
ছবি: সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরাইল সংঘাত নতুন মোড় নিয়েছে। ইসরাইল দাবি করেছে, তারা ইরানের রাজধানী তেহরানের আকাশসীমা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। সর্বশেষ হামলায় ইরানের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ সারফেস-টু-সারফেস ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ধ্বংস করে দিয়েছে বলেও জানিয়েছে তেলআবিব।
রবিবার রাত থেকে ইসরাইল ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এতে অন্তত ১২০টি ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করা হয়। ইসরাইল আরও জানিয়েছে, তারা বেশ কয়েকটি অস্ত্রাগার এবং মিসাইল ঘাঁটিও গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ইসরাইলের ভাষ্যমতে, এই লঞ্চারগুলো থেকেই রাতেই বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইরান।
অন্যদিকে, ইরানও পাল্টা আঘাত হানতে একটুও দেরি করেনি। সংঘাত শুরুর পর টানা তৃতীয় রাতের মতো ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এই হামলাকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকর প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। লক্ষ্যবস্তু ছিল রাজধানী তেলআবিব ও গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী হাইফা। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইসরাইলের বৃহত্তম তেল শোধনাগার। হামলায় গ্যাস পাইপলাইন ও উৎপাদন অবকাঠামোতেও বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।
হামলায় নতুন করে আরও আটজন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। ফলে ইসরাইলজুড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। অন্যদিকে, ইসরাইলি হামলায় ইরানে ঠিক কতজন নিহত হয়েছে, সে সংখ্যা এখনও নিশ্চিত নয়, তবে প্রাণহানির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইরান এই পাল্টা হামলার নাম দিয়েছে "অপারেশন ট্রু প্রমিস থ্রি"। দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইরান কখনোই নীরব থাকবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলেও নিজেদের আত্মরক্ষায় প্রয়োজনীয় সবকিছু করবে তেহরান। সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, ইরান একটি ন্যায়সঙ্গত এবং শক্তিশালী জবাব দিয়েছে এবং ইসরাইল শিগগিরই এই হামলার জন্য অনুতপ্ত হবে।
এদিকে, ইসরাইলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে তেহরানজুড়ে। শহর ছাড়তে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। রাস্তায় রাস্তায় দেখা গেছে গাড়ির দীর্ঘ সারি। অস্থির পরিস্থিতিতে রাজধানী ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে বাসিন্দারা।
উল্লেখ্য, ইরান-ইসরাইল উত্তেজনা নতুন নয়, তবে সাম্প্রতিক এই পাল্টাপাল্টি হামলায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়েছে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ ও পরবর্তী সামরিক পদক্ষেপের ওপর।
ছামিয়া