হয় সে। বিপদের কথা ভুলে না পাখিরা। তাইতো। হুম। একটা কাজ করা যাক তাহলে। দু’টি লাঠি আনে। একটি দড়ি আনে। একটি লাঠি গাড়ে ধানক্ষেতে। খাড়া করে। সেটিতে বাঁধে আরেকটি লাঠি। ভূমির সমান করে। লাঠিতে পরায় নিজের জামা। যেন দাঁড়িয়ে আছে শিমুল। দু’হাত ছড়িয়ে। এবার ফিরে আসে আইলে। বসে থাকে ঘাপটি মেরে। পাখিরা আসে। শিমুলের জামা দেখে। চলে যায়। নামে না ধানক্ষেতে। খায় না পাকা ধান। নিজেকে বিজয়ী ভাবে শিমুল। ভাবনাহীন ফিরে যায় বাড়িতে।
×