ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

প্রতিবছর মেরামতে গচ্চা যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা

সংযোগ সড়কেই ধুঁকছে সেতু

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী

প্রকাশিত: ২২:২০, ১৮ জুলাই ২০২৩

সংযোগ সড়কেই ধুঁকছে সেতু

তানোর উপজেলায় শিবনদের ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক মেরামতের এক মাসের মধ্যে ফের ধস

রাজশাহীর তানোর উপজেলার শিব নদ। এই নদের এক পাশে তানোরের গোল্লাপাড়া বাজার, অন্যপাশে মোহনপুর উপজেলার বাজার। দুই এলাকার মানুষ যাতে সহজেই বাজারে যাতায়াত করতে পারেন, সে কারণে ১২ বছর আগে এ নদের ওপর নির্মাণ করা কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু। কিন্তু সেই সেতুর সংযোগ সড়ক মেরামত কাজ চলছে সেই থেকেই। 
প্রতিবছরই নদের পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় সড়কের মেরামত কাজও। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছরই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এই কাজ করছে। এতে অর্থ অপচয় হচ্ছে সরকারের।
এবারও সেতু রক্ষায় বাঁধ নির্মাণে তিন কোটি এবং সংযোগ সড়ক নির্মাণে ২৫ লাখ টাকার প্রকল্প নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। চলতি বছরের ৩০ জুন প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নির্মাণকাজ শেষের এক মাস না যেতেই আবারও ধসে পড়েছে সেতু রক্ষা বাঁধের ব্লক। তিন কোটি ২৫ লাখ টাকার বাঁধ ও সড়ক টিকল না এক মাসও। এখন ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও মানুষ। সেতুটিও পড়েছে ঝুঁকিতে। স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগে ব্লক ও বালু দিয়ে ভরাট করে সংযোগ সড়কটি এইচবিবি করা হলো। অথচ সেতুর পূর্ব দিকের সংযোগ সড়কের উত্তর পাশে একাধিক বিশাল আকারের ফাটল ধরেছে এবং ব্লক সরে যাচ্ছে। 
তানোর উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, ঠিকাদারের জামানত আছে। এ ছাড়া কাজটি এখনো চলমান। তাকে ঠিক করে দিতে হবে। ৩০ জুন কাজ শেষ হয়েছে বলা হলে, তিনি বলেন, এত প্রশ্ন করার কী আছে।’ তবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আবদুর রশিদ বলেন, ‘সেতুর পূর্ব দিকের সড়কে ব্লকের জন্য সাড়ে তিন কোটি ও ২৫০ ফুট রাস্তার জন্য ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব আগের বরাদ্দ। এখন সবকিছুর দাম দ্বিগুণ। কাজই করতাম না, শুধু জেলা ও উপজেলা প্রকৌশলীর অনুরোধে করেছি। স্থানীয় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘এত টাকা খরচ করে নির্মাণ করা বাঁধ ও সড়ক এক মাসও না টেকা দুঃখজনক।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২১ বছর আগে শিব নদের ওপর সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন বিএনপি সরকারের মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক (প্রয়াত)। এরপর নানা কারণে আটকে যায় নির্মাণকাজ। পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর মাঝখানে ২১০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি আলোর মুখ দেখে ২০১৩ সালে। ওই সময় সেতুটি সম্পন্ন হলেও ছিল না সড়ক। 
কিন্তু ইট বিছানো সংযোগ সড়ক থাকায় ওই সেতুতে ভরসা রাখতে পারেননি বাস ও ট্রাকের চালকরা। ফলে সেতুটি দিয়ে মোটরসাইকেল, সাইকেল ও ভ্যান চলাচল করে। কিন্তু নদের পানিতে প্রতিবছরই সংযোগ সড়কটি ভেঙে যায়। আবার সড়কটি সংস্কারে ব্যয় হয় এলজিইডির। এবারও নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন ধরেছে সড়কটিতে। 
তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সরকার প্রদীপ সেতুর সংযোগ সড়কটিই ত্রুটিপূর্ণ। শুরু থেকে এটি ধুঁকছে। নদের পানি বৃদ্ধি পেলে সড়কটিও ভেঙে যায়। আবার মেরামত করা হয়। এটির স্থায়ী সমাধান দরকার।
উল্লাপাড়ায় সড়কে ধস
নিজস্ব সংবাদদাতা,  উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ থেকে জানান,  কয়ড়া রাজমান সড়কে ধস ও বিভিন্ন স্থানে ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাজমান মোড়ে সড়কের দুপাশে ধসে পড়ে গেছে ফলে এ সড়কে চলাচলকারীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সচেতন মহলের দাবি সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে সামান্য বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি ও ধসে পড়েছে। জানা গেছে,  চার মাস আগে উল্লাপাড়া এলজিইডি থেকে উপজেলার কয়ড়া বাজার থেকে রাজমান হাট পর্যন্ত প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কার ও সড়কের দুপাশে ইট বিছিয়ে চওড়া করা হয়েছে। 
সংস্কারের কয়েক মাস যেতে না যেতেই বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সড়কটি সংস্কারের পর থেকেই অনেক স্থানে ভেঙে গেছে। উল্লাপাড়া এলজিডির প্রকৌশলী আবু সায়েদ বলেন, সড়কের ভাঙন ও ধস মেরামতে আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি।

×