ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বদলে যাচ্ছে নাম ও পদবি

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ১১ আগস্ট ২০২০

বদলে যাচ্ছে নাম ও পদবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্থানীয় সরকার পরিষদের নাম ও পদবি বদলে যাচ্ছে। একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচন আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনের জন্য আলাদা আলাদা আইন ও বিধিমালা রয়েছে। এগুলো সংস্কার করে স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচন আইন ২০২০ নামে আলাদা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার পরিষদের নাম ও পদবি বদলের প্রস্তাব করা হয়েছে। সোমবার কমিশনের সভায় আইনের খসড়া ও আইন বাংলায় করার বিষয় আলোচনার জন্য তোলা হয়। কমিশনের বৈঠক শেষে ইসি সচিব মোঃ আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বাংলায় স্থানীয় সরকার পরিষদ আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এটি কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। আগামী ২৩ ও ২৪ তারিখে কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে কমিশনের মতামতের ভিত্তিতে এটি তৈরি করে কমিশনের ওয়েবসাইটসহ বিভিন্ন মহলে মতামতের জন্য পাঠানো হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আইন সংস্কার ও নির্বাচন পরিচালনা আইন বাংলায় করতে গিয়ে বিদ্যমান আইনে থাকা সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় ‘মহানগর সভা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একইভাবে পৌরসভাকে ‘নগর সভা’ এবং ইউনিয়ন পরিষদকে ‘পল্লী পরিষদ’ ও ওয়ার্ডকে মহল্লা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের নাম অপরিবর্তিত থাকছে। সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়র এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের পদবিও পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদবি বদলে ‘আধিকারিক’ ও পৌরসভার মেয়রদের পদবি ‘পুরাধ্যক্ষ’ বা নগরপিতা, কাউন্সিলরকে পরিষদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানকে উপজেলা পরিষদের প্রধান, উপ-প্রধান নামে বাংলায় রূপান্তর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের পরিষদ প্রধান এবং সদস্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় পৃথক পাঁচটি বিধিমালার অধীনে পরিচালিত হয় স্থানীয় সরকার পরিষদের এই নির্বাচনগুলো। এগুলো অভিন্ন স্বতন্ত্র আইনের অধীনে পরিচালনার লক্ষ্যে এই আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। আইনটি প্রণয়নের যৌক্তিকতা তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনের খসড়ায় বলা হয়, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত রয়েছে। যার কারণে স্বতন্ত্র আইন প্রণয়ন সমীচীন ও প্রয়োজন। এতে আরও বলা হয়, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯, উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮, জেলা পরিষদ আইন, ২০০০, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ ও স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিভিন্ন অধ্যায় ও ধারা সংযুক্ত রয়েছে। ওইসব আইন থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত বিধানাবলি আলাদা করতে স্বতন্ত্র আইন করা হচ্ছে। অভিন্ন নির্বাচন আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে ইসির সিনিয়র সচিব মোঃ আলমগীর বলেন, বর্তমানে একেক প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে একেক ধরনের বিধান আছে। আমরা স্থানীয় সরকারের সব প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন পরিচালনায় একই ছাতার মধ্যে আনতে যাচ্ছি। এতে বিদ্যমান আইন ও বিধির সমন্বয় ঘটানো হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের নাম ও পদবি পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, অনেক ইংরেজী নামের বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে। এ কারণে নামে পরিবর্তন আসছে। এছাড়া আইনটি সংসদে পাস হবে। সংসদই এসব নাম ও পদবি ঠিক করবে। জানা গেছে, খসড়ায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সব নির্বাচনে একই বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আইন ও বিধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের কোন স্তরে প্রথমবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে গঠনের ১৮০ দিনের মধ্যে, মেয়াদ উত্তীর্ণের ক্ষেত্রে উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে দ্বৈব-দুর্বিপাকজনিত কারণে নির্বাচন কমিশন তার সুবিধাজনক সময়ে তারিখ নির্ধারণ করতে পারে। এক্ষেত্রে কমিশনকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার প্রয়োজন পড়বে না। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী দ্বৈব-দুর্বিপাকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কোন নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানাতে হয়। যার কারণে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠান সময়মতো করতে না পারার বিষয়টি কমিশন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে সম্প্রতি চিঠি দিয়ে জানাতে হয়েছে।
×