ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

একুশ শতক ॥ কাগজ বিদায় করতে চাই

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১৮ অক্টোবর ২০১৫

একুশ শতক ॥ কাগজ বিদায় করতে চাই

॥ এক ॥ ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা যখন বলেছি; তখন এটি জেনেশুনেই বলেছি যে, এনালগ যুগের কাগজ বিদায় করতে হবে। আমি মনে করি, ডিজিটাল সভ্যতা কাগজের সভ্যতার কবরের ওপরই জন্ম নেবে। এজন্য প্রশাসন থেকে কাগজ বিদায় হতে হবে। বিদায় হতে হবে শিক্ষা থেকে। জীবনের বহু কাজে এখন আমরা আর কাগজের সন্ধান করি না। সামনের দিনে কোথাও কাগজ থাকবে না। আজ আমরা পাঠদান পদ্ধতি থেকে কাগজ বিদায় করা নিয়ে আলোচনা করব। হয়ত অনেকেই অবাক হবেন যদি দেখেন যে, শিশুশ্রেণী, প্রথম শ্রেণী বা দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া ৫-৭ বছর বয়সী শিশুরা স্কুল ব্যাগটাতে বই-খাতা-কলম না নিয়ে কেবল একটি পানির ফ্লাস্ক ও একটি ল্যাপটপ ঢুকিয়ে স্কুলে চলে গেল। বিদেশের কোন স্কুলের এমন দৃশ্য দেখলে কেউ অবাক হবেন না। কিন্তু বাংলাদেশের কোন স্কুলের ছেলেমেয়েদেরকে এমন স্মার্ট হিসেবে দেখার কথা হয়ত অনেকে ভাবতেই পারবেন না। কিন্তু এটি হতে পারে। হওয়া সম্ভব। আমি প্রত্যাশা করি এটি হবেও। এমনকি ২০১৬ সালেই যদি এমনটি ঘটে যায় তবে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। আসুন প্রথমেই প্রেক্ষিতটি নিয়ে আলোচনা করি। প্রসঙ্গটা উঠেছিল স্কুলব্যাগের ওজন নিয়ে। ২০১৪ সালের নবেম্বরে ঢাকার জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় একটি শীর্ষ সংবাদ পরিবেশন করা হয়, যাতে বলা হয় যে, আমাদের শিশুদের স্কুলব্যাগটা বড্ড ভারি। তারা জরিপ করে দেখিয়েছে যে, ১৫-২০ কেজি ওজনের শিশুকে ৬ থেকে ৮ কেজি ওজনের স্কুলব্যাগ বহন করতে হয়। তারাই ডাক্তারদের পরামর্শ নিয়ে বলেছে যে, শিশুর মোট ওজনের শতকরা দশ ভাগের বেশি ওজনের ব্যাগ তার কাঁধে দেয়া উচিত নয়। এর ফলে শিশু শারীরিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হতে পারে। তারা নানা পরামর্শ দিয়ে বলেছে যে, শিশুর বই কমিয়ে, স্কুলে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করে, খাতার পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে ব্যাগের ওজন কমানো যায়। প্রচলিত শিক্ষাদান পদ্ধতিতে এসব চিন্তা-ভাবনা নিয়ে সামনে আগানো যায়। প্রচলিত পদ্ধতির শিক্ষা, ক্লাসরুম, মূল্যায়ন ও পাঠদান পদ্ধতির জন্য হয়ত এসব সহায়ক হতে পারে। কিন্তু দুনিয়ার দিকে তাকালে আমাদেরকে অন্য কিছু ভাবতে হবে। সারা দুনিয়ায় এখন বইভিত্তিক স্কুল ব্যাগটা উধাও হচ্ছে। আমরা কি বিশ্বজুড়ে প্রবহমান এই নতুন ধারাকে এড়িয়ে যেতে পারব? কার্যত শিশুদের বইয়ের ওজন, খাতার ওজন বা পানির বোতল কোনটাই কমবে না। বরং যদি ব্যাগটার ওজন আরও বাড়ে তবে তাতে আমাদের অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ প্রতিবছরই শিশুর ঘাড়ে নতুন বই চাপানো হয় এবং সেই বইয়ের ওজন কখনও শিশুর ওজনকে অতিক্রম করে যায়। তাই ব্যাগের ওজন বাড়ার এই সমস্যার সমাধানও পাঠক্রম কমানোর আন্দোলন বা বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার পথেই হবে না। আমি স্মরণ করতে পারি, গত শতকের নব্বই দশকেও আমার সম্পাদিত নিপুণ পত্রিকায় শিশুদের ওজনদার স্কুলব্যাগের প্রসঙ্গ আলোচনা করেছিলাম। প্রস্তাব করেছিলাম-শিশুদেরকে যেন তথাকথিত বিদ্যার ওজনে পিষ্ট না করা হয়। এসব কথা সরকারের শিক্ষানীতিতে আছে। সরকারীভাবেও পাঠক্রম পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। কিন্তু দিনে দিনে বই এবং বিষয়ের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বৈষম্যটা কেমন তার একটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করলেই বোঝা যাবে। আমাদের দেশে পঞ্চম শ্রেণীতে শিশুরা পড়ে ৬টি বিষয়। সেই শিশু ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে ১৩টি বিষয়। যারা এসব বিষয় পাঠ্য করে তারা কি কখনও ভাবে যে শিশুটির মেরুদ-ের জোর কতটা? এক বছরের ব্যবধানে একটি শিশুকে কি কোনভাবে নতুন সাতটি বিষয় পড়তে দেয়া যায়? দুনিয়ার কোন শিক্ষা বিশেষজ্ঞ কি এমন পরামর্শ দিতে পারেন? দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের প-িতগণ সেই কাজটি করেছেন। শুধু কি তাই, পাঠক্রমে যে পরিমাণ বই বা পাঠক্রম আছে বেসরকারী, ইংরেজী মাধ্যম এমনকি মাদ্রাসারও বই বা পাঠক্রম তার চাইতে অনেক বেশি। শিশুশ্রেণীর একটি শিশুর যেখানে খেলায় খেলায় পড়ার কথা সেখানে তাকে বই-এর পর বই চাপিয়ে দেয়া হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে কেবল মাত্র কমিশন পাবার জন্য বাড়তি বই পাঠ্য করা হয়। শিশুর জন্য এক সঙ্গে বাংলা-ইংরেজী ও আরবী ভাষার অত্যাচার তো আছেই। শিশুকেই বিজ্ঞান-গণিত-নৈতিকতা-ধর্ম সবই শিখতে হয়। আমি মনে করি, স্কুলব্যাগের ওজন কমানোটা সমাধান নয়। বরং এখন স্কুলব্যাগটা ফেলে দেয়ার সময়। আমরা নিশ্চিত করেই জানি যে, ডেনমার্কের স্কুলে বই দিয়ে লেখাপড়া করানো হয় না। সিঙ্গাপুরের ছেলেমেয়েরা আইপ্যাড দিয়ে পড়াশোনা করে। মালয়েশিয়ার স্মার্টস্কুলগুলোতে কাগজের বই কোন প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গই নয়। যুক্তরাজ্যের স্কুলগুলো সম্পর্কে ৪ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখের দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরটির অংশবিশেষ দেখেই বলা যাবে ভারি ওজনের স্কুলব্যাগ উধাও করাটাই সমাধান। খবরটির শিরোনাম ‘যুক্তরাজ্যের ৭০ শতাংশ বিদ্যালয়ে ট্যাবলেট।’ খবরটি এ রকম : “যুক্তরাজ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ট্যাবলেট কম্পিউটার। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নতুন প্রযুক্তির সুবিধা দিতে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির সুবিধা নিতে ট্যাবলেট কম্পিউটার ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাজ্য। আর সে জন্যই বিদ্যালয়গুলোতে ট্যাবলেট কম্পিউটার দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। গবেষণার অংশ হিসেবে ৬৭১টি বিদ্যালয়ে জরিপ চালানো হয়। বিদ্যালয়গুলোতে ট্যাবলেটের এমন ব্যবহার বাড়ার ফলে প্রযুক্তির প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ যেমন বাড়ছে তেমনি বাসা এবং বিদ্যালয়ে প্রযুক্তির নানা সুবিধাও ব্যবহার করছে শিক্ষার্থীরা। বার্বি ক্লার্ক অব দ্য ফ্যামিলি, কিডস অ্যান্ড ইয়ুথ রিসার্চ গ্রুপের করা এ গবেষণায় বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ৬৮ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৬৯ শতাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ট্যাবলেট কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ৯ শতাংশ বিদ্যালয়ে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য একটি ট্যাবলেট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে বিদ্যালয়ের বাইরে বাসায় প্রায় ৭০ শতাংশ তরুণ শিক্ষার্থী ট্যাবলেট কম্পিউটার ব্যবহার করে। শিক্ষার্থীদের ট্যাবলেট ব্যবহারের এমন হার ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বেশ সহায়তা করছে বলে জানিয়েছে গবেষক দল। যে হারে এ সংখ্যা বাড়ছে তাতে ২০১৬ সালের মধ্যে ট্যাবলেট ব্যবহারের সংখ্যা বেড়ে হবে নয় লাখ। চলতি বছরে এ সংখ্যা হলো চার লাখ ৩০ হাজার। যুক্তরাজ্যের শিশুদের এই পরিসংখ্যান বস্তুত একটি ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থার প্রকৃত দিকনির্দেশনা প্রদান করছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি বলেছিলেন যে, তিনি এদেশের ছাত্র ছাত্রীদেরকে ল্যাপটপ নিয়ে স্কুলে যেতে দেখতে চান। স্বপ্ন দেখার এই মানুষটি ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করে