ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কার না করায় রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকে

নওগাঁয় স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মাণ

প্রকাশিত: ২০:৫৬, ২১ ডিসেম্বর ২০২০

নওগাঁয় স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মাণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ২০ ডিসেম্বর ॥ রাণীনগরে বিল অধ্যুষিত আতাইকুলা গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এসব কৃষকের প্রায় ২হাজার বিঘা ফসলি জমি রয়েছে বিল মুনছুরে। কিন্তু ধানের মৌসুমে বিলের জমি থেকে ধান কেটে নিয়ে আসার মতো রাস্তা না থাকায় তাদের উৎপাদন খরচ বেশি হতো। এ থেকে রক্ষা পেতে আতাইকুলাসহ আশপাশের গ্রামের শতাধিক কৃষক একত্রিত হয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করেছে। জানা গেছে, রানীনগর উপজেলার সবচেয়ে বড় বিল হলো এই বিল মুনছুর। বিলের আশপাশে রয়েছে প্রায় ২ হাজার বিঘা কৃষিজমি। জমিগুলো বছরের প্রায় ৬মাস পানিতে ডুবে থাকে। তাই কৃষকরা প্রধান ফসল হিসেবে বোরো ধান চাষ করে থাকে। এছাড়া বিলের আশপাশের উঁচু কিছু জমিতে বিভিন্ন রবি ফসলও চাষ করে থাকে। বিলের জমি থেকে ধান বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য আতাইকুলা গ্রামের বিশ্ববাঁধের তজের মোড় থেকে বড়ধর খাল পর্যন্ত একটি রাস্তা থাকলেও বছরের পর বছর রাস্তাটি সংস্কার না করায় তা জমিতে পরিণত হয়েছিল। রাস্তা থেকেও কৃষক ও গ্রামবাসী তা ব্যবহার করতে পারতেন না। রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমে ছয় মাস পানির নিচে ডুবে থাকে। যার কারণে তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। মাঠের মধ্যদিয়ে চলাচলের জন্য উপযুক্ত কোন রাস্তা না থাকায় কৃষকদের বেশি মজুরি দিয়ে ধান ঘরে তুলতে হতো। এতে করে উৎপাদন খরচও হতো দ্বিগুণ। শুধু ধান বহনই নয়, অন্যান্য কাজের জন্যও গ্রামবাসী বিভিন্ন কাজে এই রাস্তাটি ব্যবহার করতে পারতেন না। তাই আতাইকুলা গ্রামের বিশেষ করে কৃষকরা স্থানীয়ভাবে অর্থের যোগান দিয়ে এই রাস্তাটি মাটি কেটে উঁচু করেছে। যেন আসন্ন বোরো মৌসুমে রাস্তাটি ব্যবহার করা যায়। কিন্তু বর্ষা মৌসুম আসার আগেই জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তার দুই পাশে ব্লক দিয়ে পাকা না করলে এটি আবার নষ্ট হয়ে যাবে। আতাইকুলা গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা রনজিত সাহা, রকেট মণ্ডলসহ অনেকেই বলেন, রাস্তা না থাকায় জমি থেকে ধান বহন খুব কষ্ট ও খরচ বেশি। এই চরম দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে আমরা কৃষকরা নিজেদের অর্থ ও শ্রম দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নতুন করে মাটি কেটে তৈরি করেছি। তাই সরকার এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিকট আমাদের আকুল আবেদন-রাস্তাটি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করার জন্য তারা দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তা না হলে আবার বর্ষার পানিতে তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে। তারা আরও বলেন, দেড় কিলোমিটার রাস্তাটি নতুন করে সংস্কার করার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে এলাকাবাসী বার বার ধর্র্ণা দিয়েও কোন লাভ হয়নি। শুধু আশ্বাসের বাণী শুনিয়েছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করেছে। এটি খুব ভাল কাজ। রাস্তাটি স্থায়ী করার জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠব। উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মোঃ শহীদুল হক বলেন, রাস্তাটি পরিদর্শন করা হয়েছে। কিন্তু রাস্তাটির নিবন্ধন এখনও হয়নি। তবে রাস্তাটি দ্রুত নিবন্ধন করে এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের পরামর্শে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণন করা হবে।
×