স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ষোলো বছর আগে ২০০০ সালে বাংলাদেশের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে খেলেই টেস্ট আঙ্গিনায় পা রাখে বাংলাদেশ। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভারতের মাটিতেই কোন টেস্ট খেলা হয়নি। ৯ ফেব্রুয়ারি সেই ‘ঐতিহাসিক’ টেস্টটি শুরু হবে। হায়দরাবাদে বাংলাদেশ-ভারত একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। ভারতে খেলতে রোমাঞ্চিত ক্রিকেটাররাও। ইনজুরি থেকে ফেরার চেষ্টা করছেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। জানিয়েছেন, ‘খেলা শুরুর আগে ফিট হয়ে যাবেন।’ সঙ্গে এও জানিয়েছেন, ‘আমি এবং আমরা সবাই এ রকম একটা ম্যাচ নিয়ে রোমাঞ্চিত।’
কেন রোমাঞ্চিত? সবারই তা জানা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে মাংসপেশিতে চোট পাওয়া ইমরুলও সেটিই জানালেন, ‘অবশ্যই যাচ্ছি। প্রতিটি খেলোয়াড় এমন সিরিজ খেলতে মুখিয়ে থাকে। কারণ এমন জায়গায় আমরা খুব বেশি খেলতে পারি না। আমাদের এমন সিরিজ খেলার সুযোগ আসে না। এমন একটা গোল্ডেন চান্স সবাই পেতে চাই।’ কিন্তু ইমরুলের ব্যথা কি ততদিনে পুরোপুরি সেরে উঠবে? শনিবার বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘ইমরুল কায়েসের চোটের জায়গায় আমরা এখানে (বাংলাদেশে) আবার স্ক্যান করিয়েছি। ওর এমআরআই রিপোর্টে গ্রেড ওয়ান চিড় ধরা পড়ে। ওর উন্নতির অগ্রগতি খুবই সন্তোষজনক। এভাবে যদি উন্নতি করতে থাকে তাহলে আমরা আশা করছি ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ওকে খেলায় ফিরিয়ে আনতে পারব।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে, ওর চোট যেহেতু মাংসপেশিতে, এই চোট ফিরে আসতে পারে। পুরোপুরি সুস্থ না হয়ে ফিরলে ওর আবার চোট পাওয়ার শঙ্কা থাকবে। এটা আমাদের সতর্কতার সাথে দেখতে হবে। পুনর্বাসন এভাবে চলতে থাকলে আশা করছি, সে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ফিরে আসবে। আমাদের ইমরুলের ব্যাপারটা আরেকটু চিন্তা করতে হবে। ওকে সময় দিতে হবে। পুরোপুরি সেরে না উঠে খেলায় ফেরার ঝুঁকি নিতে চাই না। আমরা যদি ওর সেরে উঠার প্রক্রিয়াকে ডিস্টার্ব করি, তাহলে এটা দেরি হয়ে যাবে। এখানে টিম ম্যানেজমেন্টকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওকে পুনর্বাসনের অধীনে রেখে নিয়ে যাবেন, নাকি প্রস্তুতি ম্যাচে খেলাবেন। এগুলো খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত। ও নিজেও চোট থেকে ফেরার পর প্রস্তুতি ম্যাচে খেলতে চাইতে পারে। ওটা খেলতে গেলে আবার আঘাত পেয়ে যেতে পারে। আমাদের সাজেশন একটাই, এবার যদি একই জায়গায় চোট পায় তাহলে দেড় থেকে দুই মাসের জন্য মাঠের বাইরে চলে যেতে হবে। তাহলে শ্রীলঙ্কা সফরও মিস করবে। আগে আমাদের সেটা থামাতে হবে। এটা টিম ম্যানেজমেন্টও জানে। ও ব্যাপারটাও জানে। সিদ্ধান্ত খেলোয়াড়কেই নিতে হবে। কারণ ব্যথা তো আর মাপা যায় না। পুরনো চোটের জায়গায় আবার চোট পেলে সমস্যা হতে পারে।’ দেবাশীষের কথাতেই ইমরুলের খেলা নিয়ে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা আছে। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে ভারতের মাটিতে খেলতে যে কোন ক্রিকেটার চাইবে। সেটি খানিক ব্যথা নিয়ে হলেও সম্ভবত। ইমরুলও না খেলার কোন কারণই খুঁজে পাচ্ছেন না। বলেছেন, ‘ব্যথা নাই। আগের মতো ব্যথা নাই। রানিং করলাম। সাইকেলিং করলাম। কোন রকম ব্যথা হয় নাই। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বললাম। খেলা ৯ তারিখ থেকে। আমার মনে হয়, খেলা শুরুর আগে ইনশাল্লাহ, আমি ফিট হয়ে যাব। এটা আসলে নির্ভর করছে আমার আর ফিজিও’র ওপর। ফিজিও যদি ফিটনেস নিয়ে ভাল খবর দেন, তাহলে হয়ত যাব (ভারত সফরে)। আর যদি সিলেক্ট না হই, সেটা আলাদা কথা। ফিজিও যদি ভাল বলেন, তাহলে সব ঠিক আছে। তিনি যদি ভাল বলেন, তবে প্রস্তুতি ম্যাচে খেলব। এখনও চার-পাঁচদিন সময় আছে। আমার মনে হয়, একদিন অনুশীলন করলে আরও ভাল কিছু হবে। আমি ফিট হয়ে উঠতে থাকব।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে সব ফরমেটেই খেলেছেন ইমরুল। তবে প্রথম টেস্টেই দ্রুত রান নিতে গিয়ে চোট পান। তাতে ইমরুলের অনেক খারাপও লেগেছে বলেই জানিয়েছেন, ‘সিরিজের মাঝপথে চলে আসা দুঃখজনক। কিন্তু ইনজুরিটা খেলারই অংশ। এটা মেনে নিতে হবে। আসলে আগে যা হয়েছে, তা এখন পুরনো ব্যাপার। এখন সামনের দিকে এগোতে হবে। সবসময়ই চেষ্টা করি ফিট থেকে খেলার। কিন্তু তারপরও ইনজুরিতে পড়লে খেলোয়াড়ের কিছু করার থাকে না। সবসময়ই চেষ্টা করব ফিট থাকতে।’
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: