ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জনকণ্ঠে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সহায়তা: মহিরুলের ঘরে আর পড়বে না বৃষ্টির পানি

আপেল মাহমুদ, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ২২:২৪, ১১ জুন ২০২৫; আপডেট: ২২:২৭, ১১ জুন ২০২৫

জনকণ্ঠে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সহায়তা: মহিরুলের ঘরে আর পড়বে না বৃষ্টির পানি

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঘণিবৃষ্টপুর গ্রামের মহিরুল ইসলামের জীবনসংগ্রাম ছুঁয়ে গেছে অনেকের হৃদয়। এক সময় ট্রলি চালিয়ে সংসার চালানো এই মধ্যবয়স্ক মানুষটি আজ দুর্বল শরীর আর সীমিত আয়ের মধ্যেই ছয় সদস্যের পরিবার চালাচ্ছেন।

ঈদের সময় যেখানে চারদিকে উৎসবের আমেজ, নতুন জামার আনন্দ, সেখানে মহিরুলের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা ছিল—ঘরের ছাউনি ফুঁড়ে বৃষ্টির পানি পড়া। সামান্য বৃষ্টিতেই ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ত, ছেলেমেয়েরা কষ্ট পেত। স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে তার দিন কাটতো অনিশ্চয়তার মধ্যে—চিন্তা ছিল ঘরের ছাউনি ঠিক করার মতো অর্থ জোগাড় করা।

তবে জনকণ্ঠে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বদলে যায় পরিস্থিতি। এক সহৃদয়বান ব্যক্তি মহিরুলের ঘরের ছাউনি ঠিক করতে প্রয়োজনীয় টিন কিনে দেন।

“আমি ভাবতেও পারিনি কেউ আমার মতো গরিবের কথা শুনবে,” বলেন আবেগভরা কণ্ঠে মহিরুল। “আল্লাহ যিনি আমার জন্য টিন পাঠিয়েছেন, তার জন্য আমি দোয়া করি। এখন অন্তত মাথার ওপর একটা নিরাপদ ছাউনি থাকবে।”

মহিরুলের স্ত্রী জানান, “গত বছর ডিম বিক্রি করে সামান্য কিছু টিন কিনেছিলাম, কিন্তু তা দিয়ে পুরো ঘর ঢেকে রাখা সম্ভব হয়নি। এবার সেই চিন্তাটা অনেকটাই কমে গেছে। ইতোমধ্যে নতুন ছাউনির কাজ শুরু হয়েছে।”

স্থানীয় শিক্ষক আমিরুল ইসলাম বলেন, “সংবাদের মাধ্যমে কারও কষ্ট প্রকাশ পেলে অনেকেই অনুপ্রাণিত হন। মহিরুলের জীবনে এই পরিবর্তন তারই প্রমাণ।”

রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক বাবু বলেন, “এটি সমাজের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। আশা করি আরও অনেক সামর্থ্যবান ব্যক্তি এমনভাবে এগিয়ে আসবেন।”

মহিরুল এখন অপেক্ষায় আছেন—মুরগির ছানাগুলো বড় হবে, বাচ্চারা স্বস্তিতে ঘুমাবে, আর ঈদের দিনে আর বৃষ্টির ভয় থাকবে না।

যিনি টিন দিয়েছেন, তিনি পরিচয় গোপন রাখতে চেয়েছেন। তবে তাঁর দেওয়া সহায়তা যে মহিরুলের জীবনে আশার আলো এনে দিয়েছে, তা দৃশ্যমান।

নুসরাত

×