ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পানিতে ভাসছে বৃহস্পতি ও শনির ৪টি চাঁদ

প্রকাশিত: ১৮:০৬, ১৪ এপ্রিল ২০১৭

পানিতে ভাসছে বৃহস্পতি ও শনির ৪টি চাঁদ

অনলাইন ডেস্ক ॥ পানিতে ভাসছে বৃহস্পতি ও শনির চার-চারটি চাঁদ। এগুলো হলো ইউরোপা, গ্যানিমিদ, টাইটান আর এনসেলাডাস। এর মধ্যে প্রথম দুটি চাঁদ বৃহস্পতির, বাকি দুটি শনির। এদের মধ্যে ইউরোপা আর এনসেলাডাস-এ অদূর ভবিষ্যতে প্রাণের সন্ধান মেলারও সম্ভাবনা যথেষ্ট জোড়ালো হয়েছে। পৃথিবীর থেকে সবচেয়ে কাছে বলে এদের দিয়েই শুরু হবে পৃথিবীর বাইরে প্রাণের সন্ধান। ওয়াশিংটনে আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে নাসার তরফ থেকে জানানো হয়েছে। নাসা জানায়, পৃথিবীতে যত সাগার-মহাসাগর রয়েছে, তার অনেক গুণ বেশি সমুদ্র আর মহাসাগরে ভেসে যাচ্ছে বৃহস্পতির ওই দুই চাঁদ। তরল পানিতে টইটম্বুর ইউরোপা আর গ্যানিমিদ। পৃথিবীর গভীরতম প্রশান্ত মহাসাগরের চেয়েও অন্তত ১০০ গুণ বেশি গভীর মহাসাগর রয়েছে বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপায়। এত পানি পৃথিবী দেখেনি কখনও। আর সেই পানির মহাসাগরগুলো ঢাকা রয়েছে পুরু বরফের চাদরে। শনির দুই চাঁদ 'টাইটান' আর 'এনসেলাডাস'-এর একই অবস্থা। তবে সেই মহাসাগরগুলো ভাসছে তরল হাইড্রোকার্বনে। মিথেন ও ইথেনের সাগর, মহাসাগর। নাসা জানিয়েছে, এনসেলাডাস ও ইউরোপায় পুরু বরফের চাদরের তলায় লুকিয়ে থাকা তরল জলের মহাসাগরগুলোর একেবারে নীচে প্রচণ্ড তাপে জল বাস্পীভূত হয়ে ধোঁয়ার মতো ওপরে উঠে আসছে। কোনো সমুদ্রের তলায় প্রাণ না থাকলে বা কোনো প্রাণের ক্রিয়া না ঘটলে এটা সম্ভব হত না। এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে জলে ভেসে যাওয়া ইউরোপা আর এনসেলাডাস-এর মহাসাগরগুলোর তলায় প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা যথেষ্টই জোড়ালো। শুধু তাই নয়, মহাসাগরগুলোর তলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড ও মিথেন গ্যাস। আর এই গ্যাসগুলো সাম্যাবস্থায় নেই। এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে বেঁচে থাকার জন্যে ওই গ্যাসগুলো থেকেই রসদ জোগাড় করছে জলজ প্রাণ। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্পদার্থবিদ্যার অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, সূর্য থেকে ৫০ কোটি মাইল দূরে থাকা বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপা চওড়ায় ১ হাজার ৯০০ মাইল বা ৩ হাজার ১০০ কিলোমিটার। মানে, আমাদের চাঁদের চেয়ে কিছুটা ছোট। বৃহস্পতিকে তা ঘুরে আসে সাড়ে তিন দিনে। তার একটা পিঠ সব সময় থাকে বৃহস্পতির সামনে। আমাদের চাঁদের মতোই। আমাদের জোরালো বিশ্বাস, ইউরোপায় পুরু বরফের চাদরের তলায় লুকিয়ে রয়েছে যে সুবিশাল অতলান্ত মহাসাগরগুলো, তার জলের সঙ্গে ওই চাঁদের পাথুরে ম্যান্টলেরও যোগাযোগ রয়েছে। যেখানে থাকতে পারে প্রচুর পরিমাণে লোহা। ফলে, তরল জলের সঙ্গে সেখানে অবাক করা রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে যথেষ্টই। যা প্রাণের জন্ম ও বিকাশকে সাহায্য না করলেই অবাক হতে হবে। ২০১২ সালে হাবল স্পেস টেলিস্কোপের স্পেকট্রোগ্রাফেই ধরা পড়েছিল ইউরোপার ভূপৃষ্ঠ থেকে উঠে আসছে ফুটন্ত জলের ধোঁয়া। ফুটন্ত জলের কেটলির মুখ থেকে যেমন ভাবে বেরিয়ে আসে ধোঁয়া তেমনি। সূত্র: আনন্দবাজার
×