
.
গলে আজ শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট। ম্যাচটা স্বাগতিকদের জন্য বিশেষ; কারণ, এই ম্যাচ দিয়ে আভিজাত্যের সাদা পোশাকের ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছেন ৩৮ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডার। টেস্ট অবসরের ঘোষণাটা গত বছরই দিয়ে রেখেছিলেন সাবেক লঙ্কান অধিনায়ক। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যাটিংয়ের সময় মাঠে প্রবেশে বেশি সময় নেওয়ায় ম্যাথুসের বিপক্ষে টাইম আউটের আবেদন করে সফল হয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিষয়টি নিয়ে তখন ব্যাপক আলোচনা-উত্তাপ তৈরি হয়েছিল। বিদায়ী টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সেটি নিয়ে এ তারকা বলেছেন,‘ঘটনাটি আমার জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল। বাংলাদেশি ক্রিকেটার সবাই আমার ভালো বন্ধু। তাদের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই-আমাদের সম্পর্ক চমৎকার। যদিও মাঠে সে সময় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছিল, আমি সেসব মনে রাখিনি।’ এদিকে ম্যাথুসকে বিদায়ী টেস্টে জয় উপহার দিতে চান বর্তমান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।
‘অ্যাঞ্জেলো আমাদের আইডল, কিংবদন্তি। তার সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য বড় প্রেরণা। আমরা সবাই মিলে বিদায়ী টেস্টে তাকে জয় উপহার দিতে চাই।’ গলে সোমবার সংবাদ মাধ্যমে বলছিলেন ধনঞ্জয়া। নিজের ক্যারিয়ারের সেরা স্মৃতি প্রসঙ্গে তিনি যোগ করেন,‘২০১৪ টি২০ বিশ্বকাপ জিতেছিলাম আমরা বাংলাদেশের মাটিতে। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমরা জিতেছিলাম।’ নিজের হিরো কে এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাথুস বলেছেন, ‘আমার বাবা-মা। তারাই আমার হিরো। আমার জন্য তারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাদের কাছ থেকে আমি জীবন সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। তারাই আমার হিরো।’ এর আগে টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণায় তিনি বলেছিলেন,‘এই খেলাটির সবচেয়ে আরাধ্য সংস্করণ- আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেওয়ার জন্য এটাই আমার জন্য উপযুক্ত সময়। গত ১৭ বছর ধরে শ্রীলঙ্কার হয়ে ক্রিকেট খেলা আমার জন্য সর্বোচ্চ সম্মান ও গর্বের ব্যাপার। শ্রীলঙ্কার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ালে দেশপ্রেম ও সেবার যে অনুভূতি হয়, সেটার সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা চলে না।’ ২০০৯ সালের জুলাইতে গলেই পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ম্যাথুসের। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন সংস্করণে ১১৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ম্যাথুস।
ক্যারিয়ারের নানা উত্থান-পতন সঙ্গী করে গত দেড় দশক ধরে শ্রীলঙ্কার টেস্ট দলের নিয়মিত মুখ। ৪৪.৬২ গড়ে ৮১৬৭ রান করেছেন তিনি। নামের পাশে ১৬ সেঞ্চুরির সঙ্গে রয়েছে ৪৫ হাফসেঞ্চুরি। টেস্টে তার চেয়ে বেশি রান আছে মাত্র দুজন লঙ্কান ব্যাটারের। তারা হলেন কুমার সাঙ্গাকারা (১২৪০০ রান) ও মাহেলা জয়বর্ধনে (১১৮১৪ রান)। বেশ কয়েক বছর ধরেই ফিটনেস সমস্যাকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে ম্যাথুসকে। পায়ের বিভিন্ন চোট অনেক ভুগিয়েছে তাকে। এসব কারণ ছাড়াও টেস্টে সেই অর্থে নিয়মিত বোলিং করেননি তিনি। ইনিংসে একবার ৪ উইকেটসহ মোট ৩৩ উইকেট নিয়েছেন ৫৪.৪৮ গড়ে। দেশের প্রয়োজনে সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলতে অবশ্য তৈরি আছেন ৩৮ বছর বয়সী তারকা। যদিও গত বছর জুনের পর আর সাদা বলের ক্রিকেটে সুযোগ পাননি।
প্যানেল