ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বজলুল গনি

সুস্থ দেহে সুস্থ মন

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৪ আগস্ট ২০১৭

সুস্থ দেহে সুস্থ মন

ল্যাটিনে একটি কথা আছে- ‘ম্যান সানা ইনকর্পোর সানো’ যার ইংরেজী অর্থ হলো- ‘এ সাইন্ড মাইন্ড ইজ ইন এ সাউন্ড বডি’ আর বাংলা অর্থ হলো ‘সুস্থ দেহে সুস্থ মন।’ দেহেকে সুস্থ রাখলেই তবে মনও সুস্থ থাকবে। তবে দেহকে সুস্থ রাখতে হলে রীতিমতো খেলাধুলা আর ব্যায়াম করতে হবে। খেলাধুলার জন্য চাই খেলার মাঠ যেখানে থাকবে নির্মল মুক্ত বাতাস। নির্মল বায়ুর অভাবে আবহওয়া দূষিত হয়। আর দূষিত বায়ু সেবনে মানুষ ও প্রাণীকুল অসুস্থ হয়। দেখা যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের অন্য শহরগুলোতে খেলার মাঠসমূহে মেলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য খেলাধুলার ব্যাপক অসুবিধা সৃষ্টি করা হচ্ছে, এ নিয়ে কারোরই যেন কোন মাথা ব্যথা নেই। দৈহিক শক্তি, মেধা ও মননের জন্য সুষম খাদ্যসহ খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। শুধু সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে হবে না, পাশাপাশি খেলাধুলাকে জীবনের সঙ্গে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত করতে না পারলে মেধা ও মননের বিকাশ ঘটবে না। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশে পর্যাপ্ত খেলাধুলার মাঠের অভাবে শিশু-কিশোরদের মেধা মননের বৃদ্ধি আশানুরূপভাবে হচ্ছে না। এই কিশোর ও যুবক-যুবতীরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী না হলে দেশের ভবিষ্যত কি? পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলা বিকাশের ক্ষেত্রে যা যা করা দরকার সেদিকেও সংশ্লিষ্ট সকলকে নজর দিতে হবে। খেলাধুলার মাঠে মেলা বসিয়ে কিংবা ওই মাঠে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য খেলাধুলার মাঠ বন্ধ করলে খেলাধুলা ব্যবহত হতে বাধ্য। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে মানসিক মনন সাধনের উদ্দেশ্য হলেও খেলাধুলার অভাবে দেহ ও মন সুস্থ থাকতে পারে না। তাই তো তরুণ প্রজন্মের খেলাধুলা যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকে সকলের দৃষ্টিপাত করা একান্ত প্রয়োজন। মেলায় কি হয়? হাট-বাজার বসে, সার্কাস, কার্নিভালের ব্যবস্থা থাকে। এতে কি তরুণ সমাজ যথার্থভাবে উপকৃত হচ্ছে? এসব তরুণদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তরুণ সমাজ পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা করে দেহ মন চাঙ্গা রাখবে আর সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে, তবেই তাদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল হবে। সমাজের জ্ঞানী-গুণী লোকজনের উচিত পড়াশোনার পাশাপাশি তরুণ সমাজ যেন খেলাধুলার সুযোগ পায় তার সুব্যবস্থা করা। এ জন্য শিক্ষক, অভিভাবক, সমাজসেবক, অধ্যাপক, বিশেষজ্ঞ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও রাজনীতিবিদসহ সকলের উচিত প্রশাসনের সঙ্গে এক হয়ে সমাজের ভাল ভাল কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করা। আজকের তরুণরাই তো আগামী দিনের ভবিষ্যত। তারা যদি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী না হয় তবে তারা বুদ্ধিমান আর জ্ঞানী-গুণী হবে কি করে? প্রশাসনে যারা নিয়োজিত আছেন তাদের উচিত খেলার মাঠগুলোকে যেন অনাবশ্যক মেলার মাঠে পরিণত করা না হয় তা নিশ্চিত করা। শুধু প্রশাসনের নজরদারি বাড়ালেই চলবে না, সমাজের প্রত্যেকেরই উচিত এদিকে সুতীক্ষè নজর দেয়া। তবে এ কথা বলারও কোন যৌক্তিকতা নেই সবকিছু বাদ দিয়ে কেবল খেলাধুলার পেছনেই সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। জাফরাবাদ, ঢাকা থেকে
×