ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিরাজ করছে স্থবিরতা

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ৫ এপ্রিল ২০২০

  সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিরাজ  করছে স্থবিরতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর অন্যতম বিনোদন স্থল শিল্পকলা একাডেমি। নাটক, গান, নাচ, আর্ট’সহ নানাবিধ সাংস্কৃতিক কর্মকন্ডে সরব থাকে সব সময়। অন্যান্য সময় ছুটির দিন বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির নাট্যমঞ্চ বা জাতীয় জাদুঘর অথবা রবীন্দ্র সরোবরে যেমন ভিড় জমতো, এখন তার কিছুই নেই। মঞ্চে নেই নাটকের দৃশ্য, নৃত্যশিল্পীর নূপুরের নিক্কন অথবা বাচিক শিল্পীদের কণ্ঠের মধুরতা। সবকিছুই যেন নিশ্চুপ। রাজধানীর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জায়গা ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্যই। করোনাভাইরাসের কারণে একদিকে যেমন দর্শক বের হচ্ছেন না ঘর থেকে, ঠিক তেমনি জনসমাগম এড়াতে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রেখেছে তাদের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কার্যক্রম বিভিন্ন মেয়াদে স্থগিত করা হয়েছে। সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে বিভিন্ন আর্ট গ্যালারিও। সেইসঙ্গে দেশের সব প্রত্নস্থল ও প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরও পর্যটক এবং দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অধীনে দেশে ৫১৯টি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ও ২১টি প্রতœতাত্ত্বিক জাদুঘর রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিও বন্ধ রেখেছে তাদের সব মিলনায়তন। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সাময়িকভাবে সাধারণ দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। প্রত্নস্থল ও প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর বন্ধ এবং নাট্যাঙ্গনের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনগুলো সব নাটকের শ্যুটিং স্থগিত করেছে। একইসঙ্গে মঞ্চে নাট্য প্রদর্শনীসহ নাট্যদলগুলোর আয়োজনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। এ প্রসঙ্গে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজিদ জানান, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নাট্য প্রদর্শনী বাতিল করা হয়েছে। এ মুহূর্তে আমরাও মনে করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শিল্পকলা একাডেমির হল বরাদ্দ নেব না। এ বিষয়ে নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট নাট্যদলগুলোকেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সারাদেশের নাট্যদলগুলোকেও গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের পক্ষ থেকে এ পরিস্থিতিতে নাট্য প্রদর্শনী না করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর অভিভাবক সংগঠন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সৃষ্ট অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত জোটভুক্ত সব সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে অনুষ্ঠান আয়োজনে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এমন অবস্থায় যেন স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের গোটা সাংস্কৃতিক অঙ্গন। কোথাও নেই কোন ধরনের আয়োজন। তবে স্থবিরতা থেকে জনগণের সুরক্ষাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন সবাই। এ প্রসঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জনস্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখে সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন থেকে বিরতি থাকার জন্য সব জেলা ও উপজেলা সাংস্কৃতিক জোট এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকার নির্দেশিত সকল নিয়ম মেনে দেশের দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রমনা বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজন কিংবা চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা বৈশাখ উদযাপনের প্রধান দুই আয়োজন একবার বন্ধ।
×