ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাড়তি করের বোঝা না চাপিয়ে করের আওতা বাড়ানোর পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৩:১৫, ২৫ এপ্রিল ২০১৭

বাড়তি করের বোঝা না চাপিয়ে করের আওতা বাড়ানোর পরামর্শ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্তমান আইনের মূল কাঠামো ঠিক রেখে পরিবর্ধন, পরিমার্জন ও সংশোধনের মাধ্যমে আয়কর আইন-২০১৭’র খসড়া প্রণয়ন করতে হবে। প্রত্যক্ষ কর আইনকে ডিজিটাল করে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে নতুন আইনে কর্পোরেট ট্যাক্স কমাতে হবে। করদাতারা যাতে ‘মাল্টিপল ট্যাক্স’র বোঝা থেকে অব্যাহতি পায়। জিডিপিতে কোন খাতের কতো অবদান, সেই তুলনায় দেশের রাজস্বে সংশ্লিষ্ট ওই খাতের কী অবদান তা যাচাই করতে দেখতে হবে। যদি কোন খাত তুলানমূলকভাবে খুব পিছিয়ে থাকে, তবে ওই খাতে কিভাবে কর আরোপ করা যায় তা খতিয়ে দেখতে হবে। তুলনামূলকভাবে দেশে এখনও করনেটের আওতা বাড়ে নি। বাড়তি করের বোঝা না চাপিয়ে করের আওতা বাড়াতে হবে। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে প্রত্যক্ষ কর (আয়কর) আইন-২০১৭ এর খসড়া প্রণয়ন উপলক্ষে আয়োজিত এক পরামর্শ সভায় বক্তাদের আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে। কর অঞ্চল-৮ আয়োজেন এই সভায় আইসিএবি, বাংলাদেশ লইয়ার্স এসোসিয়েশন (বিটিএলএ), বাংলাদেশ ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশন, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে নতুন আইনের খসড়া প্রণয়নে তাদের মতামত তুলে ধরেন। আইসিএবি প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির বলেন, বর্তমান আইনের সঙ্গে সামঞ্জ্যস রেখে নতুন আইন করতে হবে। আতিক হোসেন খান বলেন, নতুন আইন ‘রুল বেইজড’ করা হলে তা ব্যবসায়ীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনবে। নেসার উদ্দিন খান বলেন, দেশে করনেট তেমনভাবে বাড়েনি, ফলে করহার বেশিই থাকছে। কর্পোরেট ট্যাক্স যদি কমানো যায় তাহলে কর দেয়ার প্রবণতা বাড়বে। আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্যান্য প্রতিনিধিরা বলেন, জিডিপিতে কোন খাতের কতো অবদান, সেই তুলনায় দেশের রাজস্বে সংশ্লিষ্ট ওই খাতের কী অবদান তা যাচাই করতে দেখতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান বলেন, দেশে যুগোপযোগী ডিজিটাল প্রত্যক্ষ কর আইন বাস্তবায়নে আপনাদের পরামর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আইনগত কাঠামোকে আমরা নবায়ন করছি। ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হচ্ছে। শুল্ক আইনও প্রায় চূড়ান্ত। প্রত্যক্ষ কর আইন নিয়ে আপনাদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের বিষয়ে আপনারা যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, তা নতুন আইনের খসড়ায় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত হবে। তিনি বলেন, অনলাইনে আয়কর নিবন্ধনের সুযোগ থাকায় প্রতিনিয়তই ই-টিআইএন ধারীর সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে দেশে ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ই-টিআইএন ধারী রয়েছেন। এসময় কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আপনার প্রত্যক্ষ কর আইনের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করে ফেলুন। পরে নতুন নতুন উপাদান যুক্ত করা যাবে। প্রয়োজনে কোন কিছু বাদ দেওয়াও যাবে। এনবিআরের করনীতি (সদস্য) পারভেজ ইকবালের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কর অঞ্চল-৮’র কর কমিশনার মোঃ আবু তাহের চৌধুরি। তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো প্রত্যক্ষ কর আইনকে বাংলায় করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একই অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার হাফিজ আল আসাদ বলেন, সরকার সব অধ্যাদেশ ও আইনকে বাংলায় করার উদ্যোগ নিয়েছে, সেই লক্ষ্যে আইনকে ডিজিটাল ও যুগোপযোগী করার জন্য এনবিআরের এই সিদ্ধান্ত।
×