ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঐতিহাসিক রেসকোর্স অরক্ষিত, মুছে যাচ্ছে স্মৃতি ফলকের লেখা

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬

ঐতিহাসিক রেসকোর্স অরক্ষিত, মুছে যাচ্ছে স্মৃতি ফলকের লেখা

রাজন ভট্টাচার্য ॥ ‘মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ডাক। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। রেসকোর্স ময়দান, ৭ মার্চ ১৯৭১। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান’। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একটি অংশের ফলকে লেখা আছে এ কথাগুলো। অর্থাৎ এখান থেকেই স্বাধীনতার ডাক দেয়া হয়েছিল। স্থানটি সংরক্ষণের জন্য এই ফলকটি স্থাপন করা হয়। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ফলকে লেখাগুলো এখন অস্পষ্ট। নিচের অংশ একেবারেই মুছে যাচ্ছে। শ্বেত পাথরের চারপাশে লাল বর্ডারের অংশ ভেঙ্গে গেছে। চারপাশজুড়ে ময়লা আবর্জনার স্তূপ। দর্শনার্থীদের মলমূত্রে ছেয়ে আছে চারপাশ। ফলকের কাছে যাওয়া দায়। দূর থেকে দেখলেই বোঝা যাবে অযতœ অবহেলার শিকার ফলকটি। এর ঠিক পাশেই আরেকটি ছোট্ট ফলক রয়েছে। যা দেখে বোঝার কোন উপায় নেই এটিতে এক সময় কি লেখা ছিল! উদ্যানের আরেকটি অংশে রয়েছে ‘বিজয় স্তম্ভ’। এতে লেখা আছে- ‘ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন; শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু কন্যা। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৯৫। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা রজতজয়ন্তী পরিষদ’। এটিও এক রকম অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। ভাসা ভাসা লেখা। একদিন হয়ত এই স্মৃতিটুকুও মুছে যাবে! মহান একাত্তরের এক অনন্য স্মৃতিবিজড়িত আঙিনা রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বাঙালীর মুক্তির সনদ হিসেবে পরিচিত ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ এখান থেকেই দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নয় মাসের লড়াই শেষে বীর বাঙালীর কাছে পাকবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল একই স্থানে। এমনকি ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ তৎকালীন এই রেসকোর্স ময়দানে পাকি জিন্নাহ যখন উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দিয়ে বাংলাকে বাঙালীর কাছ থেকে কেড়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করেÑ তখনও সরব প্রতিবাদ উঠেছিল এখান থেকেই। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বীর বাঙালীর স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে এই উদ্যানে গড়ে উঠেছে স্বাধীনতা স্তম্ভ। সবুজে আচ্ছাদিত তৃণভূমির ৬৭ একর জায়গা ঘিরে গড়া পুরো এলাকা। এর আওতায় রয়েছে শিখা চিরন্তন, ভূগর্ভস্থ জাদুঘর, জনতার দেয়াল নামের টেরাকোটা ম্যুরাল, গ্লাস টাওয়ার ও উন্মুক্ত মঞ্চ। বাস্তবতা হলো ঐতিহাসিক এই উদ্যানটি এখনও অরক্ষিত বলা চলে। মুক্তিযুদ্ধ কিংবা বিভিন্ন সময়ের স্মৃতি ফলকগুলো এখনও অনাদর অবহেলায় রয়েছে। মুছে যাচ্ছে ফলকের লেখাগুলো। উদ্যানজুড়ে অপরাধীদের আড্ডা। বিশেষ করে নেশাখোরদের রাত দিনের অভয়ারণ্য উদ্যানজুড়ে। দেখলে মনে হবে ময়লা আবর্জনার ভাগাড়। হকারদের উপদ্রব। আছে ভাসমান পতিতাদের দৌরাত্ম্য। দশনার্থীদের নিরাপত্তা নেই। তেমনি মলমূত্রের গন্ধে গোটা উদ্যান ঘুরে বেড়ানো হবে কষ্টকর। ভাসমান মানুষের বসবাস বিভিন্ন অংশে। আজ ১৬ ডিসেম্বর। বিজয় দিবস। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। এ নিয়ে কারও যেন কোন মাথাব্যথা নেই। যে উদ্যানটি বাঙালী মুক্তি সংগ্রামের জীবন্ত সাক্ষী হয়ে আছে সেখানেই এমন বেহাল দশা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। শিখা চিরন্তন ও স্বাধীনতা জাদুঘরের মূল অংশ ছাড়া গোটা উদ্যান নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীদেরও। ঐতিহাসিক স্থানটিতে ঘুরতে আসা লোকজন জানিয়েছেন, উদ্যানের যে অংশে বঙ্গবন্ধু সাত মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন তা কোন অংশে রয়েছে এ রকম কোন নির্দেশনা নেই। একই অবস্থা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আত্মসমপর্ণের ক্ষেত্রেও। এছাড়া যেসব স্থানে স্মৃতি স্মারক রয়েছে সেগুলোরও কোন নির্দেশনা নেই। নেই প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের উদ্যোগও। যাও আছে তাও দেখার কোন পরিবেশ নেই। দ্রুত স্মৃতি ফলকগুলো আধুনিকায়ন করার দাবি জানিয়েছেন তারা। ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো...। এক নদী রক্ত পেরিয়ে...। জয় বাংলা বাংলার জয়...। ও আমার দেশের মাটি...। জনতার সংগ্রাম চলবেই...’। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মুক্তিযুদ্ধের আরও গান বাজছিল তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে। তবে একটি অংশে মাত্র এমন আয়োজন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের গান বাজানো হচ্ছে। অথচ শহীদদের স্মরণে নির্মিত ‘শিখা চিরন্তন’ বেদিতে জুতো পায়ে উঠছিল সবাই। দিনভর চলে ছবি তোলার প্রতিযোগিতা। অথচ কোন পক্ষ থেকে বারণ নেই। বিকেলে এসেছিলেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা। তখন সরব সবকিছু। জুতো পায়ে শিখা চিরন্তন বেদিতে ওঠা নিষিদ্ধ হলো। প্রেমিক-প্রেমিকাদের দৃষ্টিকটু আড্ডাতেও এলো নিষেধাজ্ঞা। উদ্যানের বিভিন্ন অংশে দর্শনার্থীদের জন্য সাইনবোর্ড টানানো রয়েছে। সবার চোখে পড়ে। অনেকেই এসবের তোয়াক্কা করেন না। এতে লেখা আছে, ‘বিজ্ঞপ্তি। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভাব গাম্ভীর্য বজায় রাখুন। সর্ব সাধারণের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সূর্যাস্তের পর প্রবেশ এবং অবস্থান সম্পূর্ণরূপে নিষিধ। উদ্যানে যানবাহন, মোটর সাইকেল, সাইকেল প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষেধ। ...উদ্যানে সকল প্রকার দোকানপাট বসানো সম্পূর্ণরূপে নিষেধ। ...উদ্যানে স্কুল/কলেজের ড্রেস পরিহিত অবস্থায় প্রবেশ নিষেধ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অসামাজিক কার্যকলাপ সম্পূর্ণরূপে নিষিধ। আদেশক্রমে কর্তৃপক্ষ’। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিজ্ঞপ্তিতে যে লেখা রয়েছে এর কোন কিছুই মানা হচ্ছে না। ভাব গাম্ভীর্য রক্ষার কোন আলামত এখানে নেই। সন্ধ্যার পর উদ্যানজুড়ে অপরাধীদের আড্ডা বসে। চারটি গেট দিয়ে যে কেউ যে কোন সময় উদ্যানে প্রবেশ করতে পারে। সরেজমিন গিয়ে উদ্যানের ভেতরে শতাধিক মোটরসাইকেলসহ প্রাইভেটকারও দেখা গেছে। দোকানপাট যত্রতত্র। চলছে ধূমপান। গাঁজার আড্ডা খানিক পর পর। চুরি, ছিনতাই এখানে নিত্যদিনের ঘটনা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, আশপাশের পরিবেশের অবস্থা খুবই দুঃখজনক। এই আনসার সদস্যদের দিয়ে ঐতিহাসিক এই স্থাপনা যথাযথভাবে সংরক্ষণ সম্ভব হবে না। তবে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে এখানে বিশ্বমানের পরিবেশ সৃষ্টি করার। চেষ্টা করছি পরিবেশের উন্নতি করার। গোটা উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন অংশে ময়লা আবর্জনার স্তূপ। দুর্গন্ধ। উদ্যান ও জাদুঘরের দেয়াল ঘেঁষে মলমূত্র ত্যাগ করছেন ভবঘুরে লোকজন। দেয়ালে সাঁটানো আছে পোস্টার। মাঠজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে পলিথিন। ভাগে ভাগে চলছে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলা। বিভিন্ন অংশে চলছে রান্না বান্নার কাজ। মাঠে শোকাতে দেয়া আছে কাপড়। বিল্লাল নামের একজন জানালেন, ১২ বছর থাকেন এই উদ্যানে। কেউ কখনও মানা করে না। এটাই বাড়ি তার। সূর্যের আলো থাকতে থাকতে প্রতিদিন রান্না হয়। উদ্যানের গাছপালা থেকেই সংগ্রহ করা হয় জ্বালানি। রোকেয়া নামের আরেকজন জানালেন, উদ্যানেই অন্তত ৫০টি পরিবারের বসবাস। রাতের পরিবেশ বর্ণনা দেবার মতো নয়। এর বেশি আর কিছুই বলতে চাইলেন না তিনি। বাস্তবতা হলো স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও ঐতিহাসিক এই ময়দানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলো চিহ্নিত করা হয়নি। ২০০৯ সালে হাইকোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতি বিজড়িত স্থান ও সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা বধ্যভূমি সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়। তৎকালীন হাইকোর্টের বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক (সাবেক প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতি মোঃ মমতাজ উদ্দিন আহমেদের বেঞ্চ এ রায় দেয়। রায়ে বলা হয়, ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ পাকিস্তানের প্রথম গবর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এ উদ্যানে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিয়েছিলেন। গণঅভ্যুত্থানের সময় ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ উদ্যানেই ভাষণ দিয়েছিলেন। এ উদ্যানে দাঁড়িয়েই শপথ গ্রহণ করেছিলেন ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদের সদস্যরা। