ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধান দুই সড়কে রিক্সা বন্ধ করায় শৃঙ্খলা ফিরছে যান চলাচলে

প্রকাশিত: ১০:২১, ৮ জুলাই ২০১৯

 প্রধান দুই সড়কে রিক্সা বন্ধ করায় শৃঙ্খলা ফিরছে যান চলাচলে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর প্রধান দু’টি সড়কে রিক্সা চলাচল বন্ধ হওয়ায় বেজায় খুশি রাস্তায় চলাচলকারী নাগরিকগণ। প্রাথমিকভাবে শুরু হওয়া এসব সড়কের বাইরেও রাজধানীর প্রধান সকল সড়কে রিক্সা চলাচল সীমিত করতেও অনুরোধ জানাচ্ছেন রাস্তায় চলাচলকারীরা। অযান্ত্রিক যানবাহন মূল সড়ক থেকে সরিয়ে গলিতে নেয়ায় সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ নাগরিকগণ। তবে এসব রিক্সা মূল সড়ক থেকে গলির সড়কে ভিড় করেছে। রাজধানীতে বহু বছর পর প্রথমবারের মতো অনেকটা নির্বিঘ্নে বাস প্রাইভেটকারসহ সকল প্রকার যানবাহন এসব রোডে অনেকটা বিরতিহীনভাবে চলাচল করতে দেখা গেছে। সাময়িক সমস্যা হলেও প্রধান সড়কে রিক্সা বন্ধের জন্য এ কষ্টও মানতে রাজি- বলছেন যাত্রীরা। মূলত সড়ক পথে শৃঙ্খলা ফেরাতে দুই সিটি কর্পোরেশনের নেয়া উদ্যোগকে নাগরিকগণ স্বাগত জানিয়েছেন। একইসঙ্গে এসব রুটে তুলনামূলক বেশিসংখ্যক বাসের ব্যবস্থা করতেও সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন সাধারণ নাগরিকগণ। সরেজমিনে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে কুড়িল বিশ্বরোড রামপুরা খিলগাঁও থেকে মালিবাগ হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত রোডে রিক্সা চলাচল বন্ধ করার কথা থাকলেও মালিবাগ পর্যন্ত রোডটিতে রিক্সা চলাচল কার্যকরভাবে বন্ধ থাকে। মালিবাগ থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত রিক্সা চলাচল করতে দেখা গেছে। নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পর থেকে যাত্রীদের পরিবহনের জন্য বাস চাহিদার তুলনায় কিছুটা কম। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, গাবতলী থেকে মিরপুর রোড হয়ে আজিমপুর ও সায়েন্সল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত এবং কুড়িল থেকে বাড্ডা, রামপুরা, খিলগাঁও হয়ে মালিবাগ পর্যন্ত প্রধান সড়কে রিক্সা চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে অবৈধ ভ্যান, অটোরিক্সাসহ অবৈধ এবং অনুমোদনবিহীন অন্য যানবাহনও প্রধান দুটি সড়কে চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ৭ জুলাই সকাল থেকেই প্রধান ২ সড়কে দুই সিটি কর্পোরেশনের যৌথ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে স্থানীয় সকল থানার পুলিশ। কনস্টেবল থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পদের কর্মকর্তাকে এ দুই সড়কে রিক্সা বন্ধে কাজ করতে দেখা গেছে। ফলে এসব সড়কে যান চলাচলে অনেকটা শৃঙ্খলা ফিরে আসতে শুরু করেছে। মূলত রিক্সা না চলাচল করায় যানবাহনের গতিও অনেকটা ফিরে এসেছে। এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ ঘোষণা বাস্তবায়নে ২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছে। ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মুনিরুজ্জামান জনকণ্ঠকে বলেন, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সাইন্সল্যাব থেকে ধানম-ি রাপা প্লাজা পর্যন্ত এলাকার রিক্সাসহ সকল প্রকার অবৈধ যানবাহনের চলাচল বন্ধের জন্য ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলাম। এর মধ্যে কলাবাগান থেকে ধানম-ি এলাকায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল থাকার মানবিক দিক বিবেচনায় রাস্তা অতিক্রম করে ওপারে ধানম-ি এলাকায় রিক্সা যেতে সহায়তা করেছে। তবে কোন রিক্সাতেই মূল সড়কে চলাচল করতে দেয়া হয়নি। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কোন রিক্সা মূল সড়কে চলাচল করলেও আনসার দিয়ে রিক্সাগুলোকে শাখা সড়কে চলাচলের জন্য ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের এ অভিযান রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত একটানা চলবে। অপরদিকে শাহবাগ থেকে সাইন্সল্যাব হয়ে নিউমার্কেট হয়ে আজিমপুর পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংস্থাটির জোন ১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, এই এলাকায় রিক্সামুক্ত করতে নেয়া উদ্যোগ বাস্তবায়নে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছি। প্রাথমিকভাবে কোন সমস্যাই চোখে পড়েনি। প্রায় সকল রিক্সাই নিয়ম মেনে মূল সড়ক ছেড়ে বিকল্প সড়কে চলাচল করেছে। তবে যারা জানেন না তাদের বিকল্প সড়কে চলাচলের নির্দেশনা মেনে চলতে দেখা গেছে। তিনি বলেন, নিউমার্কেট থেকে ধানম-ি এলাকায় বা যেসব সড়তে পৃথক রিক্সা লেন রয়েছে সেসব সড়কে রিক্সা চলাচল করতে দেয়া হয়েছে। এর বাইরে মূল সড়কে কোন রিক্সাই চলতে দেয়া হয়নি। উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই রাজধানীর নির্দিষ্ট মূল সড়কে রিক্সা চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। প্রাথমিকভাবে ডিটিসিএর (ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কন্ট্রোল অথরিটি) বৈঠক এই রুটগুলোতে রিক্সাসহ অন্যান্য অবৈধ ও অননুমোদিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৬ জুলাই শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর লক্ষ্যে ডিএনসিসি আওতাধীন কুড়িল থেকে মালিবাগ এবং গাবতলী থেকে আসাদগেট পর্যন্ত প্রধান সড়কে রিক্সা চলাচল না করার জন্য রিক্সা মালিক, চালকদের প্রতি আহ্বান জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম।
×