ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধাবস্থা, বাংলাদেশীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ

প্রকাশিত: ১১:২৭, ১৬ জানুয়ারি ২০২০

মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধাবস্থা, বাংলাদেশীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ

ফিরোজ মান্না ॥ যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে পররাষ্ট্র এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বাংলাদেশী কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের প্রায় ৬০ লাখ কর্মী কাজ করছেন। লিবিয়ার অভ্যন্তরে বিবদমান গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে ব্যাপক গোলাগুলিসহ বিমান হামলা চালানো হয়েছে। দেশটিতে একজন বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। আরও কয়েকজন বাংলাদেশী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর দেশটিতে বাংলাদেশী কর্মীদের নিরাপদে থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব সেলিম রেজা জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশে ভয়াবহ কিছু ঘটেনি। তবে আমরা সব দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখছি। যদি পরিস্থিতি জটিল হয় তার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে। তাছাড়া ইরাক, সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশের সরকার প্রবাসী কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন আছে। আমরা দেশগুলোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। তবে নতুন করে কোন ইরাক ও লিবিয়াতে কর্মী পাঠানো হবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার তারা কর্মী নিয়োগের চাহিদা দেবে। বর্তমান পরিস্থিতি দীর্ঘ সময়ের জন্য হলে ভবিষ্যতে কি দাঁড়ায় সেটা পরে নির্ধারণ করা হবে। এদিকে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস এ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিআইপিএসএস) মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উত্তেজনা যদি যুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়, তাহলে তার প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়বে। বিআইপিএসএস’র নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিষ্ঠানটির বিশ্লেষণে বলা হয়, ওই অঞ্চলে অন্তত ৬০ লাখ অভিবাসী কর্মী কাজ করছেন। যদি যুদ্ধ শুরু হয় তাহলে প্রথমেই বাংলাদেশের কর্মীরা ঝুঁকির মুখে পড়বেন। ফলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা রেমিটেন্সের প্রবাহে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদী হলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে। তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাবে। এ কারণেই যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে পারবে না বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, লিবিয়া পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ত্রিপলিসহ লিবিয়ার বিভিন্ন শহরে বসবাসরত প্রবাসীদের স্ব স্ব নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে এবং যে কোন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে দূতাবাসের সব সেবা গ্রহণ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সেবাসমূহ দূতাবাসের নিম্নোক্ত মোবাইল ও ই-মেইলে যোগাযোগের মাধ্যমে পাওয়া যাবে। মোবাইল: +২১৮৯১৬৯৯৪২০২, +২১৮৯১৬৯৯৪২০৭ (বিবিধ কল্যাণ-সংক্রান্ত), +২১৮৯১০০১৩৯৬৮ (পাসপোর্ট সংক্রান্ত)। ই-মেইল [email protected], [email protected] । এছাড়াও স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার জন্য আগ্রহী প্রবাসীদের দূতাবাসের ওয়েবসাইটের ঠিকানায় সরাসরি অনলাইনে নিবন্ধন অথবা সব তথ্য উপরোক্ত ই-মেইলে করে জানানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। bangladeshembassylibya.com/registration.html। লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সব অভিবাসীর কনস্যুলার ও কল্যাণমূলক সেবা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
×