স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাসের ধাক্কায় এক স্কুল পড়ুয়া শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সবুজবাগে সড়ক দুর্ঘটনায় খালাত ভাই-বোন নিহত হয়েছে। কদমতলীতে স্ত্রী ও তার দুই সন্তানকে ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়েছে এক পাষ-। উত্তরখানে এক কিশোরীকে (১৫) ধর্ষণের অভিযোগে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে কুতুবখালী ফ্লাইওভারে বাসের ধাক্কায় নাঈম (৯) নামে এক স্কুলপড়ুয়া শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নাঈম কুতুবখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছিল। তার বাবার নাম আবু জাফর। ওই এলাকার দাগুখান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে তাদের বাসা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুতুবখালী ফ্লাইওভারে ঘুড়ি ওড়ানোর সময় চলন্ত বাসের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নিচে চাপা পড়ে নাঈম। পরে পথচারীরা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনে। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে তার বাবা-মা হাসপাতালে ছুটে আসেন। স্বজনের কান্নায় হাসপাতালের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। নিহতের পরিবার জানান, দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়।
এদিকে বুধবার মধ্যরাতে রাজধানীর সবুজবাগে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। নিহতরা হচ্ছেন রিমন (২৫) ও তার খালাত বোন সাদিয়া আহমেদ সারিন (২৬)। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে তাদের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সবুজবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসানুজ্জামান জানান, বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সবুজবাগ বৌদ্ধমন্দির সংলগ্ন রাস্তায় মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন রিমন। তার পেছনে বসা ছিলেন খালাত বোন সাদিয়া। এ সময় সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি তাদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে তারা মোটরসাইকেল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের দ্রুত উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জানান, তারা পৃথক দুটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এসআই হাসানুজ্জামান জানান, নিহত রিমনের পিতার নাম মোঃ মহসিন। সবজুবাগ বাসাবো এলাকার ৩৪/বি নম্বর বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত সে। আর নিহত সাদিয়ার বাবার নাম মোঃ শামছুদ্দিন আহমেদ খোকন। দক্ষিণ বাসাবো এলাকার ১৭ নম্বর বাড়িতে থাকত সে।
এক পাষ- স্বামীর নৃশংসতা
রাজধানীর কদমতলীতে স্ত্রী ও তার দুই সন্তানকে ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়েছে এক পাষা-। আহতরা হচ্ছেন ময়না বেগম (৩০), তার ছেলে মানিক (১০) ও মেয়ে বিউটি (৭)। পরে আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত শিশুদের মামা বিজয় জানান, কদমতলী নবীনবাগের বাগানবাড়িতে ময়না তার স্বামী রং মিস্ত্রি ফারুক মিয়া ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। তিনি জানান, বুধবার রাত দেড়টার দিকে পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ফারুক মিয়া ময়নাকে ধারাল বঁটি দিয়ে কোপাতে থাকে। এ সময় তার সন্তান মানিক ও বিউটি তাদের মাকে বাঁচাতে জাপটে ধরে। এতে সন্তানদেরও আঘাত করে তাদের বাবা। এতে তারা তিনজনই আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির (এসআই) বাচ্চু মিয়া জানান, তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে আঘাত খুব বেশি গুরুতর নয়। স্বামীর বঁটির আঘাতে স্ত্রী ও তার দুই সন্তান আহত হয়েছেন।
কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষক গ্রেফতার
রাজধানীর উত্তরখানে এক কিশোরীকে (১৫) ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত ধর্ষক জাকির হোসেনকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে ওই কিশোরীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরেনসিক বিভাগে তার শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
উত্তরখান থানার ওসি হেলাল উদ্দিন জানান, ওই কিশোরী উত্তরখান এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকে। দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় ২ সন্তানের জনক জাকির হোসেন তাদের বাসায় ভাড়া থাকত। জাকির হোসেনের সঙ্গে বেশ কয়েক মাস ধরে কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর জাকির হোসেন একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করে। ১ সেপ্টেম্বর তাকে ধর্ষণের পর বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। পরে কিশোরীর বাবা বুধবার রাতে উত্তরখান থানায় একটি মামলা করেন। ওসি জানান, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর কিশোরীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ঢামেক হাসপাতাল ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: