ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আজ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৩১ জানুয়ারি ২০১৬

আজ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড

মিথুন আশরাফ ॥ অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে আজ বাংলাদেশ যুব দলের আরেকটি ম্যাচ রয়েছে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই করবে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। ম্যাচটিতে জিতলেই সুপার লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করার পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সকাল নয়টায় শুরু হবে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলে সুপার লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলাও নিশ্চিত হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশের। যদি কক্সবাজারের একাডেমি মাঠে হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা ও নামিবিয়া অনুর্ধ-১৯ দলের বিপক্ষে ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা হেরে যায়। সেক্ষেত্রে সবদলই ২টি করে ম্যাচ খেলে ফেলবে। টানা দুই ম্যাচ জিতে ৪ পয়েন্ট নিয়ে সুপার লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার টিকেট পাবে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে নামিবিয়াও সমান ম্যাচ জিতে সমান পয়েন্ট নিয়ে সুপার লীগে উঠে যাবে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্কটল্যান্ডের পয়েন্ট ভা-ার থাকবে শূন্য। ‘এ’ গ্রুপের এ চার দলের বাকি থাকবে আর একটি করে ম্যাচ। সেই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্কটল্যান্ড জিতলেও লাভ হবে না। পয়েন্ট যুক্ত হবে ২। যা বাংলাদেশ ও নামিবিয়া থেকে ২ পয়েন্ট কম থাকবে। অর্থাৎ আজই বাংলাদেশের সুপার লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা নিশ্চিত হয়ে যেতে পারে। শুধু স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নামিবিয়ার জয় লাগবে। এর ব্যতিক্রম ঘটলেই বাংলাদেশকে সুপার লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে। তখন গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচের রেজাল্টের উপরই নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে। কি হবে না হবে, তা নিয়ে ভাবতে চান না বাংলাদেশ যুব দলের পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। তার দৃষ্টি শুধু জয়েই। বলেছেন, ‘প্রথমত আমরা প্রথম ম্যাচটি জিতেছি। আমাদের দলের আত্মবিশ্বাস হাই। পরের ম্যাচগুলো খাটো চোখে দেখছি না। জয় ছাড়া কোন কিছু দেখছি না। কোন ম্যাচ হাল্কাভাবে নেয়া উচিত না। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আমরা যে মনযোগে খেলেছি সে মনযোগে আমরা কালকের (আজকের) ম্যাচ খেলব।’ স্কটল্যান্ডকে নিয়ে সাইফুদ্দিন জানান, ‘স্কটল্যান্ড নতুন দল। ওদের সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা নেই। ওদের আমরা চিনি না। ওদের সঙ্গে আমরা কোন ‘হোম এ্যান্ড অ্যাওয়ে’ ম্যাচ খেলিনি। যতটুকু ধারণা টিমটা নিশ্চয়ই ভাল হবে। শতভাগ দিয়ে আমরা খেলব।’ শুধু জয় নয়, রানরেটেও দৃষ্টি আছে বাংলাদেশ দলের। সাইফুদ্দিনই যেমন বললেন, ‘দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে হলে অবশ্যই রান রেটের কিছু ব্যাপার-স্যাপার থাকে। আমরা চাইব জয়টা যেন একটু বড় হয়। এ টার্গেট থাকবে আর কি।’ ব্যক্তিগত পারফর্মেন্স নিয়েও জানান প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩ উইকেট নেয়া সাইফুদ্দিন, ‘রোলটা ছিল ভাল বোলিং করা। যেহেতু আমাদের স্পিন অ্যাটাক আছে। স্যাররা আমাদের বলছে আমরা যেন রানটা প্রথম দশ ওভারে একটু চেক দেই। আমরা করছি। মোটামুটি পারছি। এ জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাড়াতাড়ি অলআউট করতে পারছি। প্রত্যেকটা ম্যাচে এ রোলই থাকে।’ উইকেট নেয়ার পর সাইফুদ্দিন দুই হাত মেলে দিয়ে যেভাবে সেলিব্রেশন করেন, পাকিস্তান অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদির ছোঁয়াই মিলে। তাহলে কি এক্ষেত্রে আফ্রিদিকেই ফলো করেন সাইফুদ্দিন? এ নিয়ে বলেন, ‘কাউকে ফলো করি না। আফ্রিদি ভাইয়ের খেলা ভাল লাগে। সেলিব্রেশনটা আমি আমার মতো করেই করি। অনেকেই বলেন আমার সেলিব্রেশন আমি আফ্রিদির মতো করে করি। কিন্তু আমি সত্যিই আমার মতো করেই করি।’ মূলত ব্যাটসম্যান সাইফুদ্দিন। কিন্তু টিম কম্বিনেশনের কারণে ৭-৮এ ব্যাটিং করতে হয়। তাই জানালেন বল হাতে দুর্দান্ত বোলিং করা এ পেসার, ‘আমি মূলত ব্যাটসম্যান কাম পেস বোলার। টিম কম্বিনেশনের কারণে হয়তো ৭-৮এ ব্যাটিং করতে হচ্ছে। আমাকে যখন যেভাবে চাওয়া হয় আমি সেভাবে পারফর্ম করার চেষ্টা করি। যখন ব্যাটিংয়ে আসি তখন ব্যাটিং নিয়ে ভাবি; আমার বোলিংয়ে বোলিং নিয়ে ভাবি।’ সাইফুদ্দিন ইয়র্কার দেন দারুণ। একের পর এক ইয়র্কার দিতে পারেন। সেই ইয়র্কারে দক্ষিণ আফ্রিকা নাজেহালও হয়েছে। এ নিয়ে সাইফুদ্দিন টেপ টেনিস খেলার কথা সামনে তুলে ধরলেন, ‘ছোটবেলা থেকে পাড়ায় অনেক ক্রিকেট খেলতাম। টেপ টেনিস ম্যাচ খেলতাম তো; বুঝেনই তো। আসলে করতে করতে অভ্যাস হয়ে গেছে। টেপ টেনিসের এ্যাকিউরেসিটা আমার ক্রিকেট বলে আসছে। আমার যেটা ভাল আমি সেটা করার চেষ্টা করি। আমার এটা খুব ভাল। টি২০ টুর্নামেন্ট আমি বেশি খেলতাম, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, কুমিল্লা; তখন থেকে আমার হ্যাবিটটা আসে। তখন থেকে ১৬-২০ ওভার ধারাবাহিকভাবে খেলে যেতাম। ওই বোলিংটাই আমি এখানে এসে করি আর কি। চেষ্টা করেছি ওটাকে আয়ত্বে আনার। স্পট বোলিংয়ের পাশাপাশি ইয়র্কার বোলিংও ২০-২৫টা বল ট্রাই করি। আমার জন্যে একটা নিয়ম থাকে; প্রথম ১৮-২০ বল লেন্থ বল। তারপর সøগ ও ডেড বল করার জন্যে স্যার আমার জন্যে একটা সময় রাখেন। ওই সময়ে আমি ইয়র্কার অনুশীলন করি।’ নিউজিল্যান্ডের কোরি এ্যান্ডারসন ও ইংল্যান্ডের ব্রেন স্ট্রোকসকে সাইফুদ্দিনের বেশ ভাল লাগে। আদর্শও। এ ব্যাটসম্যান কাম পেসারের লক্ষ্য জানাতে গিয়ে বলেন, ‘যেহেতু শুরুটা ভাল করেছি। লক্ষ্য থাকবে অলরাউন্ডার হিসেবে নিজের রোলটা আরও ভালভাবে প্লে করার চেষ্টা করব। যেহেতু দেশের মাটিতে খেলা, চাইব অন্তত ফাইনাল পর্যন্ত খেলার। পাশাপাশি নিজের পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা থাকবে।’ বাংলাদেশকে ফাইনালে খেলতে হলে আগে সুপার লীগ, কোয়ার্টার ফাইনাল ও সুপার লীগ সেমিফাইনালে জিততে হবে। তারও আগে গ্রুপ পর্বের বাধা অতিক্রম করতে হবে। এ জন্য আজ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটিতে জেতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
×