ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রেলের কাছে ১০ কোটি টাকা আটকা

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

রেলের কাছে ১০ কোটি  টাকা আটকা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে রেলের চাহিদা ও চুক্তি অনুযায়ী পণ্য ও যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে বেকায়দায় পড়েছে সরবরাহকারীরা। পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান অর্থ উপদেষ্টা ও হিসাব অধিকর্তা বাজেট স্বল্পতার দোহাই দিয়ে সরবরাহকারীদের ঠেকিয়ে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে সরবরাহকারীদের প্রায় ১০ কোটি টাকা গত ২ মাসে বকেয়া পাওনা অনাদায়ী রয়ে গেছে রেলের কাছে। অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তার (স্টোর) দফতরে বার বার ধরনা দিয়েও বিলের অর্থ আদায় করতে পারছে না। অথচ, লিখিত চুক্তিতে পণ্য সরবরাহের পর পণ্যের গুণগত মান যাচাই-বাছাই পূর্বক ব্যবহারকারী কর্তৃক টেস্ট রিপোর্ট প্রদানের পর বিলের অর্থ পরিশোধের বিধান রয়েছে। ঠিকা চুক্তিতে পণ্যের মূল্য পরিশোধে কোন ধরনের বিলম্ব বা সময়ক্ষেপণের নির্দেশনাও নেই। অথচ মাসের পর মাস ধরনা দিয়েও অর্থ আদায় করতে পারছে না সরবরাহকারীরা। অভিযোগ রয়েছে, সরবরাহকারীদের প্রায় ১০ কোটি টাকা আটকা পড়েছে অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তার দফতরে। তবে বিভিন্ন তেল কোম্পানির অর্থ পরিশোধ করতে গিয়ে বাজেটের প্রায় ৮০ শতাংশ টাকা খরচ হয়ে যায়। বাকি ২০ শতাংশ অন্যান্য পণ্য ক্রয়ের বিপরীতে পরিশোধ করা হয়। ফলে তেল সরবরাহকারী ব্যতীত অন্যদের বিল আটকা পড়ে যায়। মাসের পর মাস বিল বকেয়া পড়ায় সরবরাহকারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের ক্রয়াদেশ অনুযায়ী বাজেট ঘাটতি থাকায় সরবরাহকারীদের বিলের অর্থ পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আরও অভিযোগ রয়েছে, প্রত্যেক বছরের জুলাই থেকে পরবর্তী বছরের জুন পর্যন্ত রেলে অর্থবছর কার্যকর হয়। কিন্তু জানুয়ারি শেষ হওয়ার আগেই অর্থাৎ অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে বাজেট ঘাটতি পড়ার প্রবণতা রয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়েতে। ঠিকাদাররা ব্যাংক লোন বা ব্যক্তিগত লোনের মাধ্যমে ঠিকাকার্যের চুক্তি সম্পাদন ও পণ্য সরবরাহ করে রেলের সঙ্কট দূর করলেও বিলের অর্থ পরিশোধের বেলায় রেল কর্তৃপক্ষ বাজেট ঘাটতির উদাহরণ দেখায়। ওপেন টেন্ডার, এলটিএম, ডিপিএম, আরএফকিউসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে রেল কর্তৃপক্ষ পণ্য ক্রয়ের জন্য ঠিকাদারদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাজেট ঘাটতির দোহাই দিয়ে অর্থ প্রদানে নানা ধরনের টালবাহানা করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ ব্যাপারে অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা সরোজ কান্তি দেব জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, অর্থবছরে বাজেট প্রাপ্তির ওপর নির্ভর করে সরবরাহকারীদের বিল পরিশোধের ক্ষমতা। সরবরাহকারীদের অনেক টাকা আটকে আছে বাজেটের অভাবে। প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দফতর কর্তৃক বরাদ্দ নেয়ার পর সরবরাহকারীদের বকেয়া অর্থ পরিশোধ করা যাবে। এ ব্যাপারে প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক মোঃ গোলাম আম্বিয়া জনকণ্ঠকে জানান, ইতোমধ্যে ৮০ লাখ টাকা বাজেট পুনরায় আনা হয়েছিল তাও শেষ হয়ে গেছে। সরবরাহকারীদের বকেয়া পাওনা পরিশোধে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তা এখনও পাওয়া যায়নি। অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলেই সরবরাহকারীদের বিল পরিশোধ করবে অর্থ বিভাগ।
×