ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আব্দুল্লাহ আল ফাহিম

আশায় বসতি

প্রকাশিত: ১২:০৬, ২৪ অক্টোবর ২০১৯

আশায় বসতি

কোন দেশের শিশুকে নিয়ে আপনি আগামীর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেন? যে দেশের শতকরা ৭০ শতাংশ শিশু নির্যাতনের শিকার হয় সেই দেশের শিশুকে নিয়ে? যে দেশের নরপিশাচদের হাতে এককালে শেখ রাসেল আর এখন তুহিন, রাজনদের মতন শিশু হত্যা হয় সেই দেশের শিশুকে নিয়ে? চারদিকে এত শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে, তবু সেই মানুষগুলো যারা আজও ভুক্তভোগী হয়নি তাদের হুঁশ হচ্ছে না। কুম্ভকর্ণের নিদ্রার সঙ্গে তাদের তুলনা করলে সে নিদ্রা আজও ভাঙেনি। কেন এত শিশু নির্যাতন? আইয়্যামি জাহেলিয়া যুগেও কি এমন ছিল? কই ইতিহাস তো তা বলে না। তখন মেয়ে শিশুকে জীবন্ত কবর দেয়া হতো। আর এখন? আমরা তো ডিজিটাল মানুষ তাই জীবন্ত কবর দেয়াটা মান্ধাতা আমলের কাজ বলে সেটা না করে নতুন নিয়মে হত্যা করি। ক্রোধ-আক্রোশ, জিঘাংসা- ঘৃণার বশবর্তী হয়ে যে কতটা নরপিশাচের মতন আচরণ করা যায় তা ভাবতেও লোম শিওরে ওঠে। আতঙ্কময় জীবন পেতেই কি ৩০ লাখ মানুষ বুকের লাল রক্তে বাংলার সবুজ ঘাস লালে রঞ্জিত করেছিল? ছোটকালে শুনেছিলাম, বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ নাকি সবচেয়ে ভয়াবহ আর ভারি বোঝা। কিন্তু আজ? সেই বাবার সন্তানহত্যা আর তার কাঁধই পাপের ভারে ভারি আর ভয়াবহ হয়ে আছে। এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। স্বাধীনতা ধীরে ধীরে বাড়ছে, বাড়ছে দেশের উন্নতি , কিন্তু কেন বাড়ছে না মানুষের মূল্যবাধ? আরো কত তুহিন প্রাণ হারালে এমন মৃত্যুর মিছিল বন্ধ হবে? এসব ভাবতে গেলে কেন জানি ভাবনার দুয়ারে অনেক এলোমেলো হিসেব সামবে এসে দাঁড়ায়। আইনের খড়্গ আজ কি এতটাই দুর্বল যে আজও পর্যন্ত শিশু নির্যাতনসহ আর যেই অপরাধগুলো রয়েছে সেগুলোর কোনটারই দৃষ্টান্তমূলক বিচার আমাদের সামনে ঘটে না? চীনা প্রবাদে আছে, ‘আইনের আশ্রয় নেয়ার অর্থ হলো, একটি বিড়ালের জন্য একটি গরুকে হারানো।’ আর কোন দেশের আইনের ক্ষেত্রে কথাটি প্রযোজ্য হোক বা না হোক, আমাদের জন্য কিন্তু অক্ষরে অক্ষরে সত্য কথা এটি। চংুপযড়ষড়মুতে একটা কথা আছে, ‘ঝবষভ - ভঁষভরষষরহম ঢ়ৎড়ঢ়যবপু’ অর্থাৎ আপনি যা বিশ্বাস করবেন সেইটাই হবে। আজকের অপরাধীরাও বিশ্বাস করে, তারা যেই অপরাধই করুক না কেন আইনের ম্যারপ্যাঁচে একদিন তো বেরিয়ে আসবেই। আর যদি হাতে থাকে কিছু নগদ অর্থ আর প্রভাবশালীদের লেজুড়বৃত্তি করারা মতন মানসিকতা, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। যাই হোক, কবি বলেছিলেন, ‘মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ।’ আর কারও ওপর বিশ্বাস হারাই বা না হারাই মুজিবকন্যার ওপর বিশ্বাস আজো আছে। তাঁর দেয়া অঙ্গীকার পূরণ যে তিনি করবেন তা আমি বিশ্বাস করি। তাঁর দীপ্র নেতৃত্বেই শিশু নির্যাতন একদিন জিরো টলারেন্সের কোঠায় চলে আসবে এই আশাই রাখছি। বগুড়া জিলা স্কুল, বগুড়া থেকে
×