স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১ পোল্ডারের নির্মিত ৩২ টি স্লুইস গেট এখন এ অঞ্চলের কৃষকদের গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। স্লুইস গেটগুলো যথাযথ কাজ না করায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা আর শুষ্ক মৌসুমে পানি সঙ্কটের চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত গেট, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী পানি ওঠা-নামা না করা এবং গেট আটকে মাছ চাষ করায় উপকারের পরিবর্তে এখন ক্ষতি হচ্ছে। চাষাবাদের স্বার্থে দ্রুত স্লুইস গেটগুলো যথাযথ সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
জানা গেছে, এ উপজেলার চারদিক দিয়ে বেষ্টিত ৩৫/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধে ছোট বড় মিলিয়ে ৩২টি স্লুইস গেট রয়েছে। চাষাবাদের স্বার্থে ১৯৮৪ সালে নির্মিত বলেশ্বর ও ভোলা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খালগুলোকে বাঁধ দিয়ে স্লুইস গেটের মাধ্যমে পানি নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত দরজা থাকায় পানি প্রবাহের গতি কমে যায়। যার ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য রেকর্ডীয় খাল ইতোমধ্যে ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রভাবশালীরা তাতে ঘর বাড়ি নির্মাণসহ মাছ চাষের নামে দখল করে নিয়েছে। পাশাপাশি বালু দস্যুদের মাধ্যমে বিভিন্ন খাল-বিল, ডোবা নালা ভরাট করে ফেলায় কৃষকদের নিশ্বাস একপ্রকার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দু একটি জল কপাট থেকে সামান্য পানি প্রবেশ করলেও তা খালের মাথা পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না। আবার দখল বাণিজ্যের কারণে সচল থাকা গেটগুলো কৃষকদের কোন উপকারে আসছে না। অন্যদিকে গেটগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কতিপয় ব্যক্তি গেট বন্ধ করে মাছ শিকার করায় ভোগান্তি বাড়ছে।
অভিযোগ পাউবোর নজরদারির অভাবে স্লুইস গেটগুলো একপ্রকার বন্ধ থাকে। উপজেলার খোন্তাকাটা, তাফালবাড়ি, চালরায়েন্দা, ধানসাগর, জিলবুনিয়া এলাকার কয়েকজন কৃষক বলেন, চলতি আমন মৌসুমে এ পর্যন্ত তারা বীজতলা তৈরি করতে পারেননি। দু চারজন ফেললেও বৃষ্টির কারণে তা পচনের আশঙ্কা রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি, শুষ্ক মৌসুমে পানি সঙ্কটের কারণে সঠিক ভাবে চাষাবাদ করতে পারছে না বলে তাদের অভিযোগ। এক প্রকার উভয় সঙ্কটে উপজেলার কৃষকেরা।
এ বিষয় উপজেলা কর্মকর্তা সৌমিত্র সরকার বলেন, স্লুইস গেট সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমন্বয়ে এক সভা করা হয়েছে। এতে পাউবোর জেলা কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ আলোচনা হয়েছে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি মনে করেন।