ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অত্যাচার থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৯:১৯, ২৯ মে ২০২৫

অত্যাচার থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইমামের অত্যাচার থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন একটি মোতাওয়াল্লি পরিবার। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে ওই পরিবারের সদস্যরা। 

অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ওই পরিবারের মেয়ে আফসানা আহমেদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমার মরহুম বাবা ২০১২ সালে স্ট্রোক করে মারা যান। তিনি কাশিপুর বাজারে নিজ অর্থে ওয়াজেদিয়া জামে মসজিদ নামক একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন। মসজিদটির ইমাম এবং সভাপতি আমার বাবার সময়কার। মসজিদটির প্রথম এবং আমৃত্যু মোতাওয়াল্লি ছিলেন আমার বাবা।”

তিনি আরও বলেন, “মসজিদের ইমাম জাকারিয়া ইসলাম ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক সংলগ্ন ওই এলাকায় একখানা জমি তার চাচা রফিকুল ইসলাম শাহিনের কাছ থেকে ক্রয় করেন। যার মূল্য কয়েক কোটি টাকা। এর সামনে ছিল তাদের জমি। পরবর্তীতে তার (ইমাম) নজর পরে তাদের রাস্তা সংলগ্ন ভূমিতে। সে জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় উক্ত মসজিদ কমিটির সভাপতি সালাম মিয়াসহ তৎকালীন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির যোগাযোগে তার চাচা, ফুফুদের দ্বারা একটি জাল রোয়েদাদ সৃষ্টি করেন।” এমনকি তার মা ভাই বোনের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জাল রোয়েদাদ সৃষ্টির অপচেষ্টা করেন। এ ঘটনায় সে মামলা দায়ের করে রায় পান। পরবর্তীতে তার মাকে, খুন ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয় বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, “২০২৩ সালে মসজিদের দ্বিতীয় ইমাম নূরে আলম তার (আফসানা) পরিবারের বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিলে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। দ্বিতীয় ইমাম গত ২৬ জানুয়ারি তার ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় মামলা নং-সিআর মো: ৪১/২৫ (বিমানবন্দর) আদালতে চলমান রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “মসজিদের কাছে তাদের একটি স্টল রয়েছে। ওই স্টলটি দখলের জন্য মসজিদ কমিটি বিভিন্ন সময় চেষ্টা করে আসছে। গত ২৭ মে রাতে ইট, বালু, সিমেন্ট এনে অবৈধভাবে ইমারত নির্মাণ করে তাদের স্টলটিকে মসজিদের সাথে একত্রিত করার জন্য গাঁথুনি দেওয়া শুরু করেন।”

আফসানা বলেন, “এর প্রতিবাদ করায় একজন ব্যক্তি যিনি নিজেকে জামায়াতের সেক্রেটারি দাবি করে তার ওপর চড়াও হন এবং দ্বিতীয় ইমাম নূরে আলম ওয়াজেদিয়া জামে মসজিদের সভাপতি সিরাজুল ইসলামসহ ৫/৭ জনের নেতৃত্বে মব সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মাস্তান প্রকৃতির লোক জড়ো করান। তারা সকলে মিলে তাকে (আফসানা) এবং তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ডিম ছুঁড়ে মারেন। এমনকি তাদের আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে অবরুদ্ধ করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হলেও পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে মিথ্যে প্রমাণিত হওয়া তাদেরকে ছেড়ে দেয়।”

আফসানা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি। এমনকি নিজ বাসায় পর্যন্ত যেতে পারছি না। আমাদের ওপর মব সৃষ্টি করে যে নির্যাতন, খুনের চেষ্টা করা হয় তার বিরুদ্ধে সরকার ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করছি।” 

সংবাদ সম্মেলনে আফসানার অভিযোগের ব্যাপারে ইমাম নূরে আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে পুরোপুরি নির্দোষ দাবি করে বলেন, “গত ২৭ মে রাতে এশার নামাজ চলাকালীন সময় দুই নারী এসে মসজিদ ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। এসময় মুসল্লিরা তাদের ওপর চড়াও হয়েছে। পরবর্তীতে পুলিশ এসে তাদের নিয়ে গেছে।”

মিরাজ খান

×