
বরিশালের বাকেরগঞ্জে ছয় সন্তানের জননীর মৃত্যুর পর দাফন করা হয়েছে প্রতিবেশীর বাড়িতে। মায়ের লাশ দেখতে পর্যন্ত আসেননি তার ছোট ছেলে, মাদ্রাসা শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম ফিরোজ আলম। গত শুক্রবার, ১৩ জুন এই হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্ম হয় বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে।
মৃত রাবেয়া বেগম উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়নের দক্ষিণ সাদিস গ্রামের আব্দুল মান্নান হাওলাদারের স্ত্রী। নদীভাঙনে আব্দুল মান্নানের কলসকাঠীর বাড়িটি বিলীন হয়ে গেলে তিনি রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের রুনশি এলাকায় জমি কিনে একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। সেই বাড়িতেই পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন তারা।
আব্দুল মান্নানের বড় কন্যা রিনা বেগম জানান, “আমার ছোট ভাই ফিরোজ আলম দুমকি উপজেলার চর গরবদী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও এক মসজিদের ইমাম। প্রায় ২০ বছর আগে সে আমার সহজ-সরল বাবার কাছ থেকে বাড়িসহ সমস্ত সম্পত্তির দলিল লিখে নেয়। এরপর সে আমাদের—মা ও বোনদের—বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমরা বাকিরা ভূমিহীন হয়ে যাই। কেউ আশ্রয়ন প্রকল্পে বাস করছে, কেউ কোথাও। কারও নিজের কোনো জমি-জায়গা নেই। এই নিয়ে ফিরোজ আলমের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “মা দীর্ঘদিন আমার কাছেই থাকতেন এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। ১৩ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর ছোট ভাই ফিরোজ মায়ের লাশ দেখতে আসেনি। আমাদের কারও জমি না থাকায় মাকে দাফনের জায়গাও ছিল না। একদিন কেটে যাওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তখন সহানুভূতিশীল প্রতিবেশী হায়দার ফকির মানবিক দিক বিবেচনায় তার নিজের জমিতে মায়ের দাফনের ব্যবস্থা করে দেন।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসা শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম ফিরোজ আলম জনকণ্ঠকে বলেন, “আমার ভাইবোনদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলছে। মা তাদের কাছেই থাকতেন। তাই ভয়ে মায়ের লাশ দেখতে যাইনি।”
সজিব