বিজ্ঞানীরা এমন একটি বায়োনিক হাত তৈরি করেছেন যা কোন বস্তুকে দেখতে পারে এবং তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে ওই বস্তুটিকে ধরতে হলে তাকে ঠিক কি করতে হবে। কোন ব্যক্তি মস্তিষ্ক ব্যবহার না করেই, এই বায়োনিক হাতের সাহায্যে জিনিসপত্র ধরতে পারবে। অর্থাৎ কখন ও কতটা তার হাতের আঙ্গুল বাঁকা করতে হবে এবং শেষ পর্যন্ত ওই বস্তুটিকে কিভাবে ধরতে হবে।
যে বস্তুটিকে এই বায়োনিক হাত ধরতে যাবে প্রথমে ওই বস্তুটির আকার এবং আকৃতি পরিমাপ করা হয়। আর সেটা করা হয় তার হাতে বসানো একটি ক্যামেরার মাধ্যমে। তারপরই সে সিদ্ধান্ত নেয় সেটিকে ধরার ব্যাপারে তাকে কিভাবে অগ্রসর হতে হবে।
যুক্তরাজ্যে নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। কোন কারণে যাদের হাত কেটে ফেলা হয়েছে, এরকম অল্পকিছু লোকের শরীরে এই বায়োনিক হাত লাগিয়ে সেটির ওপর পরীক্ষাও চালানো হয়েছে।
দেখা গেছে, এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে এটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই বায়োনিক হাত চায়ের কাপ যেমন ধরতে পারে, তেমনি পারে টেলিভিশনের রিমোট কন্ট্রোল হাতে নিতেও। এছাড়াও বুড়ো আঙ্গুলসহ আরো দুটো আঙ্গুলের সাহায্যে এটি তুলে নিতে পারে অন্যান্য বস্তুও।
বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একজন শিক্ষক ড. কাইনুশ নাজারপুর এই গবেষণার সাথে যুক্ত আছেন। তিনি বলেছেন, বায়োনিক এই হাতটি নিজেই নিজেই সাড়া দিতে পারে।
‘এর আগে যাদের শরীরে কৃত্রিম হাত বা পা লাগানো হয়েছে তাদের দিক থেকে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে, এসব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ খুব ধীর গতিতে কাজ করে। এগুলোর সাহায্যে কিছু করতে গেলে নানা রকমের সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু এখন এই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে বলা যায় আমরা অন্তর্জ্ঞান সম্পন্ন এমন একটি হাত তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি যা কোন ধরনের চিন্তা করা ছাড়াই সাড়া দিতে পারে, বলেন তিনি।
ড. নাজারপুর বলছেন, ‘গত ১০০ বছরে এই কৃত্রিম অঙ্গের ব্যাপারে খুব সামান্যই অগ্রগতি হয়েছে। কোন কিছুর ব্যাপারে নিজে নিজে সাড়া দিতে না পারাটাই ছিল এ ধরনের অঙ্গের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা।’
এই উদ্ভাবনের ফলে এখন নতুন ধরনের কৃত্রিম অঙ্গ তৈরির একটা সম্ভাবনা তৈরি হলো। কারণ যার শরীরে এটি সংযোজন করা হবে, সে এখন মস্তিষ্ক ব্যবহার না করেই, এই বায়োনিক হাতের সাহায্যে জিনিসপত্র ধরতেও পারবে।
সূত্র : বিবিসি
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: