ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা প্রয়োজন

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ৫ জানুয়ারি ২০১৬

যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা প্রয়োজন

’৭১ সালে একটি বিশাল দল একদিকে যেমন পাকিস্তানী শাসকের কৃপাধন্য হবার লক্ষ্যে জামায়াতের দেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপতৎপরতায় যোগ দিয়েছিল, তেমনি অপরদিকে পাক হানাদারদের মদদে, উৎসাহে হিন্দু ও আওয়ামী লীগ নেতা, কর্মী, সমর্থকদের বাড়িঘর, সম্পদ লুট করে পথের ফকির, ফুটপাথের তাবিজ বিক্রেতা থেকে বিপুল ধন সম্পদের মালিক বনে গেছে যা নজিরবিহীন এবং যুদ্ধাক্রান্ত ইউরোপে হয়নি! ’৭১ সালে বিপুল তরুণ, তরুণী, নারী, পুরুষ, কিশোর মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেবার কারণে শুধু যে তারা নিজেরা যুদ্ধের ময়দানে আত্মাহুতি দিয়েছে তা নয়, সেই সঙ্গে তাদের মা, বাবা, ভাই, বোনকে প্রাণ, সম্ভ্রম দিতে হয়েছে পাকি সৈন্য, বিহারী অথবা বাঙালী যুদ্ধাপরাধীদের হাতে। তাদের সব সম্পদ লুট করেছে যুদ্ধাপরাধী রাজাকার ও শান্তি বাহিনীর দল, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের সর্বস্বান্ত করেছিল ঐ স্বদেশবিরোধী দল। তাহলে দেখা যাচ্ছে- যুদ্ধাপরাধীরা প্রায় সবাই ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ফকির থেকে ধনীতে পরিণত হয়েছে বিপদগ্রস্ত মানুষের ধনসম্পদ, লুট ও জমি, বসতবাড়ি দখল করে। স্মরণ রাখতে হবে ’৭১-এ প্রথমবার তারা ধনী হয়েছে। এরপর তাদের দ্বিতীয় মওকা আসে ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে এবং এই মুক্তিযুদ্ধের চার সফল পরিচালক তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানকে ঢাকা জেলে হত্যা করার পর। যখন জিয়াউর রহমান গ্রেফতার ও বিচারাধীন এগারো হাজার যুদ্ধাপরাধীকে মুক্তি দেয়, দালাল আইন বাতিল করে এবং ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ওপর বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক প্রদত্ত নিষেধাজ্ঞা রহিত করে তাদের বাংলাদেশবিরোধী রাজনীতি চর্চার বন্ধ উৎসমুখটি খুলে দেবার পর। এই দ্বিতীয় সুযোগে তারা প্রবল বেগে প্রথমেই নানা রকম ব্যবসা-বাণিজ্যে ঢুকে পড়ে। এটা তো জানা কথা, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ করতে পুঁজি প্রয়োজন হয় যেটি ’৭১-এ তারা অর্জন করেছিল। শীঘ্রই তারা মধ্যপ্রাচ্যের বাংলাদেশবিরোধী পাকিবান্ধব রাষ্ট্রগুলোর আর্থিক সহায়তা লাভ করে ব্যাংক, বীমা, ক্রমে হাসপাতাল, ক্লিনিক, এনজিও এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করে তাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রথম বঙ্গবন্ধু সরকার ’৭৩-এ যুদ্ধাপরাধীর গ্রেফতার ও বিচার শুরু করলেও তাদের ’৭১-এ লুট করা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার বিধান দালাল আইনে না রাখায় ঐ অন্যায় পথে অর্জিত রক্তে ভেজা সম্পদ ’৭৫-এর পর পাকিস্তানপন্থী সরকারের আনুকূল্যে পরবর্তীতে তিন, চারগুণ সম্পদে পরিণত হয়। অথচ যে দরিদ্র কৃষক, শ্রমিকের সন্তানরা দেশকে স্বাধীন করতে অকাতরে আত্মত্যাগ করল, তারা বঙ্গবন্ধু নিহত হলে আবার সর্বস্বহারা হয়ে গেল। সত্যি কথা বলতে গেলে, ’৭৫-এর হত্যা ও ক্ষমতাবদল যে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের কত শত শত ক্ষেত্রে ক্ষতিসাধন করেছে, তা আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে হিসাব করিনি, কোন গবেষণাও এ ক্ষেত্রে হয়নি। আমাদের অর্থনীতিবিদ গবেষক ড. আবুল বারকাত দীর্ঘদিন যাবত মৌলবাদের অর্থনীতি, জঙ্গী দলের সম্পদ ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা, এমনকি জঙ্গী দলের নামের তালিকা, সম্পদের তালিকাও সরকার ও জাতিকে জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর গবেষণা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ যেসব তথ্য জানাচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হচ্ছে- ১. দেশে ১৩২টি জঙ্গী সংগঠন আছে ২. ২৩১টি মৌলবাদী বেসরকারী সংস্থা বা এনজিও, ট্রাস্ট, ফাউন্ডেশন দেশে মুনাফা আয় করে বিদেশে এ মুনাফা পাচার করছে। ৩. মৌলবাদী অর্থনীতির বার্ষিক নিট মুনাফা ২ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। যা গত চার দশকে পুঞ্জীভূত হয়েছে বর্তমান মূল্যে আনুমানিক দুই লাখ কোটি টাকা। ৪. গত তিন দশকে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেলেও মাদ্রাসা বেড়েছে ৮ গুণ, সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষার্থী দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেলেও দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী বেড়েছে ১৩ গুণ, মাথাপিছু রাষ্ট্রীয় ব্যয় সাধারণ শিক্ষার শিক্ষার্থীর জন্য তিন হাজার টাকা অথচ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর জন্য পাঁচ হাজার টাকা। আমাদের সবার সম্মিলিতভাবে ভেবে দেখা দরকার, এই বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক বিশ্বে, তদুপরি, ডিজিটাল বাংলাদেশে একবিংশ শতাব্দীতে কেন এমন পশ্চাৎপসরণ দেখা যাচ্ছে, যা শুধু দেশের প্রকৃত উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার পথে বড় অন্তরায় নয়, বরং যা আইনের শাসন, সুশাসন, শান্তি ও শৃঙ্খলা এবং গণতন্ত্রের পথে পর্বতসমান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাদা চোখেই দেশে এ অবস্থার প্রধান কারণ হিসেবে দেখা যায়- ১. কমপক্ষে বিগত চল্লিশ বছর যাবত দেশের জামায়াতে ইসলামীর নেতা-সমর্থকরা তাদের দলীয়, ব্যক্তিস্বার্থে দেশে অসংখ্য মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও অন্য শিক্ষা কেন্দ্র, কোচিং সেন্টার করেছে, ২. আরব দেশগুলো এদেশে তাদের প্রভাব বিস্তারে জামায়াতী, অ-জামায়াতী মোল্লা, মৌলবীদের মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় বিপুল অর্থ দান করেছে, ৩. অ-জামায়াতী কিন্তু ধর্মীয় নানা দল ও সংস্থা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছে, ৪. সর্বোপরি, দেশের সাধারণ শিক্ষার উচ্চ শিক্ষিত আমলা, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী প্রমুখ চাকরি থেকে অবসরলাভের পর নিজ গ্রামে মা, বাবা, নিজ নামে স্কুলের চাইতে বেশি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছে। জামায়াত নেতাদের মতোই মাদ্রাসা শিক্ষায় এদের অন্তরে বিশ্বাস নেই বলে এরা সবাই নিজেদের সন্তানদের মাদ্রাসা শিক্ষায় ভুলেও ভর্তি করাননি। এদের সবার স্থির বিশ্বাস মাদ্রাসায় গরিবের সন্তানরা পড়বে, খাওয়া, থাকার জায়গা পাবে, সুতরাং ওরা জঙ্গী জেহাদী হয়ে খুন-খারাবি, যাই করতে নির্দেশ পাবে, তারা তাই করতে বাধ্য থাকবে। এরা ক্রীতদাস-যোদ্ধা হয়েই জেহাদী নেতাদের নির্দেশে জঙ্গী