‘কিছু সাংবাদিকের কারণে গণমাধ্যম আজ প্রশ্নবিদ্ধ’

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, "সত্য ও মিথ্যার সংমিশ্রণে সাংবাদিকতা হয় না। সাংবাদিকতা আংশিক নয়, এটি পুরোপুরি সত্যের ওপর ভিত্তি করে হতে হবে। বিগত সরকারের আমলে আমাদের কিছু সাংবাদিক সত্য তুলে ধরতে পারেনি বলেই আজ তারা জাতির কাছে প্রশ্নের মুখোমুখি। তারা জনগণের আস্থা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।"

সোমবার (৯ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভান্ডারে নিজ বাড়িতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী এবং সুধীজনের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, "বিএনপি ক্ষমতায় এলে 'সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট'-এর মতো সাংবাদিক নির্যাতন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সব আইন এবং মামলা বাতিল করা হবে। যদি কেউ এসব চালু রাখার চেষ্টা করে, তবে আপনাদের সবাইকে নিয়ে আমরা তা প্রতিহত করব।"

কেন্দ্রীয় বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী বলেন, "শত শত নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন, গুম হয়েছেন। বিএনপির রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আজ ড. ইউনুস সরকার ক্ষমতায় এসেছে। তিন, পাঁচ বা নয় দিনের আন্দোলনে হাসিনার পতন হয়নি। তাদের অবদান আমরা অস্বীকার করছি না। তারা চূড়ান্ত পর্যায়ে আন্দোলনকে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু এ ক্ষেত্রটা তৈরি করেছিল বিএনপি—রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে, গুম হয়ে, খুন হয়ে, অঙ্গ হারিয়ে।"

তিনি বলেন, "বর্তমান সরকার বিপ্লবী সরকার হতে পারত, যদি তারা শপথ না নিত এবং নিজেদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে ঘোষণা করত। কিন্তু তারা যখন শপথ নিয়েছে, তখন তারা সংবিধানের আওতায় এসেছে। সংবিধানের বাইরে গিয়ে তাদের কোনো কাজ করার সুযোগ নেই। এখন তাদের দায়িত্ব শুধুমাত্র রুটিন কাজ সম্পন্ন করা।"

কাদের গনি চৌধুরী আরও বলেন, "আমরা এই সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছি। বিশেষ করে ইউনুস সরকারকে বলব—আমাদের আপনার প্রতি আস্থা আছে। আপনি শুধু বাংলাদেশের না, বৈশ্বিকভাবে একজন সম্মানিত নাগরিক। আজ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে ভোটাধিকার হরণের কারণে। এখন আপনার দায়িত্ব হলো জনগণের সেই ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠনের পথ উন্মুক্ত করুন।"

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ইলেকশন কমিশন ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, তারা যেকোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তাহলে সরকার সমস্যা কোথায় দেখছে? যদি আপনারা এপ্রিলেও নির্বাচন দিতে পারতেন, তবে ডিসেম্বরেই বা কেন নয়? অধিকাংশ রাজনৈতিক দলও ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়। তাই সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান—জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিন।"

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, "আপনারা যেন জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি অসম্মান না করেন। একটি নির্বাচিত সরকারই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে এবং তারাই সংস্কার করবে। এখন পর্যন্ত আপনারা যা করেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ। তবে নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র পূর্ণতা পাবে না।"