স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, এখন থেকে সভা-সমাবেশ করার জন্য প্রশাসনের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, এখন থেকে পুলিশ মামলার আসামি করলে আদালতে গিয়ে হাজিরা দেয়ারও দরকার নেই।
বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শনিবার রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে নগরীর মালোপাড়ায় মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, আন্দোলন আমাদের করতে হবে এবং মনে রাখতে হবেÑএই যে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে, একটু দর কষাকষি করে, রাস্তায় না অফিসের বারান্দায়, এটা পরিহার করতে হবে। আমাদের সাংগঠনিক অধিকার আমরা সভা-সমাবেশ করব। অন্যায়ের প্রতিবাদ করব। এই রাজপথ সরকারকে ইজারা দেয়া হয়নি। এই রাজপথ জনগণের। সেই রাজপথে হাঁটার অধিকার জনগণের আছে। সমাবেশ করার অধিকার আছে এবং আন্দোলন সংগ্রাম, মিছিল-মিটিং চলবে। এর পর থেকে সরকারের কোন অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই। সরকারের অনুমতি নিয়ে কখনও আন্দোলন হয় না।
গয়েশ্বর বলেন, প্রশাসনে যারা আছেন, এই সরকারের সকল কথা আমাদের শোনার দরকার নেই। যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তাদেরকে সরকার বলে মানবার আমাদের দরকার নেই। যারা চাকরি করেন, তারা সরকার মানতে পারেন। কারণ, সরকারী ট্রেজারির চেক বইতে সাইন করেন। সেই কারণে তারা মানতে পারেন। কিন্তু জনগণ মানে না। চাকরির জায়গায় চাকরি করুন, জনগণের মুখোমুখি হবেন না। আমাদের কর্মী, আমাদের নেতাদের গায়ে আঘাত করার চেষ্টা করবেন না। আমরা দীর্ঘকাল আঘাত সহ্য করব, মার খাবÑ এমন কোন প্রতিশ্রুতি আমরা দেইনি।
পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, মামলা যত পারেন দেন, মামলার ভয় করি না। আমার মৃত্যু অনিবার্য। আমি কালকেও মারা যেতে পারি। কিছুক্ষণ পরেও মারা যেতে পারি। আমার মৃত্যুই যখন আমি রোধ করতে পারব না, তখন জেলখানার ভয় দেখাবেন না। এর পর থেকে যত মামলাই দিক, আর কোন কোর্টের বারান্দায় হাজিরা নয়। যা ফয়সালা হবে, রাস্তায় ফয়সালা হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হোন, যা আছে, যতটুকু আছেÑ তাই নিয়েই আন্দোলন করতে হবে। প্রস্তুতি নিতে নিতে আমার জীবন শেষ। আন্দোলন কখনও প্রস্তুতি নিয়ে হয় না। আন্দোলনে মনোবলের প্রয়োজন। যাদের শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ, তারা বিশ্রামে থাক। যারা ভয় পান তাদেরকে ডাকাডাকি করার দরকার নেই। যাদের সাহস আছে, তার সংখ্যা কম হলেও কিছু হয় না। আমরা ভয় পাই বলেই ওরা আমাদেরকে ভয় দেখায়। আমরা যদি পাল্টা ভয় দেখাই, তাহলে ওরাও কিন্তু গর্ত থেকে বের হতে দুইবার, তিনবার, চারবার, পাঁচবার চিন্তা করবে।
গয়েশ্বর বলেন, আমাদের ওই জায়গায় পৌঁছাতে হবে। আর ওই জায়গায় যেতে হলে কী করতে হবে? রাস্তা দখল করতে হবে। রাস্তায় আমরা থাকব, আমাদের বাইরে কেউ রাস্তায় থাকবে না। বিএনপির কারাবন্দী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে গয়েশ্বর বলেন, খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য করুণানির্ভর থাকার প্রয়োজন নেই। জামিনের জন্য কোর্টের বারান্দায় যাওয়াÑখালেদা জিয়াকে অপমান করা। প্যারোলেও জামিনের দরকার নেই। রাজপথেই ফয়সালা হবে খালেদা জিয়ার মুক্তি।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। আরও বক্তব্য দেন জেলা কমিটির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, মহানগর সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: