ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নাজমুস জামান মেহরাব চৌধুরী নিজ চেষ্টায় গড়ে তুলেছেন আইটি প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

নাজমুস জামান  মেহরাব চৌধুরী  নিজ চেষ্টায় গড়ে তুলেছেন আইটি প্রতিষ্ঠান

রেজা নওফল হায়দার ॥ শুরুটা ছিল ২০০৪ সালের মাঝামাঝিতে। কিছু করার তাগিদে এই সাহসী পদক্ষেপ নিলেন জামান দম্পতি। সরকারী চাকরির পেছনে না তাকিয়ে নিজের সাহস নিয়ে জীবন সংগ্রামে নামেন এই দম্পতি। বহু মানুষ বহু মতামত দিয়েছিলেন তাদের। কিন্তু কেন যেন কোনটাই মনের মতো হয়নি। অন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করতে থাকি। জনকণ্ঠের সামনে এইভাবেই জানাচ্ছিলেন নাজমুস জামান ও মেহরাব চৌধুরী। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আইটি সলিউশন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার তারা। নিজেরা যেমন তাদের ভাগ্য ফিরিয়েছেন তেমনি তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সরাসরি কাজ করছেন বহু সংগ্রামী প্রযুক্তিবিদ। এনআই বিজ সফট-এর সিইও মেহরাব চৌধুরী, আইটি নিয়েই কাজ করেন না, তিনি একজন কবি। প্রযুক্তি নিয়েও বই প্রকাশের ইচ্ছা প্রকাশ করলেন তিনি। বাংলাদেশ ও বিদেশে বিভিন্ন পর্যায়ের আইটি সলিউশন ও সফটওয়ার তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছেন। বর্তমানে প্রায় বিশজন আইটি এক্সপার্ট নিয়ে রাজধানীর উত্তরায় গড়ে তুলেছেন আইটি প্রতিষ্ঠান। নিরাপত্তা বিষয়ক সফটওয়ার তৈরিতে যেমন আছে তাদের সাফল্য, অন্যদিকে রেস্টুরেন্ট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়ার, মার্চেন্টডাইজার গেটওয়ে, গার্মেন্টস সফটওয়ার, মোবাইল এপ্লিকেশনের মতো জনপ্রিয় সফটওয়ার তৈরিতে রেখেছেন বিশেষ ভূমিকা। এনআই বিজ সফট বিশেষভাবে যে কাজটি করেছে, তার মধ্যে ট্রাকিং ম্যানেজমেন্ট সফটওয়ার উল্লেখযোগ্য। যা এরই মধ্যে দেশের ভেতরে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে নাজমুস জামান জানান, তাদের তৈরি এই ট্রাকিং সফটওয়ার দিয়ে ট্রাকিং করা যাবে নিদিষ্ট অবজেক্টকে। বিদেশের কাস্টমারদের চাহিদা অনুযায়ী রফতানি করেছেন, পার্কিং এ্যাপস। এছাড়াও জনপ্রিয়তা পেয়েছে, ট্যাক্সি এ্যাপ। তাদের তৈরি রোবট (এলগরিদম) এর চাহিদা আছে এই দেশেই। মেহরাব চৌধুরী জানান, ২০০৯ সালের প্রথম দিকে দুই জনে মিলে গড়ে তোলেন ওয়েব একাডেমি। কর্মমুখী শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে কম খরচে প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যে এই একাডেমি কাজ করে চলছে এখনও। তাদের এই ওয়েব একাডেমি থেকে এই পর্যন্ত ৩২টি ব্যাচ বের হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন প্রায় তিন শ’ শিক্ষার্থী। এছাড়া তারাই বংলাদেশে প্রথম সাধারণ মানুষের কাছে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যান্ডউইথ কমমূল্যে ওয়েব প্যাকেজ সরবরাহ করেন। নাজমুস জানান, ২০০৬ সালের দিকে এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম টার্গেট ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। সেই লক্ষ্যেই একদল দক্ষ প্রোগ্রামার নিয়ে এই প্রতিষ্ঠান কাজ করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আয় করেন বৈদেশিক মুদ্রা। নাজমুস আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, এখন বিদেশ থেকে অর্থ আনতে ডিজিটালি অনেক সমস্যা। সরকারের এই বিষয়ে নজর দেয়া উচিত। যাতে করে পেমেন্ট সিস্টেম নিয়ে কোন ভোগান্তি না থাকে। একান্তে আলাপ চারিতায় বারবার উঠে আসে তাদের স্বপ্নের কথা। তারা আরও বড় আকারে দেশের মধ্যেই গড়ে তুলতে চান পরিপূর্ণ আইটি প্রতিষ্ঠান। যেখানে কাজ করবে এই দেশের মাটিতে তৈরি প্রযুক্তিবিদরা। বিশ্বব্যাপী আইটি মার্কেট দখল করতে পারবে এই দেশের আইটি এক্সপার্টরাÑ এমনই প্রত্যাশা তাদের।
×