ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

২০২৪ সালের মধ্য সূচকে ভালো করবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৩:১০, ১৬ মার্চ ২০১৭

২০২৪ সালের মধ্য সূচকে ভালো করবে বাংলাদেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি নিয়েই স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে আসবে বাংলাদেশ। এই বেরিয়ে আসা দেশের জন্য গর্বের বিষয় হবে। আগামী ২০২৪ সালে মধ্য আয়ের দেশে যাওয়ার আগেই সব সূচকে যে কোনো দেশের চেয়ে ভালো করবে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ এ্যান্ড দ্য এলডিজি গ্র্যাজুয়েশন চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলা হয়। সংলাপের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির রিচার্জ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, স্বাধীনতার পাঁচ দশক পর বাংলাদেশ কোনোভাবেই গরিব দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পারে না। স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের বের হয়ে আসা হবে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে টেকসই, মসৃণ ও সফলতম ঘটনা। সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, জেমকন গ্রুপের পরিচালক কাজী আনিস আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের প্রথম সহ-সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বক্তব্য রাখেন। সঞ্চালনা করেন সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং বাংলাদেশে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। মূল প্রবন্ধে বলা হয়-মধ্য আয়ের দেশে যেতে তিনটি সূচকের দুটিতে সাফল্য এসেছে, অন্যটি ২০২৪ সালের আগেই ভালো করা সম্ভব হবে। তবে এ জন্য ব্যবসায়িক পরিবেশ ও বেসরকারী বিনিয়োগের হার বাড়ানোসহ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। আগামী ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হবে বাংলাদেশ। এজন্য যেসব প্রয়োজনীয় লক্ষ্যগুলো প্রাথমিকভাবে অর্জন করতে হবে, তা ২০১৮ সালের মধ্যেই অর্জন হবে। নিয়ম অনুসারে মাথাপিছু আয়, মানব উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা-এ তিনটি সূচকের মধ্যে কমপক্ষে দু’টিতে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করতে হয়। বাংলাদেশ তিনটিই সফলভাবে উৎরাতে পারবে বলে মূল প্রবন্ধে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এলডিসি তালিকা থেকে বের হয়ে আসার বিষয়ে অনুমোদন পেতে হবে। তারপরও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এলডিসি হিসেবে যেসব সুবিধা পাওয়া যায়, বাংলাদেশের জন্য তা ২০২৭ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে জানিয়ে বলা হয়, ২০২৪ সালের পর এলডিসি ভুক্ত দেশের জন্য যে বাজার সুবিধা তা আর থাকবে না। এ জন্য ওই অবস্থায় কিভাবে সব কিছু মোকাবেলা করতে হবে তা বিবেচনায় আনতে হবে। মূল প্রবন্ধে আরও বলা হয়, মধ্য আয়ের দেশে যাওয়ার পর যেসব অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা আসবে তা মোকাবেলার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। পণ্য ও বাজার বহুমূখীকরণে জোর দেয়া প্রয়োজন। পণ্য বৈচিত্রকরণে মনযোগী হতে হবে, শিল্প ও কৃষিতে উৎপাদনশীললতা বাড়াতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসার পরও যাতে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা পাওয়া যায় সে প্রচেষ্টা গ্রহণের জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন বলে তাগিদ দেন বক্তারা। তারা বলেন, ইউরোপ ও আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন শুল্কমুক্ত বা জিএসপি সুবিধায় পণ্য রফতানি করা যাচ্ছে। তবে মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি পাওয়ার পর এই সুবিধা আর থাকবে না। তখন জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রয়োজন হবে। এই সুবিধা আদায়ে এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।
×