ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

‘এই না হলে আইপিএল’

জিএম মোস্তফা

প্রকাশিত: ০০:৩৫, ২৯ মার্চ ২০২৪

‘এই না হলে আইপিএল’

হায়দরাবাদের ভুবনেশ্বর কুমার, প্যাট কামিন্স ও জয়দেব উদানকাট

রীতিমতো অবিশ্বাস্য এক ক্রিকেট ম্যাচ উপভোগ করল ভক্ত-অনুরাগীরা। বুধবার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মধ্যকার ম্যাচটি একের পর এক নতুন রেকর্ডের জন্ম দিয়েছে। যেখানে সর্বমোট রান হয়েছে ৫২৩। টি২০ ক্রিকেট ইতিহাসে এক ম্যাচে এটাই সবচেয়ে বেশি রানের বিশ্ব রেকর্ড। এমন রেকর্ডের ম্যাচে প্যাট কামিন্সের হায়দরাবাদ ৩১ রানে হারিয়েছে হার্দিক পান্ডিয়ার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে।
রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২৭৭ রান করে হায়দরাবাদ। আইপিএলের ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ দলীয় রান। আর তাতেই ভেঙে যায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর আগের রেকর্ডটি। ২০১৩ সালে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ২৬৩ রান করেছিল ব্যাঙ্গালুর। এই ম্যাচে হায়দরাবাদ ১৮টি এবং মুম্বাইর ২০টি মিলিয়ে সর্বমোট ছক্কা হয়েছে ৩৮টি। টি২০ ক্রিকেটের ইতিহাসে এক ম্যাচে এটাই সর্বোচ্চ ছক্কার বিশ^ রেকর্ড। আগের রেকর্ডটি ছিল আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগে। ২০১৮ সালে বাল্ক লিজেন্ড ও কাবুল জওয়ানানের ম্যাচে ৩৭টি ছক্কা হয়েছিল। 
হায়দরাবাদের ২৭৭ রানের জবাবে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৪৬ রান করে মুম্বাই। আইপিএলের ইতিহাসে ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসেও এটি সর্বোচ্চ দলীয় রান। ম্যাচের প্রথম দশ ওভারে ১৪৮ রান তুলেছিল হায়দরাবাদ। যা আইপিএলের এক ইনিংসে প্রথম দশ ওভারে কোনো দলের সর্বোচ্চ রান। পাওয়ার প্লে তে সর্বোচ্চ রানে নিজেদের রেকর্ড ভেঙেছে হায়দরাবাদ। মুম্বাইয়ের বিপক্ষে ৬ ওভারে ৮১ রান করে হায়দরাবাদ। ২০১৭ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে পাওয়ার প্লে তে ৭৯ রান করেছিল তারা।

হায়দরাবাদ ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি হয়েছে তিনটি। দক্ষিণ আফ্রিকার হেনরিখ ক্লাসেন ৪ চার ও ৭ ছক্কায় ৩৪ বলে অপরাজিত ৮০ রান করেন। এছাড়া অভিষেক শর্মা ৩ চার ও ৭ ছক্কায় ২৩ বলে ৬৩ এবং অস্ট্রেলিয়ার ট্রাভিস হেড ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ২৪ বলে ৬২ রান করেন। ম্যাচ সেরা হন অভিষেক শর্মা। মুম্বাইয়ের পক্ষে একমাত্র হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তিলক ভার্মা। ২ চার ও ৬ ছক্কায় ৩৪ বলে ৬৪ রান করেন তিনি।

এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার টিম ডেভিড ২ চার ও ৩ ছক্কায় ২২ বলে অপরাজিত ৪২, ইশান কিশান ১৩ বলে ৩৪, নামান ধীর ১৪ বলে ৩০ এবং রোহিত শর্মা ১২ বলে ২৬ রান করেন। এবারের আসরে হার দিয়ে মিশন শুরু করলেও মুম্বাইকে হারিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই জয়ের দেখা পেল হায়দরাবাদ। অন্যদিকে ২ ম্যাচের ২টিতেই হারল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই চূড়ান্ত ব্যর্থ হওয়ার পর মুখ খুলেছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক। হার্দিক পান্ডিয়া বলেন, ‘হায়দরাবাদ এত রান করবে তা বুঝতে পারিনি।

উইকেট ভালো ছিল। কত খারাপ বা কত ভালো বল করতে সেটা দেখা হয় না ২৭৭ রানের সময়। প্রতিপক্ষ দল যদি এই বিপুল রান করতে পারে তার মানে ওরা ভালো ব্যাটিং করেছে। ওদের বোলাররাও দারুণ বল করেছে। ম্যাচে পাঁচশ’র বেশি রান হয়েছে এবং উইকেট ব্যাটারদের পক্ষে ছিল। আমরা কিছু জিনিস হয়তো করতে পারতাম, তবে আমাকে বলতেই হবে আমাদের বোলিং আক্রমণ তরুণ, আমরা এখান থেকে শিখব। এতগুলো ছয় হলেও ওভার তো শেষ করতে হবে।’
অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচে গুজরাটের বিপক্ষে সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন পান্ডিয়া। এদিন তিনি পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেও কোনো পার্থক্য গড়তে পারেননি। ২০ বলে মাত্র ২৪ রান করেন। একটা চার ও একটা ছয় ছিল তাঁর ইনিংসে। বাকিগুলো ডট বল ও সিঙ্গলস নিয়ে করেন। বল হাতে তিনি ৪ ওভার বল করে ৪৬ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন। 
২ ম্যাচের দুটিতেই হারায় পয়েন্ট টেবিলের ৯ নম্বরে মুম্বাই। আর এক ম্যাচ জিতে টেবিলের তিনে হায়দরাবাদ। ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমানের দল চেন্নাই সুপার কিংস।

×