ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশাল বন্দর থানার দুই পুলিশ সদস্য আটক

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২১ অক্টোবর ২০১৯

বরিশাল বন্দর থানার দুই পুলিশ সদস্য আটক

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল ॥ জাল ও মা ইলিশ লুট করার সময় বরিশাল বন্দর থানার দুই পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। ওই দুই পুলিশ সদস্যর নাম মোহাম্মদ আলী ও জুলফিকার আলী। অভিযোগ রয়েছে, ওই দুই পুলিশ সদস্য অনুমোতি ছাড়াই রবিবার সন্ধ্যার দিকে বাউফলের তেঁতুলিয়া নদীর ধুলিয়া লঞ্চ ঘাট পয়েন্টে এসে জেলেদের জাল ও মাছ লুট করছিল। এসময় ওই পয়েন্টে উপজেলা মৎস্য ও নৌ-ফাঁড়ি পুলিশের যৌথ অভিযান চলছিল। ওই সময় তারা ওই দুই পুলিশ সদস্যকে একটি ট্রলার বিপুল পরিমান জাল ও মা ইলিশসহ হাতেনাতে আটক করে। কালাইয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সোহাগ ফকির জানান, আটককৃতরা বরিশাল বন্দর থানার পুলিশ সদস্য। তারাসহ মোট ৬ জন পুলিশ সদস্য একটি স্পিডবোট, একটি স্টিলবডির ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ও কাঠের তৈরি নৌকা নিয়ে বরিশাল কোতোয়ালী থানার কাউয়ার চর থেকে বাউফলের তেঁতুলিয়া নদীর ধুলিয়া পয়েন্টে প্রবেশ করেন। এসময় ওই পয়েন্টে তারা অভিযান চালানোর সময় পুলিশ সদস্য মোহাম্মদ আলী ও জুলফিকার আলীকে একটি ট্রলারসহ আটক করে এবং বিপুল পরিমান জাল ও মা ইলিশ জব্দ করে। ওই সময় স্পিডবোট ও কাঠের নৌকায় থাকায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য পালিয়ে যায়। তাদের গায়ে তখন পুলিশের পোশাক ছিল। এ বিষয়টি তাৎক্ষনিক ভাবে বরিশাল নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপারকে জানানো হলে তার নির্দেশে আটককৃত ওই দুই পুলিশ সদস্যকে কালাইয়া নৌ-ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়। ট্রলারটি ভাড়ায় আনায় হয়ে ছিল। ওই ট্রলারে ও দুই পুলিশ সদস্য ছাড়াও ৪জন লোক ছিল। তাদেরকে তিনশ’ টাকা রোজে ভাড়ায় আনা হয়। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল বন্দর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদারসহ ওসি (তদন্ত) বাউফলে এসে নৌঁ-ফাড়ি থেকে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে নিয়ে যায়। ট্রলার, জাল ও মাছসহ ওই চার ব্যক্তিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাছে সোপর্দ করা হয়। ওই চার ব্যক্তি হলেন, বরিশালের চর কাউয়া গ্রামের আনছার হাওলাদারের ছেলে আশিক (২০), জালাল জোমাদ্দারের ছেলে রবিউল (১৬), রশিদ সিকদারের ছেলে নাইদুল (২৫) ও হামিদ খানের ছেলে মোঃ রাকিব(২৩)। বাউফলের ইউএনও শুভ্র দাস এসময় তার কার্যালয় উপস্থিত সাংবাদিকদেও বলেন, ‘ওই চার ব্যক্তির বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু পরে অদৃশ্য কারণে গভীর রাতে আটককৃত ট্রলারসহ তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে বরিশাল বন্দর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন,‘ওই দুই পুলিশ সদস্য ভুল ক্রমে বাউফল জলসীমানায় ঢুকে পরেছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওই পুলিশ সদস্যরা অনুমোতি ছাড়াই অভিযানে গিয়েছেন। বিষয়টি আমি উর্ধতন কর্তপক্ষকে অবহিত করেছি’। সহকারী কমিশনার (বরিশাল বন্দর অঞ্চল) শাহেদ আহম্মেদ চৌধুরি বলেন, ‘তারা (দুই পুলিশ সদস্য) কোন ফৌজদারি অপরাধ করেননি। তবে কর্তব্য পালন করতে গিয়ে অনিয়ম করেছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে’। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন,‘ প্রাথমিক ভাবে দেখা গেছেন তারা (দুই পুলিশ সদস্য) অনিয়ম করেছেন। তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
×