ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১

বিদ্যুতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

প্রকাশিত: ২০:২৩, ২৬ মে ২০২৪

বিদ্যুতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

.

রাজধানীসহ সারাদেশে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে বহুগুণ। গত কয়েক বছরে ব্যাপক বহুমুখী উন্নয়ন অগ্রগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনও। বর্তমানে প্রায় ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও গ্যাস-ডিজেল-এলএনজিসহ জ্বালানির স্বল্পতার কারণে সর্বোচ্চ প্রায় ১৫-১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেল-গ্যাস-এলএনজির দাম বেড়েছে। যুদ্ধের কারণে নিয়মিত আমদানিও ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে পর্যাপ্ত গ্যাসও পাওয়া যাচ্ছে না। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে করতে হচ্ছে লোডশেডিং। অন্যদিকে সঞ্চালন লাইনে বিঘ্ন ঘটায় প্রায়ই ঘটছে গ্রিড বিপর্যয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ বর্তমানে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করলেও দেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর আধুনিকায়ন না হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিপর্যয় এড়ানো যাচ্ছে না। অবস্থার অবসান ঘটাতে বিদ্যুৎ বিভাগ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং করতে যাচ্ছে। গোটা বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে স্বয়ংক্রিয় এবং নিরবচ্ছিন্ন করতে অদূর ভবিষ্যতে ব্যবহার হতে যাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স।

ইতোমধ্যেই ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি ডেসকো আধুনিক স্ক্যাডা কন্ট্রোল সিস্টেম ব্যবহার শুরু করেছে। এর আওতায় ঢাকার ৬৯টি সাবস্টেশনের কার্যক্রম একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন সরবরাহসহ পুরো বিতরণ ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। সম্ভব হচ্ছে উৎপাদন বিতরণের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা। ফলে কোথায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে এবং কেন তা জানা এবং তদনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। একইভাবে অদূর ভবিষ্যতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যবহার করা হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। উন্নত দেশগুলোতে এর ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়েছে ইতোমধ্যেই। এর মাধ্যমে কোন্ এলাকা বিদু্যুৎ বিচ্ছিন্ন হলো এবং কেন হলো তা জানা যাবে তাৎক্ষণিকভাবে। ফলে, সমস্যার সমাধান হবে দ্রুত। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিকার মিলবে স্বল্প সময়ে।

সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতে, নানা কারণে বিদ্যুতের গ্রিডে বিপর্যয় ঘটলেও সেটি সচল করার প্রক্রিয়া জটিল সময়সাপেক্ষ। সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক কারণ অনুসন্ধানের চেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় বিদ্যুৎ সরবরাহ সঞ্চালন প্রক্রিয়া সচল করার ওপর। দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন উৎপাদন অবকাঠামোগুলো অনেক পুরনো অনাধুনিক। চাহিদা অনুপাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন সরবরাহে ঘাটতিও রয়েছে বর্তমানে। স্বয়ংক্রিয় গ্রিড না থাকায় বিপর্যয়ের উৎস খুঁজে পেতেও বিলম্ব ঘটে। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত মানোন্নয়ন সংস্কার করা না হলে আগামীতে আরও বড় বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিদ্যুতের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার সম্ভব হলে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হতে পারে। এর পাশাপাশি জাতীয় গ্রিড বর্তমানের দুটির স্থলে অন্তত ৪টি করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞরা।

×