
এক টাকা! শুনলেই যেন বিরক্তি প্রকাশ করেন অনেকেই। বাজার শেষে এক টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য দাড়ালেও যেন নিজেরই আত্মসম্মানে বাধা দেয়। তবে আগেকার দিনে এক টাকার চকলেট এর জন্যই কিন্তু বাচ্চারা তাদের পরিবারের কাছে বায়না করতো। কিন্তু এখন এই উর্ধ্বগতির বাজারে এক টাকার যেন কোনো মূল্য নেই। বর্তমানে নিত্যপণ্যের দামের উর্ধ্বগতির এই বাজারে একশত টাকা কিংবা এক হাজার টাকা দিয়েও কিছুই জোটে না।
এখন যদি বলি, এই সময়েই এক টাকায় মিলছে চিকিৎসা সেবা। তাও আবার রোগী দেখছেন এমবিবিএস পাস করা চিকিৎসক। বিষয়টি নিছক কল্পনীয় ও আশ্চর্যজনক মনে হলেও এটি বর্তমানে বাস্তবে পরিণত করেছেন রাজশাহীর বেসরকারি মেডিকেল থেকে এমবিবিএস পাস করা ডা. সুমাইয়া ।
বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে এ ধরনেরর ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়েছেন রাজশাহীর মেয়ে সুমাইয়া। রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকায় একটি ফার্মেসিতে প্রাথমিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। সেখানেই প্রতি শনিবার - বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা - দুপুর ১টা পর্যন্ত রোগী দেখছেন তিনি।
২০১৫ সালে রাজশাহীর নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন সুমাইয়া। বড় চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকেন মেডিকেল ভর্তির। ভাগ্যের নির্মমতায় সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ না পেলেও বুনতে থাকেন স্বপ্নের জাল। এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে। সম্প্রতি এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্ন শেষ করেছেন তিনি। প্রাইভেট একটি ক্লিনিকে চাকরির পাশাপাশি বিসিএস প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর এর পাশাপাশি করছেন জনসেবা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেল বলেন, মূলত আমার বাবার ইচ্ছে ছিল যে আমি যেন জনসেবামূলক কিছু একটা করি। ফ্রিতে মানুষের ট্রিটমেন্ট দেওয়া বা এরকম কিছু করাতে চেয়েছিলেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় এই জনসেবামূলক কাজটি আমি শুরু করেছি। ইচ্ছে আছে, যতদিন আল্লাহর রহমতে বেঁচে থাকি ততদিন এই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার।
চিকিৎসা নিতে আসা আসমাউল হুসনা জানান, আমরা দেখি কতজন এমবিবিএস পাস করে ব্যবসার মতো টাকা ইনকামে নেমে যায়, সে হিসেবে ওনার উদ্যোগটা খুবই ভাল। কিছু সমস্যা ছিল আমার, উনি শুনে প্রেসক্রিপশনও দিলেন। মাত্র এক টাকার ভিজিটেই ডাক্তারি পরামর্শ পেয়েছি এটি অবিশ্বাস্য।
মুমু