কর্মকা- করে থাকে। এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। একেবারে সাম্প্রতিক কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা জনগণকে চিন্তান্বিত করে তুলছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে প্রাপ্ত পাঁচ কাঠার রাজউক প্লটে আমাদের বরাদ্দ চারটি ফ্ল্যাটের একটি বিক্রি করে ডেভেলপারের ফেলে রাখা পুরো বাড়িটি শেষ করে যখন দু’কন্যার দুটি প্রাপ্য ফ্ল্যাট রেখে আর একটি ফ্ল্যাট বিক্রি ও মেয়েদের ফ্ল্যাট ভাড়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিই, তখন আমার জীবনের অত্যাশ্চর্য ঘটনার মুখোমুখি হই। ভাড়া নিতে এবং ফ্ল্যাট কিনতে যত ব্যক্তি যোগাযোগ করেছিল তাদের মধ্যে অন্তত অর্ধেক বা তার বেশি সংখ্যক ব্যক্তি এসেছিলেন আমাদের উত্তরা ১০ নম্বরে অবস্থিত বাড়িটি নাকি একটি বিখ্যাত মাদ্রাসার কাছে যেটিতে পড়াশোনা করে তাদের শিশুটি তাদের আখেরাতের ব্যবস্থা করবেন! কেউ কেউ বললেন, ছেলে এ মাদ্রাসাতে পড়াশোনা করে আলেম হয়ে তরুণ ভদ্রলোক বৃদ্ধ হয়ে যখন মারা যাবেন, তখন তার কবরে ঐ সন্তান দোয়া পড়বে, উনি মৃত হয়েও তাতে শান্তি পাবেন! আমার পাঠক এবং আমার বন্ধুরা ধারণা করতে পারবে যে তাদের প্রতি কত কঠোর ছিল আমার উত্তর। দ্বিতীয় উদাহরণটি অতি মারাত্মক এবং সবকিছু যে নষ্টদের হাতে চলে গেছে তার প্রমাণ যা হুমায়ুন আজাদ কত সত্যিই না বলেছিলেন। আমাদের বন্ধু নূরুল ইসলাম ও তার পুত্রের স্মরণসভায় একজন বর্ষীয়ান কমিউনিস্ট নেতা তাঁর তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেন যা হচ্ছে- বিজয় দিবস পালনে কমিউনিস্ট পার্টির ছাত্র-যুব সংগঠন এক সপ্তাহের ‘ওয়াজ মাহফিলে’র আয়োজন করেছে। তাতে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং একটি কার্ড পেয়েছেন তিনি যেটি পড়ে এই শেষ বয়সে তাঁকে বুঝতে হলো- সারা জনম ধরে ছোটদের তিনি বা তাঁরা কি শেখালেন! শুনে মনে প্রশ্ন জাগল- তাহলে মাদ্রাসার দরকার কি, কমিউনিস্ট যখন স্বাধীনতার বিজয় উৎসবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যা আমরা করতাম, তা বাদ দিয়ে ‘ওয়াজ মাহফিল’-এর আয়োজন করে, করার কথা ভাবতে পারে, কার্ড ছাপায়, তাহলে জামায়াত-হেফাজত-মাদ্রাসাকে আর কষ্ট করে এসব করতে হবে না। প্রগতিশীল ‘তরুণরাও বিজয় উৎসবে ‘ওয়াজ মাহফিলে’র আয়োজন করে, এই একবিংশ শতকে, এই তথ্যপ্রযুক্তি, বিজ্ঞানের যুগে। তবে, এরাই তো ভবিষ্যতের তেঁতুল হুজুর, অন্য হুজুরে পরিণত হবে না তা কে বলবে? হায়! বাংলাদেশের এমন সোনার পাথরবাটি তরুণদের হাতে পড়ে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের হাল কি হতে পারে ভেবে আঁতকে উঠি! জামায়াত-শিবির-হেফাজতদের বদলে ওদের কাজ এরাই করবে কি? এরা যদি ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময়ের তরুণ হতো, তবে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় কি আমরা অর্জন করতে পারতাম? নাকি চারদিকে প্রগতিশীলদের ছদ্মবেশে রাজাকারদের সংখ্যা হতো অনেক বেশি। ভাবতে ভয় লাগছে যদি ওদের সংখ্যা মুক্তিযোদ্ধাদের চাইতেও বেশি হতো, তবে কি হতো? না! সেই ভাগ্য আমাদের, সেদিনের কৃষক, শ্রমিক, পুলিশ, ইপিআর, ছাত্র, শিক্ষক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবী, সাধারণ নারী-পুরুষ দেশপ্রেমিক ছিল, ছিল না খেয়ে দেশমাতাকে জীবন উৎসর্গ করে হানাদারমুক্ত করার লক্ষ্যে একরোখা। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল। ওপর থেকে নির্দেশ, রাজবন্দী আমাদের প্রিয় নেতা অনলবর্ষী বক্তা, কাজী জাফর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আছেন, দেখতে যাও! রোকেয়া হল থেকে দুই আধপেটা খাওয়া শুঁটকো তরুণী ছুটছে নেতার অবস্থা দেখতে। গিয়ে দেখি, নেতা খেতে বসেছেন, রাজবন্দী হলে যে পোলার চালের সরু সাদা ভাত, মুরগি, মাছ, নানা তরকারি, মিষ্টি, রাজভোগ দেয়া হয়! ফিসফিস আলাপ, পাকিস্তানীরা রাজবন্দীদের রাজভোগ দেয় তাহলে, নিশ্চয় এমনটাই নিয়ম! ১৮/১৯ বছরের মেয়েরা নেতার সঙ্গে আবার কি কথা বলবে। মনে নেই। তবে, সুখাদ্য বলেই বোধ হয় অর্ধভুক্তদের এখনও তা মনে আছে। এটি একেবারে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নয়। সে সময় থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের আকাক্সক্ষা- কৃষক, শ্রমিক, নারী ও মুক্তিযোদ্ধার নিরাপদ, উন্নত জীবন। কেন যেন, ঐ সুযোগ আর বামপন্থী সমাজতান্ত্রিক নেতাÑ এ দুটোকে মেলাতে পারেনি। পরে, এ নেতার রং বদল এ যুগের সমাজতন্ত্রী যুবকদের মধ্যেও দেখাতে হবে কেন? মূল কথায় ফিরে আসি। কর্নেল তাহেরের ভাই ড. আনোয়ার হোসেনের বক্তব্য থেকে জানতে পারলাম, জিয়াউর রহমান শুধু যে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি ও সে সময়ে বন্দী তাহেরের সব ভাইকে জেল দেয় তা নয়, তাদের সব সম্পদ, এমনকি একটি ছোট গাড়িও বাজেয়াপ্ত করেছিল। এটি জেনে খুব খুশি হলাম এই ভেবে যে, সব রকম আইন ভাঙ্গা অনেক অন্যায় করে আজ এতকাল পর জানলাম আমাদের উনি অন্য একটি ‘অনুকরণীয়’ পদক্ষেপও নিয়েছিলেন! এখন যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার প্রথম উদাহরণ তো ওদের মিত্র, জিয়াই প্রতিষ্ঠা করেছিল! ’৭১-এর লুটেরা যুদ্ধাপরাধী যে পর্বতসমান সম্পদ গড়েছে, তাহলে জিয়ার পথ অনুসরণ করে আমরা সহজেই তাদের অর্জিত সে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পারি। সব পদক্ষেপের একটি পূর্ব উদাহরণ থাকলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ সহজ হয়। এবার সময় এসেছে, আমরা জঙ্গী ও যুদ্ধাপরাধীদের সব রকম সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং তাদের সবরকম আয়ের উৎস বন্ধ করে দেব। সরকার দ্রুত যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গীদের বিচার করে যে দ- দেবে তার সঙ্গে অবশ্যই থাকতে হবে যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত হওয়ার বিধান। এ পথেই কখনই অনুশোচনা না করা, ’৭১-এর মানবতাবিরোধী অপরাধ করার জন্য ক্ষমা না চাওয়া বরং নতুন নতুন জঙ্গী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী চক্রের জন্মদানের প্রক্রিয়াটি চিরতরে বন্ধ করা সম্ভব হবে। এভাবেই জঙ্গীদের প্রাণভোমরাটির প্রাণ বিনাশ করা সম্ভব। তাছাড়া, এটি সম্ভব করার সময়টি উপস্থিত হয়েছে, কালের এই ডাক আমাদের শুনতে হবে, নতুবা এ সময়টি পেরিয়ে গেলে আরেকবার এ সময় কত দশক পর আসবে, তার ঠিক নেই। বাঙালী এ সময়টি পেয়েছে প্রকৃতপক্ষে ’৭৫-এর পর ২০০৮-এ। অর্থাৎ ৪৩ বছর পর সময়টি এসেছে, ৪৫ বছর পর যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়েছে যা ছিল এক স্বপ্নের মতো অধরা, সেটি আজ হয়েছে বাস্তব। এবার আমরা সময় পেয়েছি, এবার আমরা অনেক অনেক অসাধ্য, অসম্ভব কাজ সহজে করে ফেলব অনেক সহজসাধ্য কাজের সঙ্গে সঙ্গে। মাভৈঃ, এগিয়ে যাও তরুণ প্রজন্ম।
×