ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

‘শ্রমিক-কর্মচারীদের শ্রম ঘাম ও মেধায় সোনারগাঁও এখনও দেশের সেরা হোটেল’

প্রকাশিত: ০৭:৩৭, ২৪ জুলাই ২০১৭

‘শ্রমিক-কর্মচারীদের শ্রম ঘাম ও মেধায় সোনারগাঁও এখনও দেশের সেরা হোটেল’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোনারগাঁও হোটেলের ইতিহাস সবটাই গৌরবের। ৩৪ বছর ধরেই সেটা অটুট রয়েছে দেশ -বিদেশে। এটি এখনও দেশের শ্রেষ্ঠ হোটেল। কিন্তু এই শ্রেষ্ঠত্বের নেপথ্যে যাদের অবদান তারা রয়ে গেছে বরাবরই উপেক্ষিত-অবহেলিত। এখানকার একজন শ্রমিককে মাসিক ২২ শ’ টাকা বেতন দেয়া হয়, এটা বিমান ও পর্যটনমন্ত্রীর কাছেও লজ্জাজনক বলে মনে হয়। তিনি নিজেও এতে অপমানবোধ করেন স্বীকার করে বলেন, আজকের দুনিয়ায় এতটা শ্রমবৈষম্য বিরল। অবিল্েম্ব এর বৈষম্যের নিরসনের তাগিদ দেয়ার পাশাপাশি হোটেলের ঐতিহ্য অক্ষুণœ রাখার নির্দেশ দেন। মন্ত্রী বলেন, শুধু সেবা ও আতিথিয়েতার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও সুখ্যাতি অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের অবদানের স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে। এ কারণেই এখনও এটিই দেশের শ্রেষ্ঠ হোটেল। এটা সম্ভব হয়েছে এখানকার শ্রমিক-কর্মচারীদের অপরিসীম শ্রম, ঘাম ও মেধার Ÿদৌলতে। এখানকার প্রতিটি শ্রমিকের অবদান অনস্বীকার্য। রবিবার রাতে হোটেল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের ১৪ তম নির্বাচনে নবনির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠানে এভাবেই মূল্যায়ন করেন উপস্থিত আলোচকরা। এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রমমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, মন্ত্রণালয়ের সচিব এস এম গোলাম ফারুক, আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি আলহাজ শুকুর মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, কার্যকরী সদস্য আবদুস সালাম খান, হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ইজে ম্যাক ই ওয়ান ও ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক এম এ আল শরীফ লস্কর। এতে সভাপতিত্ব করেন কর্মচারী ইউনিয়ন সভাপতি আমিনুল ইসলাম। রাশেদ খান বলেন- অচিরেই চার্টার অব ডিম্যান্ডের বাস্তবায়নের জন্য শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এতে হোটেলের মর্যাদা ও সুবিধাদি বাড়বে। তিনি শ্রমিকদের লভ্যাংশ বাস্তবায়নের পথে বলে উল্লেখ করে বলেন, প্রয়োজনে যৌক্তিক দাবিগুলোও আমলে নেয়া হবে। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সোনারগাঁও হোটেলর কর্মচারীরা যে লভ্যাংশ পেতে যাচ্ছে,এটা তাদের আইনগত অধিকার। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শ্রম আইনের যে সংশোধনী এনেছেন, তাতে সুস্পষ্ট এ দাবির বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন যদি হোটেল কর্তপক্ষ সেটা বাস্তবায়ন না করে তাহলে সেটা হবে বেআইনী। এম এ আল শরীফ লস্কর হোটেলের কর্মচারীদের পক্ষে বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরে বলেন-ঐতিহ্যবাহী সোনারগাঁও বরাবরই লাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান। এটা সম্ভব হয়েছে এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস ও আন্তরিকভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করার ফলে। তবে সে তুলনায় এখানকার শ্রমিক-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবিদাওয়া কখনই পরিপূর্ণ হয়নি। দুই দশক ধরে ইউনিয়নের নেতৃত্ব দানকারী শরীফ লস্কর আরও বলেন-এখানকার প্রতিটি শ্রমিক একে অপরের সঙ্গে ভ্রাতৃপ্রতিম সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। যে কারণে এখানকার কাজের পরিবেশও অনেক উপযোগী ও সুন্দর। এটা গর্ব করার মতো। ৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ প্রদানের বিষয়টি এখন সময়ের ব্যাপার বলে উল্লেখ করেন তিনি। হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ইজে ম্যাকই ওয়ান বলেনÑবাংলাদেশের মানুষের আতিথিয়েতার অনেক সুনাম আছে। এটাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বব্যাপী হোটেলের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। চলতি বছর হোটেল আশাতীত লাভ করতে যাচ্ছে। জেনারেল ম্যানেজার হোটেলে তার আমলে সংস্কার ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের ওপর বিশেষ তথ্য উপস্থাপন করেন। এ সময় অতিথিরা তাকে করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানান। নৈশভোজের পর এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তাতে হোটেলের কর্মচারীরাও অংশ নেন।
×