লজ্জাবতী গাছ, যা উদ্ভিদবিজ্ঞানে Mimosa pudica (মিমোসা পুডিকা) নামে পরিচিত, এটি একটি ছোট, কাঁটাযুক্ত গুল্ম। লজ্জাবতী গাছের প্রায় ৪০০টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে, যা Mimosa গণের অন্তর্ভুক্ত। এই প্রজাতিগুলি বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন আবহাওয়া ও বাসস্থানে পাওয়া যায়।
লজ্জাবতী গাছের পাতা চুপসে যায় কেন (লাজুকতার কারণ)?
লজ্জাবতী গাছের পাতায় স্পর্শ করলে চুপসে যাওয়ার বিষয়টি বেশ আকর্ষণীয়। এর পেছনে বিজ্ঞানের এক অসাধারণ প্রক্রিয়া কাজ করে। লজ্জাবতী গাছের পাতার কোষগুলোতে “টার্গর” নামক তরল থাকে। যখন আমরা পাতা স্পর্শ করি, তখন কোষগুলোতে বিদ্যুৎ প্রবাহের পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে “টার্গর” দ্রুত বাইরে বেরিয়ে যায় এবং কোষের ভেতরের চাপ কমে যায়। পাতার পেশিগুলো শিথিল হয়ে যায় এবং ভেঙে পড়ে। এটি একটি প্রতিরক্ষামূলক কৌশল, যা শিকারীদের বিরুদ্ধে গাছটিকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
লজ্জাবতী গাছের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য:
-
গাছটি সাধারণত ০.৫ থেকে ১.৫ মিটার (১.৫ থেকে ৫ ফুট) লম্বা হয়।
-
পাতাগুলি পালকযুক্ত ও সূক্ষ্মভাবে বিভক্ত; স্পর্শ করলে দ্রুত ভাঁজ হয়ে যায় এবং কয়েক মিনিট পরে আবার সমতল হয়।
-
ফুলগুলো ছোট, গোলাপি বা সাদা; পুরুষ গাছে গোলাপি-বেগুনি রঙের ফুল থাকে, নারী গাছে সাদা।
-
বীজ ছোট, শক্ত ও কালো। পুরুষ গাছ বীজ উৎপন্ন করে না।
লজ্জাবতী গাছের ঔষধি গুণাগুণ:
-
ব্রণ ও কালো দাগ দূর করতে: পাতার পেস্ট।
-
গাঁট ও স্নায়ুবিক ব্যথা, আর্থ্রাইটিসে: পাতার বা শিকড়ের নির্যাস।
-
মাথাব্যথায়: পাতার পেস্ট কপালে ব্যান্ডেজ করে ব্যবহার।
-
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে: পাতা বা বীজের নির্যাস।
-
কাশি ও বমি বমি ভাব: পাতা বা ফুলের নির্যাস।
-
প্রদাহ কমাতে ও ক্ষত নিরাময়ে: শিকড়ের নির্যাস কার্যকর।
উল্লেখ্য: লজ্জাবতী গাছ ব্যবহারের আগে একজন যোগ্যতাসম্পন্ন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। এটি কিছু ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে পারে এবং গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী নারীদের জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে।
সানজানা
