
ঢাকাগামী লঞ্চে ডেকের বিছানা (সিট) বাণিজ্য করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপি নেতা খালেক মাঝি। তিনি বরিশালের হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
অপরদিকে, ওই বিএনপি নেতা ও তাঁর সহযোগীদের হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন নারী-পুরুষ লঞ্চযাত্রী আহত হয়েছেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ যাত্রীদের রোষানলে পড়ে খালেক মাঝি ও তাঁর সহযোগীরা দ্রুত সটকে পড়েন।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১৬ জুন) সকালে হরিনাথপুর ইউনিয়নের শৌলা লঞ্চঘাটে। নিজের ওপর হামলার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন খালেক মাঝি।
লঞ্চে থাকা যাত্রীরা স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে অভিযোগ করে জানান, সোমবার সকাল ৮টার দিকে মুলাদীর মৃধারহাট থেকে ‘এমভি জানডা’ নামের একটি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সকাল ৯টার দিকে লঞ্চটি হিজলার হরিনাথপুরের শৌলা লঞ্চঘাটে নোঙর করলে, সেখান থেকে ওঠা যাত্রীরা লঞ্চের ডেকে বসার চেষ্টা করেন।
এ সময় আগে থেকেই লঞ্চের ডেকে বিছানো চাঁদর থেকে ১,০০০ টাকা করে আদায় করছিলেন হরিনাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেক মাঝি ও তাঁর সহযোগীরা।
সূত্রে আরও জানা গেছে, বেশ কয়েকজন যাত্রী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে খালেক মাঝি ও তাঁর সহযোগীরা যাত্রীদের মারধর শুরু করেন। এতে অন্তত ১৫ জন নারী-পুরুষ যাত্রী আহত হন। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে অন্যান্য যাত্রীরা খালেক মাঝি ও তাঁর সহযোগীদের ওপর পাল্টা হামলা চালান। একপর্যায়ে জনরোষ এড়াতে তাঁরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
লঞ্চের যাত্রী মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, খালেক মাঝি ও তাঁর লোকজন দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে লঞ্চের ডেকে চাঁদর বিছিয়ে সিট বাণিজ্য করে আসছেন। দাবিকৃত টাকা দিতে না চাওয়ায় যাত্রীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় এক যাত্রীর কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক লঞ্চ স্টাফ জানান, শৌলা লঞ্চঘাট থেকে যাত্রীদের উঠতে হলে খালেক মাঝির চাঁদার কবলে পড়তে হয়। তাঁকে টাকা না দিলে কেউ লঞ্চের ডেকে বসতে পারেন না। তাঁরা জানান, খালেক মাঝির দাপটে লঞ্চ স্টাফরাও প্রতিবাদ করার সাহস পান না।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত খালেক মাঝি বলেন, “লঞ্চের মধ্যে গোলযোগ দেখে তা থামাতে গিয়েছিলাম। তখন যাত্রীরা আমার ওপর হামলা চালায়। চাঁদাবাজির অভিযোগ সত্য নয়।”
সজিব