ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বেলাবর বারৈচা বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়

মোঃ আশিকুর রহমান সৈকত, বেলাব, নরসিংদী

প্রকাশিত: ১৮:৫৪, ২৮ মে ২০২৫

বেলাবর বারৈচা বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার বারৈচা বাসস্ট্যান্ড। পাইকারি সবজির হাট হিসেবে বারৈচা বাসস্ট্যান্ডের সুনাম রয়েছে কয়েক জেলা জুড়ে। মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এই পাইকারি সবজির বাজারের খুব কাছেই মহাসড়কে রয়েছে ময়লার স্তূপ। আর্বজনার উৎকট গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সড়কে চলাচলকারী সবাই।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী যানবাহন ও পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে। এই বাজারে সপ্তাহে তিনদিন—সোমবার, বুধবার ও শুক্রবার—বসে পাইকারি সবজির হাট। বাজারে ভিড় জমান হাজারো ক্রেতা-বিক্রেতা। এছাড়াও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বারৈচা, শিবপুর ও নারায়ণপুর বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা ও পথচারীরা এই সড়ক ব্যবহার করে চলাচল করেন। কিন্তু বারৈচা বাজারের কাছে এলেই তাদের দুর্গন্ধের সম্মুখীন হতে হয়। বারৈচা বাজারের ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন বাজার পরিষ্কার করে ময়লা-আবর্জনা সড়কের পাশে ফেলেন। এসব পচে গিয়ে সৃষ্টি হয় প্রকট দুর্গন্ধ। বারৈচা বাজারের কাছে এলেই দু’হাতে নাক-মুখ চেপে ধরতে হয় পথচারীদের।

স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন পূর্বে এখানে বাঁশের খুঁটিতে টানানো ছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি সাইনবোর্ড। সেখানে লেখা ছিল—‘ময়লা ফেলা নিষেধ, যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। ময়লা পরিবেশ দূষণ করে।’ অথচ ময়লা ফেলা নিষেধ এমন সাইনবোর্ডের নিচেই তখনও ছিল ময়লার ভাগাড়। তবে বর্তমানে এখানে কোনো সাইনবোর্ড নেই।

গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, বারৈচা বাসস্ট্যান্ডের একটু সামনেই মহাসড়কের দুই পাশে ময়লার স্তূপ। সড়কঘেঁষে অন্তত আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন, বস্তা, হাসপাতালের বর্জ্য, কার্টন, পচে যাওয়া সবজি, উচ্ছিষ্ট খাবার, কর্কশিট ও কাগজ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে স্তূপাকারে পড়ে রয়েছে। এসব আবর্জনা থেকে বৃষ্টির সময় নোংরা পানি গড়িয়ে পড়ছে পাশের জলাশয় ও বিভিন্ন ফসলি জমিতে। পরিবেশ বিনষ্টের পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল।

কলেজ শিক্ষার্থী ও পথচারী আমির হোসেন বলেন, “বারৈচা বাসস্ট্যান্ড পার হয়ে একটু সামনে এগোতেই ময়লা-আবর্জনার গন্ধে থাকা যায় না। আমাদের দাবি, অতিদ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।” মহাসড়কের পাশ দিয়ে নাক চেপে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক স্কুলছাত্রী। তার ভাষ্য, “প্রতিদিনই দুর্গন্ধ সহ্য করে এই সড়ক দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হয়। সহপাঠীদের অনেকেই নাক চেপে ধরে এই সড়ক দিয়ে স্কুলে যায়। মহাসড়ক থেকে দ্রুত ময়লা অপসারণের দাবি জানাই।”

মোবারক হোসেন নামে এক পথচারী বলেন, “জনবহুল বাজার ও মহাসড়কের পাশে আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নোংরা করে রাখা হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। একটু বৃষ্টি হলেই এসব বর্জ্য সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। এসব আবর্জনা থেকে শুধু দুর্গন্ধই ছড়াচ্ছে না, মশা-মাছি ও বিভিন্ন জীবাণু জন্ম নিচ্ছে।”

বারৈচা বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ শফিকুল ইসলাম সম্রাট জানান, “ইতোমধ্যে এই বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। অতিদ্রুত মহাসড়ক থেকে দূরে নির্দিষ্ট একটি স্থানে ময়লা ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখানে যেন কেউ ময়লা না ফেলে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

নরসিংদী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রেজা-ই রাব্বি জানান, “মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলা নিষেধ। পূর্বে ময়লা ফেলা নিষেধ লেখা একটি সাইনবোর্ড ছিল, সেটিও মানুষ ভেঙে ফেলেছে। এ ব্যাপারে ওই এলাকার জনগণকে সচেতন করা হয়েছে।”

আসিফ

×