ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

নান্দাইলে ভবন পরিত্যাক্ত থাকায় বিদ্যালয়ের মাঠে পাঠদান

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ১৪ অক্টোবর ২০১৯

নান্দাইলে ভবন পরিত্যাক্ত থাকায় বিদ্যালয়ের মাঠে পাঠদান

সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ ॥ উপজেলার পূর্ব কচুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি আড়াই বছর আগে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর থেকে দুই বছর খোলা আকাশের নিচে পাঠদানের পর গত চার মাস আগে উপজেলা প্রশাসন বিদ্যালয়ের মাঠে একটি টিনের চালা তৈরি করে দিয়েছে। অথচ বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ৫/৬ বছর ধরে নতুন একটি ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও আমলে নিচ্ছে না কেউই। ফলে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজেই পাঠদান গ্রহণ করছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়টির অবস্থান সিংরইল ইউনিয়নের আলাবক্সপুর গ্রামে। সোমবার সকালে নান্দাইল উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা মূল ভবন রেখে মাঠে সদ্য নির্মিত একটি টিনের চালার নিচে পাঠদান গ্রহণ করছে। আর ভবনটির দরজা-জানালা ভেঙ্গে পরে রয়েছে। খসে পড়ছে দেয়ালের প্লাস্টার। ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাফিয়া আক্তার হীরা জানায়, গত দুই বছর তারা খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করেছে। চার মাস ধরে এই চালার নিচে ক্লাস করছে। ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী রাসেল মিয়া জানায়, বৃষ্টির হলে চালা ঘরটিতেও পানি পরে। আর রোদে প্রচন্ড গরম লাগে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৩৫ সালে দক্ষিণ পুর্ব কচুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ৫১ শতক জমির উপর আলাবক্সপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টিতে ২২৮ জন শিক্ষার্থী ও পাঁচজন শিক্ষক রয়েছে। ১৯৯৪ সালে তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি একতলা পাকা ভবন নির্মিত হয়। কিন্তু নি¤œমানের কাজের কারণে শুরু থেকেই ওই ভবনটি ছিল ব্যবহার অযোগ্য। কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ওই ভবনেই পাঠদান কার্যক্রম চালিয়েছে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানায়, ছাদের প্লাস্টার পড়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই খোলা আকাশের নিচে চলে পাঠদান। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ এডিবি’র ফান্ড থেকে দেড় লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে একটি টিনের চালা ঘর নির্মাণ করে দেয়। বেড়া বিহীন এই চালার নিচে এখন চলে ক্লাস। চালা ঘরটি নিচু হওয়ায় প্রচন্ড গরমে অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হালিমা আক্তার বলেন, উপজেলা প্রকৌশল অফিস থেকে তিন বছর আগে বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে গেছে। এরপর ২০১৭ সালে এই বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন ডিও লেটার দিয়েছেন। এছাড়ও তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন করেও নতুন ভবনের কোন সুরাহা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে আসতে ভয় পেত। এখনও বৃষ্টি হলে টিনের চালা ঘরে পানি ঢুকে। রোদে টিনের চালা গরম হয়ে যায়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক বলেন, ভবন সংকটের কারণে আমরা ওই বিদ্যালয়ে আপাতত টিনের একটি চালা ঘর তৈরী করে দিয়েছি। নতুন ভবন তৈরীর প্রকৃয়া চলছে। নান্দাইল উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া বলেন, ওই বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ভবন নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। এখন মূল্যায়নের কাজ চলছে। আশা করছি দ্রুত কচুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।
×