বস্তুত দেশটির আগামী দিনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। ডিজিটাল ক্লাসরুম ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত : আমি এটিও স্মরণ করতে পারি যে, ২০১৩ সালের ২১ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল ক্লাসরুমের উদ্বোধন করেছিলেন। এরপর ডিজিটাল ক্লাসরুম নিয়ে আলোচনা কম হয়নি। কর্মকা-ও কম হয়নি। কিন্তু অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর কথা কেউ শোনে না। আমি ভীষণভাবে আনন্দিত হয়েছিলাম যখন শুনেছিলাম যে, আমাদের ক্লাসরুমগুলো মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম হচ্ছে। সেই কবে থেকে চিৎকার করছি-শিক্ষায় মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করুন। ৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর গাজীপুরে মাল্টিমিডিয়া স্কুলেরও উদ্বোধন করেছি। সেই কবে থেকে শিক্ষামূলক মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টস তৈরি করছি। সেই কবে থেকে মাল্টিমিডিয়া প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। যত দেনদরবার করা দরকার সেইসব করছি। তবুও কাউকেই বোঝাতে পারিনি যে, কাগজ-কলম-চক-ডাস্টারের দিন শেষ। যখন দেখলাম, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সরকার একলাফে ২০ হাজার ৫ শত মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম গড়ে তুলছে তখন আমার আনন্দ আর কে দেখে। কিন্তু প্রথম হোঁচট খেয়েছিলাম যখন দেখেছিলাম যে এই প্রকল্পে বাংলা লেখার কোন সফটওয়্যারই নেয়া হয়নি। নিজেকে প্রশ্ন করেছিলাম-এর মানে কি যে, এইসব ক্লাসরুমে বাংলা লেখা হবে না? ওরা সবাই কি ইংরেজী মাধ্যমে পড়বে এবং এমনকি বাংলাকে একটি ভাষা হিসেবেও পড়বে না? জবাব পেয়েছিলাম, না বাংলা লেখা হবে-তবে সেটি রোমান হরফ দিয়ে। ইংরেজী হরফ দিয়ে বাংলা লিখে সেটিকে বাংলা বানানো হবে। এরপর আরও জানলাম যে, এই প্রকল্পে যেসব প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে সেগুলোতেও রোমান হরফেই বাংলা লেখা শেখানো হয়েছে। বুঝেছিলাম যে, বরকত-সালাম-রফিক-জব্বারের যোগ্য উত্তরসূরিরাই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাংলার প্রতি সরকারের একাংশের দরদের আরও একটি নমুনা সম্প্রতি জেনেছি। সরকারের আইসিটি ডিভিশন সরকারি কর্মকর্তাদেরকে ২৫ হাজার ট্যাব দিয়েছে। একটি চীনা কোম্পানির তৈরি এই ট্যাব নিয়ে কম্পিউটার কাউন্সিলে তুলকালাম হয়েছে। এর দাম, আমদানি বিষয়ক জটিলতা আমরা সবাই জানি। এখন শুনছি সেইসব ট্যাব দিয়ে সরকারী কর্মকর্তারা বাংলা লিখবে কিনা সেটি কেউ চিন্তা করেই দেখেনি। ট্যাবগুলো বিতরণের আগে এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা এসব ট্যাবে বাংলা সফটওয়্যার ব্যবহার বিষয়ে জানতে চেয়ে বোকা হয়েছিলাম। কম্পিউটার কাউন্সিল ট্যাবে বাংলা ব্যবহার বিষয়টিকে পাত্তাই দেয়নি। একইভাবে সরকার যখন ডিজিটাল ক্লাসরুম গড়ে তুলে তখন তারস্বরে চিৎকার করে প্রকল্পটির ত্রুটিগুলোর কথা বলেছি। কেবল যে হার্ডওয়্যার কেনায় ব্যর্থতা ছিল তাই নয়, যথাযযথ কনটেন্ট তৈরি না করে এসব ক্লাসরুম গড়ে তুলে মূলত একটি নিষ্ফলা প্রকল্পই গড়ে তোলা হয়েছে। এরপর আর তেমন কোন কথা বলিনি। সেদিন হঠাৎ করে দেখি একটি পত্রিকায় সেই মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম খবর হয়েছে। তেমন খবর না পড়ে কি পারা যায়! দৈনিক আমাদের সময়-এর ১৮ অক্টোবর ২০১৪ সংখ্যায় ৩-এর পাতায় এম এইচ রবিন-এর লেখা ‘মালটিমিডিয়া ক্লাসরুম কার্যকরের বিশেষ উদ্যোগ’ শিরোনামে একটি ছোট খবর ছাপা হয়েছে। খবরটি বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তর নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে তাদের নজরে পড়ার কথা। খবরটি এ রকম, “সারাদেশে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় মালটিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষের