ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জামায়াত নেতার মৃত্যু রাজনৈতিকভাবে না টানার অনুরোধ বিএনপির 

ফরহাদ হোসেন, লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ১৫:২৬, ৯ জুন ২০২৫

জামায়াত নেতার মৃত্যু রাজনৈতিকভাবে না টানার অনুরোধ বিএনপির 

লক্ষ্মীপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় জামায়াত নেতা কাউছার আহম্মদ মিলনের (৬০) মৃত্যুর ঘটনা রাজনৈতিকভাবে টেনে না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে রাজনৈতিক সহবস্থানের আহবান জানিয়েছে বিএনপি নেতারা। কারণ মাদক ও একটি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাটি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি বা জড়িতদের আইনগতভাবে বিচার হতে পারে। 


মঙ্গলবার (৯ জুন) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে জেলা শহরের গোডাউন রোড এলাকার বশিরভিলা হলরুমে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপি নেতারা এ আহবান জানায়।  প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাবুদ্দিন সাবু। 


শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, আমরা জামায়াতকে অনুরোধ জানিয়েছি ঘটনাটি যেন রাজনৈতিকভাবে না নেওয়া হয়। নিহত কাউছারের ভাই আরজু ছিলো যুবলীগের কর্মী।  আরজু মাদক ও তার ছেলে চুরির ঘটনায় জড়িত ছিল। সামাজিক এ অবক্ষয়ের এলাকাভিত্তিক মারামারির ঘটনা ঘটে। এ এতে স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন জড়িত। এটি সম্পুর্ণ এলাকার ঘটনা, রাজনৈতিক কোন ঘটনা নয়। জামায়াতের নেতারা আমাদেরকে কথা দিয়েছেন ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। অথবা ১-২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করবেন। কিন্তু তারা ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। তারা কথা দিয়ে কথা রাখেননি। 


তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক সুরুতহাল অনুযায়ী মৃত্যুটি স্বাভাবিক ছিল। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে সত্য ঘটনা জানা যাবে। স্বাভাবিক মৃত্যুকে একটি অস্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে রাজনৈতিক পক্ষ বিপক্ষে নিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ন এলাকাকে নষ্ট করার সুযোগ আমরা হতে দিতে চায় না। এটার দায়-দায়িত্ব উনাদেরকে (জামায়াত) বহন করতে হবে। যেহেতু উনারা কথা দিয়ে কথা রাখেননি। উনারা যেহেতু প্রকৃত ঘটনা থেকে সরে আসছে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য। এলোপাতাড়ি আমাদের নেতাকর্মীদের মামলায় দিয়ে এলাকায় এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, এটি যেকোন সময় একটি খারাপ পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে। ঘটনাটির ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসা পর্যন্ত ও তদন্তের পর সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি অথবা আইনগতভাবে বিচার হতে পারে।


তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি কোনভাবেই রাজনৈতিক ঘটনার দিকে নেবেন না। কারণ রাজনৈতিক ঘটনার দিকে নিতে গেলে সমাজের মধ্যে হানাহানি বেড়ে যাবে। একটি রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য হাফিজুর রহমান, নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির আহবায়ক মাহবুবুর রহমান লিটন, জেলা ওলামা দলের সভাপতি শাহ মোহাম্মদ এমরান, জেলা যুবদলের আহবায়ক রেজাউল করিম লিটন, যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মহসিন কবির স্বপন, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ও জেলা কৃষকদলের সভাপতি মাহবুব আলম মামুন প্রমুখ।


উল্লেখ্য, জামায়াতের ওলামা বিভাগের নেতা কাউছারের মৃত্যুর ঘটনায় ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রোববার (৮ জুন) সন্ধ্যায় নিহতের স্ত্রী শিল্পি আক্তার বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। এতে এজাহারভুক্তরা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কাউছার বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে হামলার শিকার হন। হামলায় জড়িতরা বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। পরে সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। 

আঁখি

আরো পড়ুন  

×