ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে যৌতুক-নির্যাতনে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ শ্বাশুড়ি গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ২৯ মার্চ ২০২০

শেরপুরে যৌতুক-নির্যাতনে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ  শ্বাশুড়ি গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ শেরপুরের শ্রীবরদীতে আরজিনা বেগম (২২) নামে এক গৃহবধূকে যৌতুকের দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাতে উপজেলার কুড়িকাহনীয়া ইউনিয়নের কুড়িকাহনীয়া মিঞাপাড়া গ্রামের গৃহবধূর স্বামীর ঘর থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রবিবার দুপুরে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গৃহবধূর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই ঘটনায় থানায় মৃত আরজিনার স্বামী বাধন মিয়াকে প্রধান আসামী করে ৭ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন গৃহবধূর বাবা গাজীউর রহমান। সেইসাথে গৃহবধূর শ্বাশুড়ি বেলি বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম পিপিএম। জানা যায়, গত ৫/৬ বছর আগে প্রতিবেশী মৃত মজিবর রহমান ওরফে মজির ছেলে বাধন মিয়ার সাথে বিয়ে হয় গৃহবধূ আরজিনা বেগমের। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্যজীবনে তিন বছর বয়সের এক মেয়ে ও দেড় মাস বয়সের এক ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই যৌতুক দাবিসহ তুচ্ছ ঘটনায় বাধন মাঝে-মধ্যেই আরজিনাকে শারীরিক নির্যাতন করতো। এ নিয়ে কয়েক দফা গ্রাম্য শালিস হয়েছে। শনিবার বিকেলে বাধন মিয়া আরজিনাকে ফের শারীরিক নির্যাতন করে। খবর পেয়ে আরজিনার বাবাসহ কয়েকজন তাকে দেখতে গেলে আরজিনাকে স্বামীর বাড়ির আঙিনায় মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রাতেই লাশ উদ্ধার করে। লাশের গায়ে একাধিক জখমের চিহ্ন রয়েছে। গৃহবধূর বাবার অভিযোগ, যৌতুকের দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে আরজিনাকে নির্যাতনে হত্যা করে লাশ প্রথমে বসতঘরের ধর্ণায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে পরিবারের লোকজন ওই লাশ নামিয়ে ফেলে। তিনি ওই ঘটনায় বাধনসহ জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন। অপরদিকে বাধন মিয়ার পরিবারের দাবি, তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে আরজিনা সবার অজান্তে বসতঘরের আড়ার সাথে গলায় রশি বেঁধে আত্মহত্যা করেছে। তবে ওই ঘটনাটির পর আরজিনার স্বামী ও দেবরসহ বাড়ির লোকজন গা ঢাকা দেয়। এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার জানান, ওই ঘটনায় যৌতুকের দাবিতে মারপিটের হত্যার অভিযোগে থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়েছে। ওই মামলায় ইতোমধ্যে গৃহবধূর শ্বাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান আসামিসহ অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
×