ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এক শ’ বছরে এসে হারমান ওউকের স্মৃতিকথা

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

এক শ’ বছরে এসে হারমান ওউকের স্মৃতিকথা

পুলিৎজার বিজয়ী আমেরিকান লেখক এবং ‘দি কেইন মিউটিনি’ ও ‘দি উইন্ডস্ অব এয়ার’ নামক বেস্টসেলার উপন্যাসদ্বয়ের রচয়িতা হারমান ওউক আজও বেঁচে আছেন। শুধু বেঁচে আছেন বললে ভুলই বলা হবে। বরং বলা উচিত বহাল তবিয়তে আছেন এবং এখনও লিখে চলেছেন। কিছুদিন আগে তার নতুন স্মৃতিকথা ‘সেইলর ও ফিডলার’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে এই ধরিত্রীর বুকে নিজের ১০০তম বছর পার করে দিয়েছেন। এক শ’ বছর বয়সে একটা বই লেখা শারীরিক দিক দিয়ে কিভাবে সম্ভব সে প্রশ্ন উঠতে পারে। কিন্তু হারমান ওউক সেটা সম্ভব করে তুলেছেন। জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি নিজের হাতেই লিখেছেন। টাইপরাইটার ব্যবহার জানতেন কিন্তু করেননি। ১৯৩৭ সাল থেকে স্বহস্তে রচিত ডায়েরি সংরক্ষণ করে এসেছেন যা এক শ’ খ-ের মতো হবে। ওর মধ্যে বোমা ফাটানোর মতো কিছু আছে কি না তিনি জানেন না। ‘সেইলর ও ফিডলার’ স্মৃতিকথাটি লেখার সময় কখনও ডায়েরিগুলোর দিকে চেয়েও দেখেননি। পুরোটাই মনের স্মৃতিপট থেকে লিখেছেন। নিজের জীবদ্দশায় সবচেয়ে বিস্ময়কর যে পরিবর্তনটা তার চোখে ধরা পড়েছে সেটা একটাই এবং সে বিষয়টি তিনি উল্লেখ করেছেন ‘সেইলর ও সিডলার’-এ। সেটা হলো ইসরাইলীদের নিয়ে। নিজের কম্পিউটারে ইসরাইলীদের খবরাখবর নিয়মিত দেখেন। একবার এক সচিত্র কাহিনী তার চোখে পড়ল যে ইসরাইলী বিমানবাহিনীর কিছু অফিসার মার্কিন পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী রণতরী থিওডোর রুজভেল্টে থেকে সাদরে এই রণতরীর বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে। এটাই তাঁর কাছে তার চেতনার জন্ম হওয়ার পর থেকে এ অবধি সবচেয়ে বিস্ময়কর পরিবর্তন বলে মনে হয়েছে। ১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়। তখন তার বয়স ৩ বছর। সে সময় ইসরাইলীরা ছিল পরভূমেনির্বাসিত যা তারা ছিল প্রায় ২ হাজার বছর ধরে। আর আজ সেই ইহুদী জাতির রাষ্ট্র ইসরাইলের বিমানবাহিনীর অফিসাররা এক পরাক্রান্ত মিত্রের বিশাল যুদ্ধজাহাজ সফরে রয়েছে। হারমান ওউকের এমন অনুভূতির কারণ তিনি একজন কট্টর জায়নবাদী যেমন ছিলেন তার বাবা নিজেও। ওউকের প্রিয় স্মৃতিকথা জেমস বসওয়েলের ‘লাইফ অব স্যামুয়েল জনসন।’ ১৯৪০-এর দশকটি তার কাছে প্রিয় দশক। কারণ ঐ দশকেই তার জীবনে মস্তবড় পরিবর্তন ঘটেছিল। তিনি কমেডি লেখা বাদ দিয়ে নৌবাহিনীর অফিসার হিসেবে সমুদ্র যাত্রায় গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চার বছর নৌবাহিনীতে ছিলেন। এ সময়কার তার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতি কোনটি জানতে চাইলে ওউক বলেন, এ সময়টা ছিল আমার জীবনের এক অসাধারণ অধ্যায়। আমার কল্পদৃষ্টি তখন নিউইয়র্ক ছাড়িয়ে সুদূর প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে বিস্তৃত হয়েছিল। আমি যাদের সাহায্যে থেকে বেড়ে উঠেছিলাম তা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে সাগরে গিয়েছিলাম। তা থেকে আমি এক দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করি যা আজও অবধি বয়ে বেড়াচ্ছি। তা হলো আমি একজন নাবিক। ওউকের স্ত্রী সারাহ মারা গেছেন বেশ ক’বছর আগে। তাদের দাম্পত্য জীবন ছিল ৬৩ বছরের। এই দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে একসঙ্গে থেকে যাওয়ার গোপন রহস্য কোনটি? ওউক মনে করেন সেটা হলো নিখাদ ভালবাসা। সূত্র-টাইমস
×