অনলাইন ডেস্ক ॥ রাঁচীতে রোহিত রাজ। সঙ্গী আবার অজিঙ্কা রাহানে। আর এই দু’জনের দাপটে তৃতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে নয় উইকেটে ৪৯৭ রানে ডিক্লেয়ার করল বিরাট কোহলির দল। জবাবে মন্দ আলোয় খেলা বন্ধের সময় দুই ওপেনারকে হারিয়ে রীতিমতো চাপে দক্ষিণ আফ্রিকা। মাত্র পাঁচ ওভারে ৯ রানে ডিন এলগার ও কুইন্টন ডি’কক ফিরে গিয়েছেন সাজঘরে। উইকেট নিয়েছেন যথাক্রমে মোহাম্মদ শামি ও উমেশ যাদব।
আজ রবিবার টেস্ট কেরিয়ারে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করলেন রোহিত শর্মা। আর সেটাও এল ছক্কা মেরে। এর আগে শতরানেও ছয় মেরে পৌঁছেছিলেন তিনি। দ্বিশতরানে পৌঁছতে নিলেন ২৪৯ বল। খেললেন রীতিমতো ঝড়ের গতিতে। শনিবারই তিন অঙ্কের রানে পৌঁছেছিলেন তিনি। আর দুরন্ত গতিতে এদিন সকালে প্রথম সেশনেই পৌঁছে গিয়েছিলেন দ্বিশতরানের দোরগোড়ায়। মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে ১৯৯ রানে থমকে ছিলেন তিনি। এই ফরম্যাটে তাঁর সর্বাধিক স্কোর এতদিন ছিল ১৭৭ রান। এই ইনিংসে তা টপকে গেলেন অনায়াসে। লাঞ্চের পর তৃতীয় ওভারেই ছয় মেরে পূর্ণ করলেন ডাবল সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ২১২ রানে ফিরলেন তিনি। কাগিসো রাবাডাকে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন এনগিডিকে। তাঁর ২৫৫ বলের ইনিংসে থাকল ২৮টি চার ও ছয়টি ছয়।
সকালে ড্রিংকসের আগে সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছিলেন অজিঙ্কা রাহানে। যা তাঁর টেস্ট কেরিয়ারের ১১তম শতরান। তাঁর সেঞ্চুরি এল ১৬৯ বলে, ১৪টি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে। মুম্বাইকরের ইনিংসে মুগ্ধ বিশেষজ্ঞরা। ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মঞ্জরেকর বলে উঠলেন, দীর্ঘদিন পর রাহানেকে এত ভাল ব্যাট করতে দেখছেন তিনি। সঙ্গী সুনীল গাভাস্কার বললেন, রাহানেকে রীতিমতো ছন্দে দেখাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত রাহানে থামলেন ১১৫ রানে। ১৯২ বলের ইনিংসে মারলেন ১৭টি চার ও একটি ছয়। তিন বছর পর টেস্টে শতরান পেলেন তিনি।
রোহিত-রাহানে জুটি চতুর্থ উইকেটে ২৬৭ রান যোগ করল। ৩৯ রানে তিন উইকেট পড়ার পর জুটি বেঁধেছিলেন দু’জনে। এই জুটি ভারতকে বড় রানের ভিত গড়ে দিল। প্রোটিয়া বোলাররাও মাঝে মাঝেই আলগা ডেলিভারি উপহার দিয়ে সেই লক্ষ্যে সাহায্য করলেন। ফিল্ডিংয়েও হল ওভারথ্রো। সব মিলিয়ে ফাফ ডু’প্লেসির দলকে ছন্নছাড়া দেখাল। রোহিত-রাহানে ফেরার পর রান পেলেন রবীন্দ্র জাদেজার (৫১), ঋদ্ধিমান সাহা (২৪), উমেশ যাদবরা (৩১)। উমেশের ১০ বলের ইনিংসে থাকল পাঁচটি ছক্কা। অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যান হলেন মহম্মদ শামি (১০) ও শাহবাজ নাদিম (১)। দক্ষিণ আফ্রিকার সফলতম বোলার হলেন অভিষেককারী জর্জ লিন্ডে। বাঁ-হাতি স্পিনার ১৩৩ রান দিয়ে নিলেন চার উইকেট। ৮৫ রানে তিন উইকেট নিলেন রাবাডা।
শনিবার তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিন তিন উইকেটে ২২৪ তুলেছিল ভারত। মন্দ আলোর জন্য ৫৮ ওভারের বেশি খেলা হয়নি। চায়ের বিরতির কিছুক্ষণ পরেই কালো মেঘে ছেয়ে যায় আকাশ। বেরিয়ে আসেন ক্রিকেটাররা। তার পর আর খেলা শুরু করা যায়নি। খেলা বন্ধের সময় ১১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন রোহিত শর্মা। এটি তাঁর টেস্ট কেরিয়ারের ষষ্ঠ শতরান। যার প্রতিটিই এসেছে ঘরের মাঠে। ওপেনার হিসেবে এটি তাঁর তিন নম্বর সেঞ্চুরি। বিশাখাপত্তনমে টেস্টে প্রথম বার ওপেন করতে নেমেছিলেন রোহিত। দুই ইনিংসেই করেন সেঞ্চুরি। পুণেয় রান পাননি। কিন্তু রাঁচীতে ওপেনার হিসেবে চতুর্থ ইনিংসে নেমে ফের পেলেন সেঞ্চুরি। এবং সেখানেই থামলেন না। পৌঁছে গেলেন দ্বিশতরানে।
শনিবার অপরাজিত ছিলেন অজিঙ্ক রাহানেও। ভারতের সহ-অধিনায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকেই ছন্দে আছেন। চলতি সিরিজের প্রথম দুই টেস্টে সে ভাবে সুযোগ পাননি বড় ইনিংস খেলার। তার মধ্যেও পুণে টেস্টে ৫৯ করেছিলেন। রাঁচীতে তিনি নেমেছিলেন কঠিন পরিস্থিতিতে। ৩৯ রানের মধ্যে ময়াঙ্ক আগরওয়াল, চেতেশ্বর পূজারা ও বিরাট কোহালি ফিরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে রোহিতের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেটে দলকে উদ্ধার করেন তিনি। ৮৩ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। সকালে আক্রমণাত্মক মেজাজেই শতরানে পৌঁছলেন রাহানে।
চলতি সিরিজের প্রথম দুই টেস্ট দাপটে জিতেছে ভারত। পুণেতেই সিরিজ ২-০ করে পকেটে পুরে ফেলেছে বিরাট কোহালির দল। রাঁচি টেস্ট যদিও নিছক নিয়মরক্ষার হচ্ছে না। কারণ, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চলছে। আর প্রত্যেক টেস্টের জন্যই থাকছে পয়েন্ট।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: