ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ২৯ মার্চ ২০২৪

ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি

.

দেশে জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন ওষুধের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। বিশেষ করে অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের দাম বেশি বেড়েছে। কারণ এসব ওষুধ রোগীদের নিয়মিত সেবন করতে হয়। সেই সুযোগে কোম্পানিগুলো ওইসব ওষুধের দাম বাড়াচ্ছে। ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির যে চিত্র জনকণ্ঠের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ স্বাভাবিক। চলতি বছরের শুরুথেকে আবারও ওষুধের বাজারে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। ২০ টাকার নাপা সিরাপ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকায়। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধের দাম। এমন পরিস্থিতিতে অন্যান্য খরচ কাটছাঁট করে চিকিৎসা খরচ চালাতে হচ্ছে মানুষকে। তবে ব্যবসায়ীরা ওষুধের দাম বৃদ্ধির জন্য গত বছরের মতো বছরও ডলারের দাম বৃদ্ধিকেই দায়ী করছেন। ওষুধ হোক আর অন্য কোনো পণ্য, দাম বাড়াতে ব্যবসায়ীদের কখনোই যুক্তির অভাব হয় না। 

ওষুধের দাম দফায় দফায় বাড়ার বিষয়টি মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। দাম বাড়ার কথা স্বীকার করেছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, বর্তমানে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। আর ওষুধের কাঁচামাল বিদেশ থেকে আনতে হয়। সে কারণে দামে কিছুটা সমন্বয় করা হয়েছে। তবে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম এক পয়সাও বাড়ানো হয়নি। ১১৭টি ওষুধের দাম সরকার আগে যা ঠিক করে রেখেছিল, সেগুলো আমরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি।

আমাদের প্রতিনিধির কাছে বেশি দাম দিয়ে ওষুধ কেনার কষ্টের কথা জানিয়েছেন সমাজের সাধারণ স্তরের নাগরিকরা। একজন তার দুঃখের কথা এভাবে জানালেন, চাল, ডাল, তেল, সবজি সব কিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। যে কোনো কিছুর দাম বাড়লে সেটা খাওয়া কমিয়ে দেই। তেলের দাম বাড়ার পর তেল কেনা কমিয়েছি। কিন্তু ওষুধের প্রয়োজনীয়তা কমাব কিভাবে?

দাম বাড়ানোর পক্ষেই সাফাই গাইলেন ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব। জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, ওষুধের কাঁচামাল আমদানির জন্য আগে এলসি খুলতে লাগত ডলারের বিপরীতে ৮০ টাকা। এখন যখন শিপমেন্ট এসে পৌঁছাচ্ছে তখন ডলারের দাম উঠেছে ১১৫ থেকে ১১৭ টাকায়। প্রতি ডলারে ৩০ টাকা করে বেশি দিতে হচ্ছে।

আমরা মনে করি, নিয়মিত বাজার তদারকির ব্যবস্থা না থাকলে ওষুধের দাম আরও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে সাধারণ মানুষ ওষুধ কেনার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। গত কয়েক বছরে এই খাতের উন্নতি বেশ দৃশ্যমান। তবে এভাবে অযৌক্তিকভাবে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এভাবে লাগামহীন যদি ওষুধের দাম বাড়তেই থাকে তা হলে সাধারণ রোগী, যারা স্বল্প আয়ের এবং প্রবীণ অবসরে আছেন তাদের অবস্থা কী হতে পারে। আমাদের প্রত্যাশা, সরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে সাধারণ মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করবে।

×