কার্যক্রম বাস্তবায়নে বিশেষ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার। ২০ হাজার ৫শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ক্লাসরুম এবং ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম নিশ্চিত করতে মাস্টার ট্রেইনারের দায়িত্ব পালন করবে সাড়ে ৪ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আইসিটি প্রকল্পের তথ্যানুযায়ী, প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত সাড়ে ৪ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘লিডারশিপ’ হিসেবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করবে। এসব প্রতিষ্ঠানকে মহানগর, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরের বেসরকারী ৮০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৫টি কলেজ এবং ৫টি মাদ্রাসা রয়েছে। ঢাকা মহানগরের সব সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা এর আওতায় আসবে। জানা গেছে, মাল্টিমিডিয়া কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তাতে সরকারী কলেজগুলোকে আলাদা করে মনিটরিং করা হবে। এ বিষয়ে যথাযথ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রাম (এটুআই) চিঠি দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরকে। এটুআই প্রকল্পের ই-লার্নিং স্পেশালিস্ট প্রফেসর ফারুক আহমেদ স্বাক্ষরিত পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষ ও শিক্ষকদের তৈরি ডিজিটাল কনটেন্ট কার্যক্রম যথাযথভাবে চালু নেই এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পঠন-পাঠন কার্যক্রমের গুণগতমান নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সঠিক তদারকির অভাবে এ প্রকল্প নিষ্ফলা। তাই বাছাইকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাস্টার ট্রেইনারদের দিয়ে এখন ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি ও পাঠদান কার্যক্রম শতভাগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ আমাদের সময়কে জানান, আশা করছি, এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষের যথাযথ সুফল শিক্ষার্থীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে। আর এই সাড়ে ৪ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন অন্য সব প্রতিষ্ঠানের ‘লিডারশিপ’ হিসেবে কাজ করবে। নির্বাচিত এসব প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সদস্য, বিদ্যালয় প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ট্রেনিং, মডারেশনসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা হবে। তারা লব্ধ অভিজ্ঞতা পার্শ্ববর্তী অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানে প্রয়োগ করবে। সূত্র জানায়, আইসিটি প্রকল্পের অধীনে দেশের ২০ হাজার ৫শ’ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় একটি করে ডিজিটাল শ্রেণীকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে সরবরাহ করা হয়েছে একটি করে ল্যাপটপ, স্পিকার, ইন্টারনেট মডেম, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও স্ক্রিন। একজন শিক্ষককে ১২ দিনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৫ কোটি ৬৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। আর শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ প্রতিটি ডিজিটাল শ্রেণীকক্ষ স্থাপন করতে সরকারের ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। যদিও প্রায় পৌনে ৪ বছরে প্রকল্পের ৩০৫ কোটি ৬৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ২৫৬ কোটি টাকা।” (আগামী পর্বে সমাপ্য) ঢাকা, ১৬ অক্টোবর, ২০১৫ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক ॥ ই-মেইল : [email protected] ওয়েবপেজ :ww w.bijoyekushe.net,ww w.bijoydigital.com
×