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে পাকিস্তানী বাহিনীর এ উদ্যানে আত্মসমর্পণ, দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ এবং ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভাষণ এ উদ্যানেই অনুষ্ঠিত হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংরক্ষণের বিষয়ে রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত উল্লেখ করে, রমনার রেসকোর্স ময়দান বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৯৪৮ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত জনসভা এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এই উদ্যানেই অনুষ্ঠিত পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। সে কারণে স্থানগুলো বাংলাদেশের ২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ঐতিহাসিক স্থান। ভাষণের বিষয়ে রায়ে বলা হয়, আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানও বহু ইতিহাসের সাক্ষী। রায়ে পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যে অংশে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যৌথবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করেছিল, উদ্যানের সেই অংশটিকে ‘স্বাধীনতা উদ্যান’ নামকরণ করার জন্য আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরি হয় ২০০০ সালে। সাধারণত যে কোন স্থাপত্য বা সরকারীভাবে কোন ভাস্কর্য বা প্রতিষ্ঠান তৈরি হলে তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লোক নিয়োগ করা হয়। সে ক্ষেত্রে কোন কর্মী এই সরকারী মঞ্চটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আলাদ কোন পরিকল্পনা নেয়া হয়নি। তবে এর আগে আমরা কয়েকবার চেষ্টা করেছি ভবঘুরে লোকজনদের সরিয়ে দিতে। মূলত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল সর্বসাধারণের সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের জন্য। অনুমতি নিয়ে নাটক বা কোন অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করার জন্যই এই মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এ মঞ্চ সারা বছরই ফাঁকা থাকে। মাঝে মাঝে অনেকে ভাড়া নিয়ে অনুষ্ঠান পরিচালনাও করেন। আগামী প্রজন্মের কাছে জাতির এই ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলো তুলে ধরার লক্ষ্যে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এখানে স্বাধীনতা স্তম্ভ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৬ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতা স্তম্ভের অন্যতম আকর্ষণ ‘শিখা চিরন্তন’ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে বিশ্ব নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট সুলেমান ডেমিরেল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সে সময়ের রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিখা চিরন্তন স্থাপন করেন। শেখ হাসিনা এর আগে একই বছরের ৭ মার্চ শিখাটি প্রজ্বলন করেন। মশাল জ্বালিয়ে সারাদেশ পরিভ্রমণ শেষে শিখাটি ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এ ঐতিহাসিক স্থানে স্থাপন করা হয়। অথচ শিখা চিরন্তনের আশপাশসহ গোটা উদ্যানের পরিবেশের কারণে ঐতিহাসিক স্থানটির পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে। ৬৭ একর বিস্তৃত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কেন্দ্রস্থলে প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৫ হাজার ৬৬৯ বর্গমিটার পাকা চাতাল বা প্লাজা এবং এর চারপাশে রয়েছে তিনটি জলাশয়। জলাশয়ের বং এখন বিবর্ণ। যত্রতত্র পানিতে ময়লা ফেলা হচ্ছে। চলছে গোসলের কাজও। অনেক সময় পানিশূন্য অবস্থায়ও থাকে জলাশয়গুলো। বাঙালী জাতিসত্তার অমরতার প্রতীক ‘শিখা চিরন্তনী’ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামকে ভিত্তি করে নির্মিত একটি দেয়ালচিত্র। জাদুঘরের উপরিভাগে রয়েছে ১৫৫ আসন সংখ্যার আধুনিক মানের মিলনায়তন। স্বাধীনতা স্তম্ভটি বস্তুত ১৫০ ফুট উচ্চ একটি গ্লাস টাওয়ার। গ্লাস টাওয়ারে স্থাপিত লাইটের আলোকরশ্মি ৫ কিলোমিটার উর্ধে প্রক্ষেপিত হয়।

আরো পড়ুন  

×