ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৩১ জানুয়ারি ২০১৬

কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান

সালাম মশরুর, সিলেট অফিস ॥ জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে শ্রীলংকা ও পাকিস্তান। শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আফগানিস্তাকে ৩৩ রানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীলঙ্কা ও জেলা স্টেডিয়ামে কানাডাকে সাত উইকেটে হারিয়ে পাকিস্তান কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার পথ প্রশস্ত করে নিয়েছে। শনিবার জয়ের আনন্দে ফুরফুরে মেজাজে মাঠ ছাড়েন খেলোয়াড়রা। আইসিসি অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে আফগানিস্তাকে ৩৩ রানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তান ১৮৫ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওপেনার করিম জান্নাতের ৪০ ও শেষের দিকে ওয়াহিদুল্লার ঝড়ো ৪৭ রানের সুবাদে এক সময় জয়ের সুবাস পাচ্ছিল আফগানিস্তান । তবে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়াহিদুল্লাহ আউট হলে টানা দু’ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত করে আফগানিস্তান। প্রথম দিনের মতো শনিবারও মাঠে তেমন দর্শক সমাগম হয়নি। যথারীতি ম্যাচে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। আফগানিস্তান ১৮৫ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওপেনিং জুটি মাত্র ১৫ রান পর্যন্ত নিয়ে যায়। ফারনান্ডের বলে ২ রান করে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন নাবিদ ওবায়েদ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দলের হয়ে আশার আলো দেখান ইহসানউল্লাহ ও করিম জান্নাত। দলকে ৫১ রান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার পর ভাঙ্গে ৩৬ রানের জুটি । ৩৫ বলে ২৩ রান করে ডি সিলভার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন ইহসানউল্লাহ। দলের অপর ব্যাটসম্যানের আসা যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রাখেন করিম জান্নাত। ১০৩ বলে ৪০ রানের ইনিংসটিতে কোন বাউন্ডারির মার ছিল না। আফগানিস্তানের মিডল অর্ডার সম্পূর্ণ ব্যর্থ ছিল। তবে শেষ দিকে ওয়াহিদুল্লার ঝড়ো ৪৭ রানের সুবাদে এক সময় জয়ের সুবাস পাচ্ছিল আফগানিস্তান। তবে অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হয়ে খেলতে গিয়ে সিলভার বলে বোল্ড হলে ১৫১ রানে অলআউট হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় আফগানিস্তান । শ্রীলঙ্কার হয়ে মেন্ডিস ৩৮ রানে ৩টি, দামিথা সিলভা ৩৩ রানে ২টি , আসালাঙ্কা ১৮ রানে ২টি এবং ডি সিলভা, নিমেষ ও ফারনান্ড ১টি করে উইকেট লাভ করেন । এর আগে অধিনায়ক চারিত আসালাঙ্কার ৭১ রানে অনবদ্য ইনিংয়ের পরও মাত্র ১৮৪ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ৯১ বলের ইনিংয়ে ৮টি চারের মার ছাড়াও ১টি অভার বাউন্ডারি ছিল। অধিনায়কের মতো উইকেটে অন্য ব্যাটসম্যানরা সেট হয়েও টিকতে পারেননি। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে দেখে শুনে খেলতে থাকে শ্রীলঙ্কার ওপেনাররা উদ্বোধনী জুটিতে ৪৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন। তবে দলীয় ৪৮ রানে রানআউটের শিকার হয়ে সাজ ঘরে ফিরেন ফানান্ডো । ২৭ বলে ৩০ রানের ইনিংসে ৪টি চার ও একটি ছয়ের মার ছিল। দলীয় ৬৪ রানে শামসুর রাহমানের বলে অপর ওপেনার ২০ রান করে ওয়াহিদুল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে দলকে বিপদের মধ্যে রেখে যান। দলের যখন বড় জুটি গড়ার দরকার তখন উল্টা ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ৯৬ রানে দলের টপঅর্ডারের ৫ ব্যাটসম্যানকে হারায় তারা। তখন দলের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভাব হন অধিনায়ক চারিত আসালাঙ্কা। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ডি সিলভাকে নিয়ে ৬৪ রানের জুটি গড়েন দলের প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। ২০ রান করা ডি সিলভাকে শামসুর রাহমান ফিরালে ভাঙ্গে দলের হয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি। দলীয় ১৬৮ রানে ৭১ রান করা লঙ্কান দলপতি বিদায় নিলে তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ে তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। ১৮৪ রানে শেষ হয় শ্রীলঙ্কার ইনিংস । আফগানিস্তানের হয়ে শামসুর রাহমান ১৯ রানে ৩টি, জহির খান ৩৬ রানে ২টি, করিম জান্নাত ৩৭ রানে ২টি ও জিয়াউর রহমান ২৮ রানের বিনিময়ে ১ উইকেট লাভ করেন । শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চারিত আসালাঙ্কা ব্যাট হাতে ৭১ রান ও দুই উইকেট লাভ করায় ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন। পাকিস্তানের বড় জয় ॥ অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপে কানাডাকে সাত উইকেটে হারিয়ে বড় জয় পেয়েছে পাকিস্তান। কানাডার ছুঁড়ে দেয়া ১৭৯ রানের মামুলো টার্গেটে মাত্র তিন উইকেট হারিয়ে ৫৫ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দলীয় মাত্র দুই রানে হাসান মোহসিনের বলে ওপেনার থুরসান্ত আনান্থারাজাহকে হারায় কানাডা। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে আমিশ তাপোলোকে নিয়ে ৬০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন ভাবিন্দু আদিহেতি। ২৮ রান করে আমিশ তাপোলো শাহদাব খানের শিকার হলে ভাঙ্গে এই জুটি। আদিহেতি আউট হওয়ার আগে ৫১ রানে দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলে যান। তাকেও ফিরান শাহদাব খান। তবে এই দু’জন ফিরে গেলেও অধিনায়ক আবরাশ খান মিডলঅর্ডারে নেমে ৪৪ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন। তবে অন্য প্রান্তে ছিল ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল। সেই সঙ্গে রানআউটের শিকার হন কানাডার তিন ব্যাটসম্যান। পাকিস্তান যুবাদের মধ্যে হাসান খান ১০ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন। আর দুটি উইকেট পান শাহদাব খান। একটি করে উইকেট পান হাসান মোহসিন ও আহমেদ শফিক। ১৭৯ রানের সহজ টার্গেটে খেলতে নেমে দুই ওপেনার জিশান মালিক ও গওহার হাফিজ মিলে ৫১ রানের জুটি গড়েন। ব্যক্তিগত ২০ রান করে আকাশ গিলের বলে অধিনায়ক হাফিজ আউট হলে ভাঙ্গে এই জুটি। দলীয় ৬৫ রানে পাকিস্তান নিজেদের দ্বিতীয় উইকেট হারায়। মাত্র ছয় রান করে মামিক লুথারের বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়ানে ফেরেন মুহাম্মদ আসাদ। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে সাইফ বাদারকে নিয়ে লক্ষ্যের দিকে এগোতে থাকেন ওপেনার মালিক। সাইফ ছয় রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হন। ৭৫ বলে তিন চারে ৪৪ রান করে সুলেমান খানের বলে আউট হন তিনি। ১২২ বলে নয় চার ও এক ছয়ে ৮৯ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন মালিক। ম্যাচসেরার পুরস্কারও ওঠে তার হাতেই।
×