ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টি২০তে জয় দিয়ে শুরু পাকিস্তানের

আমিরের ফেরার ম্যাচে ‘নায়ক’ আফ্রিদি

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬

আমিরের ফেরার ম্যাচে  ‘নায়ক’ আফ্রিদি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মোহাম্মদ আমিরের প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে আর সবকিছু যেন ম্লান হয়ে গিয়েছিল। আলোচনায় ছিলেন কেবলই স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা এই পেসার। যেখানে ব্যাটে-বলে (২৩ রান ও ২ উইকেট) আলো ছড়িয়ে ‘নায়ক’ বনে গেলেন ‘বুম বুম’ আফ্রিদি। অধিনায়কের দুরন্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যের সৌজন্যে নিউজিল্যান্ড সফরে প্রথম টি২০তে ১৬ রানের দারুণ এক জয় তুলে নিল পাকিস্তান। তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল অতিথিরা। অকল্যান্ডে ৮ উইকেটে ১৭১ রানের ফাইটিং স্কোর গড়ে পাকিরা, জবাবে ঠিক ২০ ওভারে ১৫৫ রানে অলআউট হয় স্বাগতিক কিউইরা। প্রায় অর্ধযুগের প্রতীক্ষার পর ফেরার ম্যাচে ৩১ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন আলোচিত আমির। হ্যামিল্টনে দ্বিতীয় ম্যাচ রবিবার। ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তানের খেলায় এদিন ‘কনসিস্টেন্সি’ ছিল যথেষ্টই। টস জিতে ব্যাটিং নেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ১০ ওভারে ৭৮ রান তুলতেই টপ-অর্ডারের ৩ উইকেট হারায় পাকিরা। কে ভেবেছিল বাকি ১০ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে আরও ১০০ রান যোগ করবে সফরকারীরা? মূল কৃতিত্ব অবশ্যই মোহাম্মদ হাফিজের। ৪৭ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৬১ রান আসে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে। তাকে যোগ্য সহায়তা দিয়ে স্কোরটাকে চ্যালেঞ্জিং অবস্থানে নিয়ে যান উমর আকমল-আফ্রিদিরা। মাত্র ৮ বলে দুটি করে চার ও ছক্কার সাহায্যে ২৩ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন অধিনায়ক আফ্রিদি। আকমল ১৪ বলে ২৪ এবং শোয়েব মালিক ১৮ বলে করেন ২০ রান। শেষ দিকে ইমাদ ওয়াসিমের ৯ বলে ১৮ রানের ইনিংসটি ছিল ‘ক্যামিও’। টি২০তে ক্যারিয়ার সেরা বেলিংয়ের পথে ৩৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন এ্যাডাম মিলনে। জবাবে ব্যক্তিগত ২ রানে ফর্মের তুঙ্গে থাকা মার্টিন গাপটিল রানআউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে শুরুতেই ধাক্কা খায় নিউজিল্যান্ড। এরপরই স্বাগতিকদের রেসে ফেরান কেন উইলিয়ামসন (৬০ বলে ৭০) ও কলিন মুনরো (২৭ বলে ৫৬Ñ ২ চার ৬ ছক্কা!)। দ্বিতীয় উইকেটে ৮.১ ওভারে ৮০ রান যোগ করেন এ জুটি। এরপর আচমকা ঝড়ের মতো ল-ভ- হয়ে পড়ে উইলিয়ামসন-শিবির। কিউই সেনাপতিকে হাফিজের হাতে ক্যাচ বানিয়ে যার শুরুটা করেন ওয়াহাব রিয়াজ। ১০৭-১০৮ এই ১ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। কোরি এ্যান্ডারসন, লুক রনকি ও মিচেল স্যান্টনার তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। যেখানে দুই শিকার আফ্রিদির, সঙ্গে এক রানআউট ও দুই ক্যাচÑ অবধারিত ম্যাচসেরা পাকিস্তান অধিনায়ক। দলীয় ১০৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধ্বসংস্তূপে পরিণত হয় কিউইরা। শেষ দিকে ১০ রান করে হারের ব্যবধান কমান হেনরি। ওয়াহাব রিয়াজ ৩, ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা উমর গুল নেন ২ উইকেট। ৪ ওভারে ৩১ রানের বিনিময়ে হেনরির উইকেটটি লাভ করেন দীর্ঘ অর্ধযুগ পর জাতীয় দলে ফেরা আমির। ২০১০ সালে পাকিস্তানের ইংল্যান্ড সফরে লর্ডস টেস্টে অধিনায়ক সালমান বাট ও অপর পেসার মোহাম্মাদ আসিফের সঙ্গে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন প্রতিভাবান এই পেসার। এর আগে ২০১০Ñএর আগস্টে লর্ডসে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ (টেস্ট) খেলেছিলেন আমির। গত সেপ্টেম্বরে নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে দুরন্ত পারফর্ম করে পুনরায় পাকিস্তানের জার্সি গায়ে চাপানোর সুযোগ পান ২৩ বছর বয়সী পেসার। দুরন্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যে তার এ প্রত্যাবর্তনে জয় উপহার দিলেন অধিনায়ক আফ্রিদি। স্কোর ॥ পাকিস্তান ইনিংস ১৭১/৮ (২০ ওভার; হাফিজ ৬১, আকমল ২৪, আফ্রিদি ২৩, মালিক ২০, ইমাদ ১৮, শেহজাদ ১৬; মিলনে ৪/৩৭, স্যান্টনার ২/১৪, হেনরি ১/৩১)। নিউজিল্যান্ড ইনিংস ১৫৫/১০ (২০ ওভার; উইলিয়ামসন ৭০, মুনরো ৫৬, হেনরি ১০, ইলিয়ট ৩; ওয়াহাব ৩/৩৪, আফ্রিদি ২/২৬, গুল ২/৩৮) ফল ॥ পাকিস্তান ১৬ রানে জয়ী ম্যাচসেরা ॥ শহীদ আফ্রিদি (পাকিস্তান) সিরিজ ॥ তিন ম্যাচের টি২০তে পাকিস্তান ১-০তে এগিয়ে।
×