নীলফামারী এলাকার বেকার নারীদের স্বাবলম্বী হিসাবে গড়ে তোলার জন্য ডোর-টু -ডোর প্রকল্প চালু করেছে নীলফামারীর শিল্প প্রতিষ্ঠান নীলসাগর গ্রুপ। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ওই অনুষ্ঠান ঘিরে দিন ব্যাপী ছিল নীলফামারী জেলা শহরের শহীদ মিনার চত্বরে নানা আয়োজন। বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছিল অনুষ্ঠানস্থল। বিশাল স্টেজ এবং প্যান্ডেলর পাশেই স্থাপন করা হয়েছিল নতুন পণ্যের প্রদর্শনী স্টল। সেখানে আগতরা এসব স্টল থেকে কিনেছেন নীলফামারীর স্থানীয় নীলসাগর কনজ্যুমার প্রোডাক্টের নব রূপে নতুন সাজে উৎপাদিত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য।
নীলসাগর কনজ্যুমার প্রোডাক্টের ডোর টু ডোর প্রকল্পের ইনচার্জ আওরঙ্গজেব সুজন বলেন,‘নতুন পণ্য, নতুন রূপে বাজারজাত করণে আমরা ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহন করেছি। মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে বিভিন্ন নিত্য পণ্য উৎপাদন করে ডোর টু ডোর প্রকল্পের মাধ্যমে সামান্য লাভে ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছানোর কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে করে অর্থ সাশ্রয় হবে ক্রেতাদের। পাশপাশি এ কর্মসূচির মাধ্যমে জেলার দুই শতাধিক শিক্ষিত বেকার নারী পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে’। এ জন্য আমরা এ সকল উদ্যমি নারী পুরুষদের স্বাবলম্বী হবার পথ খুলে দিচ্ছে। কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান ও নীলসাগর গ্রুপে চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আহসান হাবীব লেলিন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন,‘অনেকেরে অনেক অর্থ থাকে কিন্তু এভাবে নিজ এলাকায় এসে ইনভেস্ট করেন না। উনি (নীলসাগর গ্রুপের চেয়ারম্যান) নিজ এলাকায় বিনিয়োগ করার সাহস দেখিয়েছেন। নীলফামারী অত্যন্ত প্রত্যন্ত এলাকা। আপনারা সৌভাগ্যবান যে উনি এই জেলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন। উনি এই জেলাকে ভালোবাসেন, এই জেলার অধিবাসীকে ভালোবাসেন এবং এই জেলার উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন। আমি যতটুকু জেনেছি ওনার চিন্তা চেতনা ভালো। ওনাদেরে প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করতে পারেন। তাতে মানসন্মত প্রোডাক্ট আসবে এই এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানও হবে’। ডোর টু ডোর প্রকল্পের মাধ্যমে এ এলাকার বেকার যুবক ও যুবারা কর্মসংস্থানের পথ পাচ্ছে। আগামীতে হয়তো এরপরিধি আরও বাড়বে।
নীলসাগর গ্রপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আহসান হাবীব লেলিনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা দেন সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ বেলায়য়েত হোসেন, বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাবেক সচিব মো. আব্দুল বাকী, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার শাহ মোমিনুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
সাবেক সচিব ও বাংলাদেশ চায়না পওয়ার কম্পনী লিমিডেডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বাকী বলেন, ‘নীলসাগর গ্রুপের চেয়্যারম্যান অনেকগুলো কোম্পনী করেছেন। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। নীলফামারী একটি প্রান্তিক জেলা, বৃহত্তর রংপুরের একটি অবহেলিত অঞ্চল ছিল এক সময়ে। আজকে ওনার মত মানুষ এখানে বিনিয়োগ করেছেন, উনি ইচ্ছা করলে ঢাকা শহরের ব্যবসা-বানিজ্য করতে পারতেন। আরো নিশ্চিন্তে ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু উনি যে মাটি থেকে উঠে এসেছেন ঢাকা শহরে গেলেও সে মাটিকে ভুলে যাননি। আমি বিশ্বাস করি এভাবে যদি প্রত্যেকটি অঞ্চল থেকে লেলিনের মতো লোক এগিয়ে আসেন তাহলে এ দেশ বদলে যাবে খুব দ্রুত’।
নীলসারগর গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আহসান হাবীব লেলিন বলেন, ব্যবসা এবং রাজনীতি প্যারালাল চলে। এলাকার বেকার নারী পুরুষদের কর্মসংস্থানের একটা পথ তৈরী করে দিলাম ডোর টু ডোর। আসুন ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ আমরা হাতে হাত ধরে সংকীর্ণতার উর্দ্ধে উঠে নীলফামারীকে একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। দল-মত নির্বিশেষে যে নতুন বাংলাদেশ আমাদের সন্তানরা তাদের রক্ত দিয়ে আমাদেরকে দিয়েছে সেই অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ হতে দিয়েন না। এটা শেষ সুযোগ, আর এই সুযোগ পঞ্চাশ ও একশ বছরে আমরা দেখে যেতে পারবো না। এই সুযোগকে যদি আমরা কাজে লাগাতে না পারি নিজের বিবেকের কাছে আমরা হেরে যাবো। আমরা হেরে যাবো আমাদের সন্তানদের কাছে এলাকার বেকার শিক্ষিত যুবাদের কাছে।
দয়া করে ভালোর সাথে থাকুন, আলোর সাথে থাকুন, পরিবর্তনের সাথে থাকুন। আসুন বদলে দেই, বদলে যাই, কাজ করি, দেশ গড়ি’।তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন,‘এই প্রতিষ্ঠানগুলো (নীলসাগর গ্রুপ) মালিক আহসান হাবীব লেলিন নয়, এগুলো আপনাদের টাকার প্রজেক্ট, এগুলো আপনাদের টাকা। আপনাদের সহযোগিতা পেলে আগামী এক বছরে আরো এক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করবো’।
আঁখি
