লাশ বহনকারি অ্যাম্বুলেন্স
বাগেরহাটের ফকিরহাটে প্রচন্ড দাবদাহে ‘হিট স্ট্রোকে’ এক গাছির মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে গাছ কাটতে উঠে হিট স্ট্রোকে তিনি গাছ থেকে পড়ে মারা যান। হিট স্ট্রোকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। ওই গাছির নাম আমজাদ হোসেন শেখ (৫৭)। তিনি সদর উপজেলার ভট্টপ্রতাপ গ্রামের আজহার আলী শেখের ছেলে।
আমজাদ হোসেনের ছেলে কেরামত আলী জানান, তাঁর বাবা আমজাদ পেশায় গাছি। তালগাছের মোচা কেটে রস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতিদিনের মতো সকাল ৯টার দিকে তিনি তালগাছের মোচা কাটার জন্য বের হন। ৯ থেকে ১০টা গাছ কাটার পর তিনি বাড়ির পাশের একটি উঁচু তালগাছে ওঠেন। গাছে ওঠার কিছুক্ষণ পর তিনি রোদের তেজে মাথা ঘুরে পড়ে যান। তখন তাকে উদ্ধার করে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমজাদ হোসেন শেখ নামে এক ব্যক্তিকে পরিবারের লোকজন অচেতন অবস্থায় নিয়ে আসেন। পরে ইসিজি করে নিশ্চিত হয়েছি তিনি মৃত। প্রচন্ড গরমে পানিশূন্যতায় সম্ভবত হিট স্ট্রোক করে তিনি গাছ থেকে পড়ে গিয়ে থাকতে পারেন। হাসপাতালে তাঁকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে।’
এদিকে, তীব্র দাবদাহে এ জেলার সর্বস্তরের মানুষ হাঁসফাঁস করছে। বাগেরহাটে আবহাওয়া দপ্তরের বার্তা অনুযায়ী ৪১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পারদ উঠেছে। যা ক্রমশ বাড়ছে। দাবদাহে গলে যাচ্ছে এ জেলার বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কের পিচ (বিটুমিন)।
শত চেষ্টা করেও প্রখর তাপের কারনে চিংড়ি ঘেরের মাছ রক্ষা করতে পারছেনা চাষিরা। রবিবারও অনেক গেরের মাছ মরে যাওয়ার খরব পাওয়া গেছে। পোট্রি ফার্মের মুরগী মরছে দেদার। জয়গাছি গ্রামের আসীম দাস বলেন, গত ৩ দিনে তার ফামের প্রায় আড়াই শত মুরগী অতিরিক্ত গরমের কারনে মরে গেছে।
কামরুজ্জামান মুকুল নামে এক ব্যক্তি বলেন, এমন গরম জীবনে দেখিনি, সব যেন পুড়ে যাচ্ছে। ঘরের মধ্যেও স্বস্তিতে থাকতে পারতিছিনা। রাতে ঘুমাতে পারছিনা, গরমে দম যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অত্যাধিক কষ্ট হচ্ছে। ’
স্কুল শিক্ষিকা লায়লা বেগম ও সুনয়না রায় সোমা বলেন, সকাল-দুপুর-রাত সমানে গরম পড়ছে। রান্নাবান্না করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। ঘরে থাকার পরেও শরীর থেকে দরদর করে ঘাম বের হচ্ছে, পরণের কাপড়-চোপড় সব সময় ভিজে থাকছে। দিনেরমধ্যে ২/৩ বার গোসল করেও লাভ হচ্ছেনা, শরীর আরও খারাপ লাগছে।’
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা: জালাল উদ্দিন ও ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক অসীম কুমার সমদ্দার জনকণ্ঠকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়াসহ পেটেরপীড়া এবং স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েছে। ’অকারণে ঘর থেকে বাইরে না যাওয়া এবং কোমল পানীয় ও ফলমূল বেশী খাওয়াসহ স্বাস্থ্য সচেতনতায় মাংকিং করা হচ্ছে বলে তাঁরা উল্লেখ করেন।
শহিদ