
ছবি: জনকণ্ঠ
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের সামনের শাহ আবদুল করিম সড়ক সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও পৌরসভা ঘেরাও করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকালে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর সরকারি এমএম কলেজ শাখা’-এর উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। ‘লং মার্চ টু পৌরসভা’ শিরোনামে কলেজের সামনের সড়ক থেকে পৌরসভার উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এই পদযাত্রায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে অংশ নেন স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষকরা। এ সময় তারা সড়ক সংস্কারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বর্ষা মৌসুমে এমএম কলেজের সামনের রাস্তাসহ আশপাশের কোনো রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, যা রাস্তা ও ড্রেন আলাদা করতে কঠিন করে তোলে। পানি জমে থাকার কারণে বিটুমিনের আস্তরণ উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে কলেজে যাতায়াতকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ খড়কী এলাকার মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাস দিয়েছেন, কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের মুখপাত্র ফাহিম ফাত্তাহ বলেন, আমরা অনেক আশ্বাস পেয়েছি। সেসব আশ্বাস কার্যকর হয়নি। ছাত্রদের গণ-অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। নতুন বাংলাদেশেও বারবার আমরা সড়কটি সংস্কারের দাবিতে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম দেখিনি। এই রাস্তা সংস্কারের দাবি কলেজের ৩৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ও এই এলাকার বাসিন্দাদের। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছি। আমরা আর আশ্বাস চাই না, আমরা চাই যথার্থ উদ্যোগ।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পৌরসভা চত্বরে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে যশোর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলীর নেতৃত্বে পৌরসভার একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় দ্রুত সড়ক সংস্কারের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেন।
এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী জানান, এমএম কলেজের সামনের রাস্তা ও ড্রেন সংস্কারের জন্য সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। দ্রুত টেন্ডার আহ্বান করে কাজ শুরু হবে। যেহেতু সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম, তাই যে ঠিকাদার কাজটি পাবে তাকে দ্রুত কাজ শুরু ও শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শুধু শাহ আবদুল করিম সড়কই নয়, যশোর পৌরসভার অন্তত ৮০টি সড়ক বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এসব সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় গর্ত সৃষ্টি হয়, শুষ্ক মৌসুমে বিটুমিনের আস্তরণ উঠে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন পৌরবাসী।
এসব সড়ক সংস্কারের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ মিছিল, গণস্বাক্ষরসংবলিত স্মারকলিপিও প্রদান করেছেন বিভিন্ন সময়ে দায়িত্বে থাকা মেয়র ও প্রশাসকদের কাছে। বাসিন্দারা দ্রুত সড়কগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
শহীদ