ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে পল্লী ইন্সপেক্টরের লাথিতে অন্তঃস্বত্ত্বা নারী হাসপাতালে

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩; আপডেট: ১১:২২, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বাউফলে পল্লী ইন্সপেক্টরের লাথিতে অন্তঃস্বত্ত্বা নারী হাসপাতালে

হাসপাতালে আহত অন্তঃসত্ত্বা নারী

পটুয়াখালীর বাউফলের গোসিংগা গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পলি আক্তার নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে (২২) মারধর করা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক ইন্সপেক্টর এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গেছে, কোনো ধরণের বকেয়া পাওনা বা নোটিশ ছাড়াই পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের  ইন্সপেক্টর বদরুল ইসলামের নতৃত্বে দুটি মটর বাইকে চারজন বিদ্যুৎকর্মী গতকাল শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে বাউফল সদর ইউনিয়নের গোসিংগা গ্রামে শাহজাহান সরদারের বাড়িতে গিয়ে তার ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

কোনো বকেয়া ছাড়া বা বিনা নোটিশে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কারণ জানতে চান শাহজাহান সরদারের অন্তঃস্বত্ত্বা মেয়ে পলি আক্তার। এ সময় পল্লী ইন্সপেক্টর বদরুল ইসলাম তার উপর ক্ষুব্দ হন এবং তর্ক-বির্তকে জড়িয়ে পরেন। এ সময় ওই নারীর স্বামী মো. কাকন তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলে পল্লী ইন্সপেক্টর বদরুল ও তার সহযোগিরা তাকে কিলঘুষি মারেন। তখন অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী পলি আক্তার বাধা দিলে তাকেও কিলঘুষি মারা হয়। এক পর্যায়ে পল্লী ইন্সপেক্টর বদরুল ইসলাম অন্তঃস্বত্ত্বা ওই নারীকে লাথি মারলে তিনি মাটিতে পরে যান। এ ঘটনায় তার পেটে প্রচন্ড ব্যথা উঠলে তাকে দ্রুত বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

এ ঘটনার পর স্থানীয় কয়েকজন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির স্টাফদের বাইকের চাবি রেখে দেন। খবর পেয়ে বাউফল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং বিদ্যুৎ কর্মীদের বাইকের চাবি ফেরৎ দেন। এরপর ইউপি চেয়ারম্যানের অনুরোধে বিদ্যুৎ কর্মীরা ওই অন্তঃস্বত্ত্বা ওই নারীর বাবা শাহজান সরদারের ঘরে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করেন।

এ ব্যাপারে পল্লী  ইন্সপেক্টর বদরুল ইসলাম  বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্খিতভাবে ঘটেছে। ওই দিন দুপুরের দিকে শাহজাহান মিয়া নামের এক ব্যক্তি বাউফল জোনাল অফিসে এসে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। আমি ডিজিএম স্যারের নির্দেশে তিনজন বিদ্যুৎকর্মী নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেই। জমিজমা নিয়ে শাহজান মিয়ার সঙ্গে শাহজান সরদারের মামলা চলে আসছিল। মূল বিষয়বস্তু যাচাই-বাচাই ছাড়া আমার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ঠিক হয়নি।’ তবে তিনি অন্তঃস্বত্ত্বা ওই নারীকে মারধরের ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন।

বাউফল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,‘খবর পেয়ে আমি ওখানে যাই। বিদ্যুৎ কর্মীদের বাইকের চাবি ফেরৎ দেয়া হয়েছে। শুনেছি বিদ্যুৎ কর্মীদের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে। হাতাহাতি ও মারামরি হয়েছে।’

এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, ‘কয়েকজন বিদ্যুৎ কর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে কোনো অন্তঃস্বত্ত্বা নারীকে বা তার স্বামীকে মারধর করা হয়েছে এমন ঘটনা আমি জানিনা। কেউ অভিযোগও করেননি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

 

 

এমএইচ

সম্পর্কিত বিষয়:

×