ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

’১৭ সালে রেকর্ড সংখ্যক কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯

’১৭ সালে রেকর্ড সংখ্যক কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান

ফিরোজ মান্না ॥ তিন বছরের মধ্যে গত বছর সবচেয়ে কম সংখ্যক কর্মী বিদেশে চাকরি নিয়ে গেছেন। অথচ ২০১৭ সালে রেকর্ড সংখ্যক কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। ওই বছর ১০ লাখ ৮ হাজার কর্মী বিভিন্ন দেশে চাকরি পেয়েছেন। আর ২০১৮ সালে বিদেশে চাকরি পেয়েছেন মাত্র ৭ লাখ ৩৪ হাজার ১৮১ জন। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে বিদেশে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮১৯ জন কর্মী কম চাকরি পেয়েছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলছে, বিভিন্ন শ্রমবাজারে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। টার্গেটের চেয়ে অনেক কম কর্মী নিয়োগ হওয়ায় মন্ত্রণালয়ের কোন ত্রুটি নেই। শ্রমবাজারগুলোতেই বড় সমস্যা হয়েছে। মালয়েশিয়া হঠাৎ করে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে। সৌদি আরব কর্মী নিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে কর্মী নিয়োগ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের হিসাবে বলা হয়েছে, গত তিন বছরের মধ্যে ২০১৮ সালে সবচেয়ে কম সংখ্যক কর্মী চাকরি পেয়েছে। ২০১৭ সালে সৌদি আরবে বেশিসংখ্যক কর্মী নিয়োগ পেয়েছে। এরপরেই জর্দান ও ওমানে কর্মসংস্থান হয়। ২০১৮ সালে ওই বাজারগুলোতে কর্মী নিয়োগের পরিমাণ অনেক কমে গেছে। তাছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে শ্রমবাজারে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। সমস্যা দূর না হওয়ার কারণেও কর্মী নিয়োগ কম হয়েছে। যদিও মন্ত্রণালয় সমস্যা থাকা দেশগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় আলাপ-আলোচনা চালিয়ে গেছে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। প্রতিটি দেশ শুধু আশা জাগিয়েছে। দেশগুলোর প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সফর করে আশ্বাসও দিয়েছিল শ্রমবাজার খুলে দেয়ার। তারা শুধু কথার কথাই বলেছে কাজের কাজ কিছু হয়নি। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের জন্য অভিবাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দেশের মানুষই দেশের সম্পদ। তারা বিশ্বের ১৬৫টি দেশে শ্রম ঘাম দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশে পাঠাচ্ছেন। তাদের টাকায় দেশের অর্থনীতি প্রতিনিয়ত সুসংহত হচ্ছে। অভিবাসন খাতকে দেশের অন্যতম প্রধান খাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোট ১০ লাখ ৮ হাজার কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। ২০১৭ সালেই প্রথম এত বিপুল সংখ্যক কর্মী বিদেশে চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে শ্রমবাজার নেমে যাওয়ায় মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করছে। অভিবাসন ব্যয়সহ নানা বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করা হচ্ছে। মানবাধিকার ও অভিবাসন নিয়ে কাজ করেন এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ হলে তারা বলেন, ২০১৭ সালে সংখ্যার দিক থেকে বেশি কর্মী পাঠানোর রেকর্ড হলেও কর্মীদের সুরক্ষার দিকটি ছিল উপেক্ষিত। ২০১৮ সালেও কর্মী সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয়নি। এ কারণেও কর্মীরা বিদেশে চাকরি নিয়ে যেতে আগ্রহী কম হয়েছে। বিভিন্ন দেশে কর্মীরা নানারকম অসুবিধার মধ্যে থাকলেও তাদের বিষয়ে তেমন কোন নজর নেই মন্ত্রণালয়ের। এটা যেমন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের থাকা উচিত তেমনই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও।
×